somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলেন বন্দে মাতেরাম গাই কোরাসে!

১৫ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশে খুন খারাবীর ভরা মৌসুম চলছে।
জাতি এই টপিক্স নিয়ে উত্তেজিত, পোস্টায়িত, কমেন্টায়িত, শেয়ারিত এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোন না কোন পক্ষ আনন্দিত। জাতির এই আনন্দের মধ্যে পুরো দেশ এবং বিশেষ করে সিলেটবাসীর জন্য আরো দুইটা সুখবর।
প্রথম সুখবর হচ্ছে আসামের নবগঠিত বিজেপি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরো আসাম সিলেট সীমান্ত সিল করে দেবে। কোন কাক পক্ষীও যাতে সীমান্তের এ পাড় ও পাড় না হতে পারে এ জন্য এই ব্যবস্থা।
খবরটা শুনে আনন্দে লাফ দেয়া উচিত ছিল। নফল নামাজ পড়া কিংবা নফল রোজা রাখা উচিত ছিল।
কারণ প্রতিদিন হাজার হাজার পিস ফেনসিডিল এই সীমান্ত পার হয়ে আমাদের এলাকায় আসে। নিজের স্কুল জীবনের নীরিহ দর্শন বন্ধু
বান্ধব গুলো ভারতীয় ফেনসিডিল খেয়ে চোখ লাল করে থাকে। আপাদমস্তক বেকার পাবলিক গুলো এক বোতল মাল হাজার থেকে পনেরশ টাকা দিয়ে কিনে খাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে গ্রামের নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার গুলোর ভাত কাপড়ের উপর। শুনতে খারাপ লাগলেও
সত্য, আমাদের এলাকার তরুণ প্রজন্মের প্রায় অর্ধেকই ফেনসিডিল আসক্ত। ফেনসিডিল ক্যারি করতে গিয়ে নদীতে ডুবে মারা যাওয়া একজনের বিভৎস লাশ দেখার দুর্ভাগ্য হয়েছিল। স্কুলের মাঠে খেলতে গিয়ে ফেনসিডিলের বোতলে পা কাঁটতে হয়েছে অনেক বার। সহজ কথায়, সীমান্তে ফেনসিডিল ফার্মেসীর নাপা ট্যাবলেটের মতোই সহজলভ্য।
প্রশ্ন হচ্ছে সীমান্ত পার হতে গিয়ে মানুষ গুলি খেয়ে মরে, কিন্তু ফেনসিডিল গুলো আসে কিভাবে?
কাঁটাতারের বেড়া তো অনেক আগে থেকেই, ডাইল আসা তো কখনোই বন্ধ হয় নি।
বারবার বাংলাদেশ সরকারের আবেদন সত্ত্বেও বন্ধ হয়নি সীমান্ত পাড়ের ফেনসিডিলের কারখানা গুলো।
তাহলে কি ধরে নিতে হবে বাংলাদেশে ফেনসিডিল পাচার ভারতীয় পরিকল্পনারই একটা অংশ। কাঁটাতারের বেড়া বায়োলজীর ভাষায় বৈষম্যভেদী। এখান দিয়ে মানুষ পাস হতে পারবে না, কিন্তু ডাইল পাস হতে পারবে! ব্রাভো ইন্ডিয়া গভর্নমেন্ট!
আসাম সিল করা হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশী তথা সিলেটিরা ও পাড়ে চোরাচালান করতে যায়।
এই গাধার দলকে কে বুঝাবে আসামের অর্থনীতি কিংবা আর্থ সামাজিক অবস্থার চেয়ে সিলেটিদের অবস্থা কমপক্ষে পাঁচ গুণ উন্নত!
সিলেটিদের কি দায় পড়েছে ভারত গিয়ে চুরি করার? আমি বলছি না কেউ ভারত যাচ্ছে না।
অবশ্যই যায়। এর একটা বড় কারণ হচ্ছে আসামের মানুষের সাথে অনেক পুরাতন আত্মীয়তা। আত্মার টানে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই ওপাড়ে যায়। বর্ডার সিল করাটা এদেশকে কেবল একটা অপমান করা। কাজের কাজ কিছুই না।
বর্ডার সিল করলেই যদি ডাইল আসা বন্ধ হত, বিশ্বাস করেন মুদির নেক হায়াতের জন্য আমি কোন ভিক্ষুককে দশ টাকা দান
করতাম।






