somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারীদের উপর পুরুষদের অশ্লীল আচরণের জন্য নারীরাও কম দায়ী নয়

১৬ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নারীদের উপর পুরুষদের অশ্লীল আচরণের জন্য নারীরাও কম দায়ী নয়
মানুষের গুণাবলী মানুষকে বড় করে এবং সমাজকে সুস্থ, উন্নত করে। কিন্তু বর্তমানকালে নারীরা নিজেদের গুণাবলীকে না বাড়িয়ে দেহ প্রদর্শনের দিকে বেশি ঝুঁকছে। যেটি সুস্থ, সভ্য সমাজের জন্য ভয়ানক বলে আমি মনে করি।
যে মেয়েরা অশ্লীল পোশাক পরে তারা যখন পুরুষদের অশ্লীল আচরণের শিকার হয় তখন আমার কম খারাপ লাগে। কারণ যে নারী তার শরীরের বিভিন্ন অংশ অশ্লীলভাবে প্রদর্শন করছে সে তা পুরুষদের উত্তেজিত করে তার প্রতি মনোযোগ আনার জন্যই করছে। এমন অবস্থায় যার মধ্যে মানবিক বোধ সৃষ্টি হয়নি এমন কোনো খারাপ পুরুষ যদি উত্তেজিত হয়ে উক্ত নারীর সাথে জোর করে যৌন সম্পর্ক করে ফেলে তবে পুরুষটিকে দায়ী করার তেমন কিছু থাকেনা, আর মেয়েটাকে নিষ্পাপ ভাবারও কিছু নেই। তাই এই ধরণের মেয়েদের প্রতি আমার সবসময় সমবেদনা কম। হ্যা, তবে আমাদের বর্তমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজই মেয়েদেরকে পণ্য বানাতে ব্যস্ত। তাই উগ্র উচ্ছৃঙ্খল মেয়েদের প্রতি একটু দয়া আমার হয়।
অনেক পুরুষ আছে যারা মানসিকভাবে অসুস্থ। এই ধরণের পুরুষদের সামাজিক, পারিবারিক শিক্ষার কথা মনে থাকেনা। তারা সহজেই নারীদের সাথে যৌন আচরণের ক্ষেত্রে বিকৃত রুচির পরিচয় দেয়। শিশু ধর্ষণ পুরুষদের বিকৃত মানসিক অবস্থার ফলাফল। এই ধরণের পুরুষদের ক্ষেত্রে সকল সামাজিক শিক্ষা মিথ্যে হয়ে যায়। এদের শাস্তি অনেক কঠিন হওয়া উচিৎ। কিন্তু যখন পূর্ণ বয়ষ্ক নারীরা কতক্ষণ ক্লিভেজ বের করে, কতক্ষণ অর্ধ পা বের করে মিনি স্কার্ট পরে, কতক্ষণ স্তন বের করে দেখায়, কতক্ষণ ব্রা, পেন্টি পরে দেখায়, কতক্ষণ শরীরের বিভিন্ন অংশগুলো কাটা ছেঁড়া পোশাক পরে, আবার কখনও আঁটসাট পোশাক পরে পুরুষদের দেখাতে ব্যাকুল হয়ে যায় তখন তাদেরকে শুধু টাকার লোভী বললে ভুল হবে, বলা যায় যে এই ধরণের মেয়েরা পুরুষদেরকে ধর্ষক বানাতে আর নারীদেরকে মূল্যহীন বানাতে পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে সহায়তা করছে। অশ্লীল পোশাক এবং আচরণ পছন্দ করে যেসব নারীরা সেসব নারীদের জন্যই পুরুষরা নারীদেরকে স্তন, যৌনাঙ্গ ও সামগ্রিকভাবে যৌন যন্ত্র হিসেবে ভাবতে শিখে। এর ফলাফল স্বরূপ যেসব নারীরা শিক্ষিত, সভ্য হয়ে উঠেছে তারা অনেকক্ষেত্রে অবমূল্যায়িত হতে থাকে এবং পুরুষদের দ্বারা সহজেই যৌন আক্রমণের শিকার হয়।
যে পুরুষরা পরিবার থেকে, সমাজ থেকে সুশিক্ষা গ্রহণ করে মানুষকে সম্মান করতে শিখেছে তারা নারীদের সাথে কখনও অশালীন আচরণ করেনা। সুশিক্ষিত, সভ্য পুরুষরা কোন নারীকে একা কিংবা উলঙ্গ পেলেও ধর্ষণ করবেনা; বরং লজ্জিত হবে। কিন্তু সুস্থ, সভ্য পুরুষদের মধ্যে সুস্থ যৌন রুচি সৃষ্টি এবং তা ধরে রাখার ক্ষেত্রে নারীদের মুখ্য ভুমিকার কথা আজকাল আমরা অনেক নারীরাই ভুলে যাচ্ছি। আমরা নারীরা আজকাল প্রায়ই যৌন আচরণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছি। ফলে পুরুষরা আরও কয়েকধাপ বেশী অসভ্য হয়ে যাচ্ছে। কারণ পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রশ্রয় পুরুষদেরকে অনেকটা নিরাপদে রাখে। তাই পুরুষদের বেশী বেশী খারাপ হতে দোষ নেই। তবে সভ্য সমাজের ক্ষতির কথা আমাদের ভাবা দরকার।
