ছবির ক্রেস্টটি কোনও ব্যক্তি বিশেষের সম্মাননার জন্য নয়, এটি একটি বিয়ের কার্ড। জনতা ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়নের সিবিএর সভাপতি রফিকুল ইসলামের মেয়ের বিয়ের কার্ড। বিয়ে হবে আগামী ২২ জুলাই, ২০১৮।
এই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি দৈনিক প্রথম আলোতে ‘একক ব্যক্তির ঋণে বৃহত্তম কেলেঙ্কারি’ শিরোনামের একটি হইচই ফেলে দেয়া রিপোর্ট সবার মনে থাকার কথা। জনতা ব্যাংক সকল নিয়ম কানুনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এননটেক্স গ্রুপের ইউনুস বাদলকে ৫০০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়। জনতা ব্যাংকের মোট মুলধন ২ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা। মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সুযোগ আছে। অর্থাৎ এক গ্রাহক ৭৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পেতে পারেন না। দেওয়া হয়েছে মোট মূলধনের প্রায় দ্বিগুণ।
ওই রিপোর্টে জানা যায়, ইউনুস বাদলকে ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক করে দিতে ভূমিকা রেখেছিলেন সিবিএ সভাপতি রফিকুল ইসলাম। তার নগদ প্রমাণ পাওয়া যায় প্রতিবেদকের কাছে রফিকুল ইসলামের স্বীকারোক্তিতে। নিজের নামে গ্রামে ২০১ গম্বুজের মসজিদ বানাচ্ছেন, যাতে মোট খরচ হবে ২৫০ কোটি টাকা। ইউনুস সাহেব মসজিদের জন্য শতকোটি টাকার উপরে দিচ্ছেন (রফিকুল নিজে দিচ্ছেন এই তথ্য)।
আশ্চর্যের বিষয় হল- এই বিয়ের কার্ডে রফিকুলের পরিচয়ের মধ্যে উল্লেখ করা হচ্ছে যে তিনি ২০১ গম্বুজ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। অর্থাৎ দুর্নীতি ও লুটপাটের চিহ্ন গোপন করা দূরে থাক; তিনি ফলাও করে সেটাকে প্রচার করছেন। যে অপরাধে অনিবার্যভাবে তার জেলের ঘানি টানার কথা, তাকে বরং গৌরবচিহ্ন হিসেবে সমাজে উপস্থাপন করছেন। এটা ঘটতে একটা রাষ্ট্রকে কতটা লুটেরা ও দেউলিয়া হতে হয় তা ভাবলে বিস্ময় বোধ করি।
আরো পরিতাপের বিষয় হল—এই একটি বিয়ের কার্ডে রফিকুল ইসলামের পরিচয় হিসেবে মোট ৩ বার ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এটা যে মুক্তিযুদ্ধের জন্য কত বড় অপমান—তা আজকাল লোকেদের ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিতে হচ্ছে। আফসোস!
(বাকি বিল্লাহ)
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:০২