somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমালোচকরা কি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ছুড়ে দেওয়া ড. রেজা কিবরিয়ার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে?

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ড. রেজা কিবরিয়া হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচন করবেন - এই সংবাদের ভিত্তিতে বিগিত ২/৪ দিন যাবৎ ফেইসবুকে কিছু উদ্ভট পোস্ট দেখে ‘'মায়ের থেকে মাসীর দরদ বেশী” প্রবাদ এবং ‘সবজান্তা শমসের’ বাগধারা টি খুব বেশী মনে পরেছে। এও বুঝেছি আদার ব্যাপারীরা কিভাবে জাহাজের খবর রাখে?

পোস্টগুলোতে যাহা লেখা হয়েছে তার সারাংশ হচ্ছে - বিএনপি উনার বাবাকে খুন করেছে, ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করলে পিতার রক্তের সাথে বেঈমানী হবে, বাবা আওয়ামীলীগ করতেন তিনি কেন বিএনপি করবেন….. ইত্যাদি। এক উন্মাদ নাকি লিখেছে - রেজা কিবরিয়ার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনি কিবরিয়া সাহেবের ছেলে কিনা তাহা পরীক্ষা করে দেখা দরকার। চিন্তা করেন কোন লেভেলের উন্মাদ হলে এমন লেখা সম্ভব।

এর অনেক গুলি প্রশ্নের সুষ্পষ্ট উত্তর ড. রেজা কিবরিয়ার সাক্ষাৎকারে পাওয়া যাবে। তারপরেও কিছু রেফারেন্সের ভিত্তিতে ব্যক্তিগত ভাবে আলোচনা করবো। নীচের লিংকে উনার সাক্ষাৎকারের বক্তব্য পড়ে দেখবেন।
‘দেশের মানুষ বলুক, আ.লীগের প্রতি আমার আনুগত্য থাকা উচিত কি না?’

রাজিনীতি হচ্ছে আদর্শের ব্যাপার। কোন দলের আদর্শের সাথে ব্যক্তি বিশেষের আদর্শের মিল হলেই সে ঐ দল করে। আবার কোন দল করা অবস্থায় যদি দলের আদর্শ এবং মৌলিক নীতির পরিবর্তন ঘটে তাহলে সে দল ত্যাগ করে অন্য কোন দল বা জোটের সাথে আদর্শের মিল পেলে সেখানে যোগ দিতে পারে। রেজা কিবরিয়া স্পষ্টতই বলেছেন যে, উনার বাবার সময়ের আওয়ামীলীগের আদর্শ আর বর্তমান আওয়ামীলীগের আদর্শ ভিন্ন। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনী ওসমানী সর্বপ্রথম ব্যক্তি ছিলেন যিনি সংসদে ঘোষণা দিয়ে আওয়ামীলীগ ত্যাগ করছিলেন যখন আওয়ামীলীগ আদর্শ বিচ্যুত হয়ে বাকশাল হয়েছিল। আর রেজা কিবরিয়াতো বিএনপিতে যোগ দেন নাই। তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করবেন।

যাক কিবরিয়া সাহেবের খুনী কারা এই নিয়ে মামলার নথিতে যাহাই থাকুক না কেন উনার পরিবার তাহা মেনে নেয় নাই। কিন্তু অনেক জানা বিষয় অতিরিক্ত স্পর্শকাতর হওয়াতে অকাট্য প্রমাণের অভাবে বিজ্ঞজনেরা প্রকাশ করে না ।

২০০৫ সালের মার্চ মাসে বিএনপির সরকারের সময়ে প্রথম প্রতিবেদন দাখিল হয়। কিন্তু মামলার বাদী মজিদ খান তাতে নারাজি দিলে আবার তদন্ত শুরু হয়। দ্বিতীয় তদন্ত প্রতিবেদন যাহা আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে সম্পন্ন করে দাখিল করা হয় ২০১১ সালের সম্ভবত ২০ জুন। মামলার তদন্ত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে সঠিকভাবে করে নাই বলে কিবরিয়া সাহেবের পরিবার পরিজন তাহা মেনে নেন নাই।

মেনে না নেওয়ার প্রমাণ হলোঃ ২০১১ সালের ২৮ জুন কিবরিয়া সাহেবের স্ত্রী আসমা কিবরিয়া অভিযোগপত্রের ওপর হবিগঞ্জ বিচারিক হাকিমের আদালতে নারাজি আবেদন করেছিলেন। আবেদনে আসমা কিবরিয়া দাবি করেছিলেন, অভিযোগপত্র যথাযথভাবে তৈরি হয়নি। হবিগঞ্জের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) এমদাদুল হককে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মূল তথ্য উদঘাটন হবে বলে নারাজিতে আবেদন করেন।
কিবরিয়া হত্যা : মামলার তদন্তেই পার ১০ বছর

কিবরিয়া সাহেবের স্ত্রীর অভিযোগ থেকে অবশ্যই বুঝা যায় যে, উনার কাছে তথ্য ছিল ঐ সময়ের ডিসি সব জানতো বা কিবরিয়া হত্যাকারীদের সাথে ডিসির যোগসাজস ছিল। তাই ডিসিকে জিজ্ঞাবাদের আবেদন করেছিলেন।

আরো প্রশ্ন হলো ডিসিকে কি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল? নাহলে, কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নাই? উল্টো আওয়ামীলীগ নেতা মজিদ খান সাহেব কেন কিবরিয়া সাহেবের স্ত্রীকে তদন্ত প্রতিবেদন (চার্যশীট) মেনে নেওয়ার জন্য ধমক দিয়েছিলেন (রেজা কিবরিয়ার বক্তব্য)? মৃতের স্ত্রীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধমক দিয়ে চার্যশীট গহণ করানোতে আওয়ামীলীগ নেতা মজিদ খানের এত আগ্রহের পীছনে কি কারণ বা স্বার্থ ছিল? ডিসিকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মজিদ খানের কি এমন ক্ষতি হতো? একেবারে বিনা স্বার্থে কি মজিদ খান অন্তত কিবরিয়া সাহেবের স্ত্রীকে ধমক দেওয়ার দৃস্টতা দেখাতেন?
কিবরিয়া সাহেবের প্রকৃত খুনীদের চিহ্নিত করতে হলে সুক্ষভাবে তদন্ত করে এসব প্রশ্নের উত্তর বের করতে হবে বলেই আমি মনে করি।

যাইহোক যেহেতু তদন্ত এবং চার্যশীটভুক্ত আসামীদের প্রতি কিবরিয়া সাহেবের পরিবাবার (স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে) সন্তুষ্ট নন, এর সহজ অর্থ তারা বিচারাধীন অনেক আসামীকে কিবরিয়া সাহেবের খুনী হিসাবে মেনে নেন নাই বা স্বীকার করেন না। অর্থাৎ যে তদন্তের ভিত্তিতে কিবরিয়া হত্যার বিচার হচ্ছে সেই তদন্তকে সত্য বলে স্বীকার করেন না। এমতাবস্থায় মায়ের থেকে মাসীর দরদ বেশী দেখাতে যাওয়া আর নিজেকে আবাল উন্মাদ হিসাবে প্রকাশ করার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই এবং থাকতে পারে না বলেই আমার বিশ্বাস।

যাক, এখন দেখার বিষয় যারা রেজা কিবরিয়ার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার আলোকে তাঁর বিরোপ সমালোচনা করেছিলো তারা উনার অপেন প্রশ্নের কি উত্তর দেয়?
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৬
১০টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×