অতি পর্দাপ্রথা নারীদের জন্য যেমন অপমানজনক তেমনি অতি বেপর্দা হওয়া নারীদের মান সম্মান ধ্বংসের একটি কারণ। আমাদের দেশেও অনেক বাঙ্গালী মুসলিম মেয়েরা বর্তমানকালে হলিউডের তারকাদের মত পোশাক আশাকে "সেক্সি সেক্সি" ভাব আনার চেষ্টা করতে গিয়ে ক্লিভেজ বের করছে, ব্রেস্ট, পেটের সৌন্দর্য প্রদর্শনের জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করছে নির্লজ্জভাবে। এই ধরণের মেয়েদেরকে পুরুষরা বিয়ে করেনা, শুধুমাত্র ব্যবহার করে। পুরুষরা সভ্য, সাধারণ মেয়েদের বিয়ে করে, কিন্তু স্ত্রীদের নিকট থেকে অসভ্য মেয়েদের মত আচরণ না পেলে আবার অসভ্য মেয়েদের সাথেই গোপন সম্পর্কে লিপ্ত হয়। অর্থাৎ যৌন জীবনের ক্ষেত্রে পুরুষদের সুস্থ রুচিবোধকে সমাজ অসভ্য নারীদের সহযোগিতা নিয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে বলেই পুরুষরা এক স্ত্রী নিয়ে সুখী হওয়ার ক্ষেত্রে প্রায়ই নেতিবাচক আচরণ করে।
সবদিক থেকে বিচার করলে দেখা যায় যে, আমাদের নারীদের পোশাক ও অচরণে শালীন হওয়া সমাজের সবার মঙ্গলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। পুরুষরা সমাজে অনেক নিরাপদ, কিন্তু তারপরও তারা প্রায়ই শালীন পোশাক পরে। নারীরা সমাজে নিরাপদ নয় অথচ তারাই বেশী উচ্ছৃঙ্খল হচ্ছে নিজের শরীর প্রদর্শনের ব্যাপারে।
এই বিষয়টি অবাক করার মত। সেটি হল- নারীরাও পুরুষের সুঠাম শরীরের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। পুরুষদের মধ্যেও কাউকে কাউকে সেক্সি বলা হয়, সবাইকে সেক্সি বলা হয়না। কিন্তু তাই বলে বেশীরভাগ পুরুষরাই নিজেকে সেক্সি বানানোর জন্য খালি গায়ে, বুক পিঠ, পেশী দেখিয়ে সমাজে বা নারীদের নিকট সেক্সি ইমেজ তৈরীর চেষ্টা করেনা। ফ্রি সেক্সের দেশেও বেশীরভাগ পুরুষ ভদ্র পোশাক পরে বাইরে বের হয়। কারণ পুরুষরা নিজেদের গুণাবলীকে সবসময় বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু বর্তমানে মুসলিম দেশগুলোতেও নারীরা নিজের সেক্সি ইমেজ সৃষ্টির জন্য নানারকম অশ্লীল পোশাকের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এটা শুধু পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ষড়যন্ত্রের ফল নয় ; বরং নারীদের নিজেদের সস্তা মানসিকতার ফল, নারীর আত্মমর্যাদাহীন হয়ে পড়ার ফল। আমরা অনেকে নারীরাই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মধ্যে অনেক ফালতু নিয়ম কানুনের চাপাচাপির মধ্যে আছি, কিন্তু পণ্য হচ্ছিনা। কেউ বাড়িতে এসে আমাদেরকে পণ্য হতে বাধ্যও করছেনা। ভাল, সভ্য পুরুষরা আমাদেরকে দেখে প্রেমেও পড়ছে। ভালভাবে পুরুষের প্রেম নিয়ে সমাজে বেঁচে থাকার জন্য অশ্লীল পোশাকের সহযোগিতা আমাদের অনেকেরই প্রয়োজন হয়নি এবং হবেনা। তাহলে সব নারীদের ভদ্র হতে দোষ কোথায়?
