somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উগ্র জাতীয়তাবাদ; কিছু সাদামাটা হিসেব

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশ প্রেম সব সময়, সবার জন্য সুফল বয়ে আনে না। স্বদেশ প্রেম যখন উগ্র জাতীয়তাবাদের জন্ম দেয় তখন সেটা অন্য দেশের জন্য কতটা ভয়াবহ হতে পারে তার নমুনা আমরা দেখেছি।
একটি সরকার বা দেশের মানুষের মধ্যে স্বদেশ প্রেম ও জাতীয়তাবাদী চেতনা থাকতেই পারে। তার মানে এই নয় যে, নিজেদের স্বার্থের জন্য অন্য দেশের
মানুষের প্রতি অন্যায় ও নির্লজ্জভাবে ক্ষতি করা।
যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি রাষ্ট্র যেটিকে উগ্র জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করা যাচ্ছিল ঢের আগে থেকেই। তাদের পররাষ্ট্র নীতির অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য ও কৌশলকে ব্যাখ্যা করলেই ব্যাপারটি খোলাসা হবে হয়ত।
মুলত কয়েকটা সাম্প্রতিক উদাহরনকে সামনে নিয়ে আসলে তাদের উগ্র জাতীয়তাবাদের হিসেব মেলানো
সহজ হবে। আমি শিরোনামেই বলেছি এটি একটি
সাদামাটা হিসেব, কোন জরিপ নির্ভর নয়।
.
‪#‎ন্যাটো‬ যখন ইরাক আক্রমন করে, তখন বিশ্ববিবেক অত্যন্ত ছটপট করছিল। বার বার বলা হচ্ছিল সাদ্দামকে শায়েস্তা করতে এই আক্রমন কখনো যথাযথ ও মানবিক পদক্ষেপ নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য গোয়েন্দা রিপোর্ট এর যে অজুহাত দেখিয়েছিল তা পরে ভুল বলে স্বীকার করেছিল বুশ ও ব্লেয়ার। ততক্ষণে ইরাক আর শান্তিপুর্ন ও স্থিতিশীল ইরাক নেই। বিশ্ব দেখল এক মৃত্যুপুরী, যেখানে শিশু ও নারী সহ লক্ষ লক্ষ মানুষ লাশ হয়েছে। অনেকেই জানেই না তাদের অপরাধ কি। কেন তার প্রিয় শিশু সন্তানের
মস্তক বিচ্ছিন্ন হতে থাকল, কেন তাদের মমতাময়ী মায়ের বিভৎস লাশ রাস্তার কিনারে পড়তে থাকল। মাঝে মাঝে আমাদের মনে হচ্ছিল এটা কোন বাস্তব চিত্র নয়, বরং ওয়ার গেইম।
ইরাকে কি বিষাক্ত গ্যাস পেয়েছিল?
না।
তাহলে ইরাকের এত ক্ষতি করার পিছনে আসল কারন কি?
আমরা সবাই জানি, তেল চুরি করা। আমি জানি না ঠিক কত পরিমান বা কত বছরের জন্য তারা জ্বালানী তেল মজুদ করেছে শুধু মাত্র তাদের নিজস্ব
প্রয়োজনে। আমেরিকা বা তাদের কাছের
মিত্রদের মধ্যে যে অহমিকা ও নির্লজ্জতা দেখেছি তা কেবল তাদের উগ্র জাতীয়তাবাদের ফসল।
নিজের দেশের স্বার্থের জন্য যখন কোন তথাকথিত সভ্য ও মানবিক দেশ অন্য জাতি বা দেশের মানুষের অপুরন যোগ্য ক্ষতি করতে পারে তখন ভাবতে হবে জাতীয়তাবাদ তাদেরকে অন্ধ করে রেখেছে। এর পরও আমেরিকা আমাদেরকে শেখায় মানবতা কাকে বলে।
হাস্যকর তাই না।
.
.
‪#‎গাদ্দাফিকে‬ ক্ষমতাচ্যুত করে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো, সরাসরি আমেরিকার মদদে। অথচ পাকিস্তানে এই যুক্তরাষ্ট্রই অর্ধশত বছর ধরে সামরিক শাসন জিইয়ে রেখেছে। একাত্তরে আমাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের গণহত্যাকে অনুমোদন দিয়েছিল তারাই। অথচ সেই আমাদের দাবীই ছিল একটি গণতান্ত্রিক অধিকার, নির্বাচন বিজয়ী দল/জাতির অধিকারের দাবী।
.
.
‪#‎সিরিয়াতে‬ গণতন্ত্রের প্রয়োজন আছে, কিন্তু সৌদিআরব তার জন্মগতভাবেই একনায়কের রূপ ধরে
রেখেছে। মধ্যপ্রাচ্যে তারাই আমেরিকার অন্যতম মিত্র।
আরো উদাহরন দেয়া যায়, যেগুলো আপনারা ভালভাবে অবগত আছেন। প্রতিনিয়ত এই বিশ্ব মোড়লরা এভাবেই তাদের অপছন্দের মানুষদের মেরেছ এবং মেরে যাচ্ছে, কখনো মানবতার দোহাই দিয়ে আবার কখনো গণতন্ত্রের
দোহাই দিয়ে।
এই কাজগুলো শুধু অমানবিকই ছিলনা বরং স্ববিরোধী এবং নির্লজ্জও বটে। এই নির্লজ্জ বিশ্বমোড়লরা কিনা দাবী করে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে সভ্য জাতি!
মানুষ মেরে অন্যদেশের সম্পদ চুরি করে সভ্য জাতির তকমা ঝুলানো যদি বৈধ হয় তবে আমি সেই বৈধতাকে ধিক্কার জানাই চরম ঘৃনাভরে।
এদের পরবর্তী সম্ভাব্য অভিযান হবে চীন, রাশিয়া কিংবা ইরানের বিরুদ্ধে। আমেরিকার বর্তমান মিত্রদের খুশি হবার কিছু নেই, আপানদের কপালেও বন্দুক ঠেকাবে, যদি প্রয়োজন হয়।
আধিপত্য বিস্তারের এই খামখেয়ালী যুদ্ধে যখন অদুর ভবিষ্যতে পারমানিবক ও নিউক্লিয়ার অস্ত্র ব্যবহার হবে ব্যপক হারে, তখন পৃথিবীই অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। চিন্তাবিদদের এই আশংখা এখন শুধু সময়সাপেক্ষ পরিনতি মাত্র। আমেরিকার পররাষ্ট্র
নীতি উগ্র-জাতীয়তাবাদমুক্ত হতে না পারলে থামবে না যুদ্ধ, থামবে না আফ্রিকার গৃহযুদ্ধ, থামবে না অস্ত্রের প্রসার, থামবে না খনিজ সম্পদ চুরি। দিনে দিনে তারা কেড়ে নিচ্ছে ভিন্নদেশবাসী মানুষের ধর্ম, অধিকার ও জীবন।
এমনকি জাতীয়তাবাদও।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×