আমাদের দেশে পূর্বের দিনে শাবানা, ববিতা, কবরীসহ বেশীরভাগ নায়িকারা সুন্দর করে শাড়ী চুড়ি পরে অভিনয় করত এবং তাই দেখে নারী পুরুষ সবাই পাগল হয়ে যেত। তাহলে সেসময়ের নায়ক, নায়িকা, দর্শকরা কি কুরুচিপূর্ণ অশিক্ষিত ছিল -নাকি বর্তমানকালের নগ্ন, অর্ধনগ্ন নায়িকা আর দর্শকরা কুরুচিপূর্ণ, অশিক্ষিত? মানুষের রুচি যত নিচে নামবে তত তাদেরকে নিয়ে অশিক্ষিত কুরুচিপূর্ণ একটা শ্রেণি সমাজে খেলতে থাকবে। আর এই খেলার মাঝে ভদ্র শ্রেণীর নারী পুরুষ অসভ্যতা, বর্বরতার শিকার হবে- যার বিচার করে শেষ করা যাবেনা।
যে নারীরা গরীব বা দারিদ্র্যের কারণে খারাপ পেশায় চলে যায় তাদের কথা আলাদাভাবে বিচার্য। কিন্তু যারা টাকা পয়সা, সামাজিক সুস্থ অবস্থান থাকার পরও বিভিন্নভাবে দেহ প্রদর্শনে ব্যস্ত থাকে তাদেরকে নারীজাতির অবনতির ক্ষেত্রে সহায়ক বলা যায়। এই শ্রেণির নারীদের ক্ষমা করা যায়না। আমাদের সমাজে অনেক সুন্দরী মেয়ে আছে যারা সুন্দর মত পোশাক পরিধান করে এবং সুস্থ পারিবারিক, সামাজিক অবস্থাকে সম্মান করে জীবনযাপন করে। যারা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের অনেক চাপাচাপির পরও নিজেদেরকে পণ্যে পরিণত করেনা ; বরং কেউ পণ্যে পরিণত করতে চাইলে তা প্রতিহত করে। নারীদের মধ্যে এই শ্রেনিটাই জ্ঞানে, বিজ্ঞানে, মূল্যবোধে বড়। যারা কাজী নজরুলের কবিতায় ঠাঁই পেয়েছিল "জ্ঞানের লক্ষ্মী, সুষমা লক্ষ্মী " বলে। এরাই নিজেদেরকে এবং সমগ্র সমাজকে মর্যাদাপূর্ণ করে গড়ে তুলতে পারে। এরাই জন্ম দিতে পারে সেই শিশুদের যারা সকল পাশবিক প্রবৃত্তিকে হার মানিয়ে মানুষের জন্য সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে পারে। গড়ে তুলতে পারে নারী পুরুষের সম্মানজনক মিলিত সমাজ।
বর্তমানকালের নায়ক নায়িকা এবং অতি আধুনিক নারী পুরুষরা সমাজকে ভিতরে বাইরে যৌন কারখানা বানানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত। সুস্থ, স্বাভাবিক নারী পুরুষের উচিৎ এই ধরণের নারী পুরুষদের বিষয়ে সচেতন থাকা এবং তাদের কুপ্রবৃত্তি প্রতিহত করা- যাতে তনুদের মত সকল ভদ্র, পরিশ্রমী নারীরা হেসে খেলে বেঁচে থাকতে পারে ও ভদ্রভাবে পুরুষের দ্বারা মূল্যায়িত হতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৩০
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×