দ্বিতীয় সুখবর আরো ভয়ংকর।
সীমান্তে বাংলাদেশীদের উপর আরো কড়াকড়ি আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজনাথ সিং। এটা প্রত্যাশিত এবং এতে বলার কিছু নেই।
ভয়ংকর খবর হচ্ছে বর্ডার পার হওয়া হিন্দুদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম শিথিলযোগ্য! প্রাণের তাগিদে যে সব হিন্দু দেশ ছেড়ে ভারতে যাচ্ছেন তাদেরকে বিএসএফ পূর্ণ সহযোগীতা করবে!!
মানে কি??
আমরা তো ভারতীয়দের ভারতীয় হিসেবেই দেখি। হিন্দু-মুসলিমকে জাতীয়ভাবে ঘোষণা দিয়ে আলাদা করি না। আসাম দাঙ্গায় শত শত মুসলিম মারা যাওয়ার পরও বাংলাদেশ সরকার এ রকম কোন ঘোষণা দেয় নি। দেশে একটা খারাপ অবস্থা চলছে ঠিকই,
বিভিন্ন জায়গায় মুসলিমদের সাথে সাথে সংখ্যালঘু মানুষ মারা যাচ্ছে ঠিকই...তবে এটা মানতেই হবে এসব চোরাগোপ্তা হামলা।
কোথাও কোন মোটিভ পাওয়া যাচ্ছে না। হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোন ধারণা মিলছে না।
এর দায় নিশ্চয়ই সংখ্যাগুরুদের উপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না।
বাংলাদেশে ভারতের মতো প্রকাশ্য দাঙ্গা কখনো হয়নি, হবেও না।
গত দশ বছরে "প্রাণের ভয়ে" ভারত পালিয়েছে এ রকম কোন উদাহরণ কারো জানা আছে? তাহলে ভারত কেন এ রকম সুড়সুড়ি দিচ্ছে?
হিন্দুদের কেন উস্কে দিচ্ছে? বর্ডারে কেউ গুলি খাবে আর কেউ "সাদর সম্ভাষণ" পাবে এ রকম দুই নীতি কেন?
তিস্তায় যখন পানি আটকায় তখন তো হিন্দুদের কথা ভাবে না, টিপাইমুখের বাধের কারণে যে হিন্দুরাও সাফারার হবে সেটা তো ভাবে না।
সীমান্তের এ পাড়ে যে হাজার ফেনসিডিল পাঠায় সে গুলো যে হিন্দুদের পেটেও যেতে পারে এটা তো বিবেচনা করে না।
ভারতের এত দরদ কেন আমাদের হিন্দুদের জন্য?


জানি এত ছোটখাটো সমস্যা নিয়ে কারো মাথা ব্যথা থাকতে নেই। আমাদের দেশ প্রেমিক হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের উচিত ছিল বিবৃতি দিয়ে বলা "আমরা প্রথমে বাংলাদেশী, তারপর সংখ্যালঘু। আমাদের জন্য আমাদের দেশই যথেষ্ট। কারো দরদ দেখাতে হবে না।"


ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ রকম একটা ভয়ানক বিবৃতির পরও আমাদের সরকার মহোদয়রা নীরব। ইনারা নিজের বউ অন্য কেউ নিয়ে যদি বলে "নিরাপত্তা দিতে আনছি" তাতেও বোধহয় বিচলিত হবেন না। জাতীয় নিরাপত্তা এবং জাতীয় ইজ্জতের জন্য এ রকম একটা সেনসেটিভ বিষয় নিয়ে আমাদের টকশোজীবি , সামু এবং ফেসবুক যোদ্ধারাও নীরব।
এখানে টিআরপি বাড়বে না। এসব টপিক্সে লাইক আসবে না। এ রকম মরা টপিক্স নিয়ে লিখে ফলোয়ার বাড়ানো যায়, বলেন?
একটা পোস্টও দেখলাম না এই বিষয়ে। তবে আমি কেন লিখতে গেলাম?
বিবেক তাড়া দিল। আপাত দৃষ্টিতে এই সামান্য টপিকটাই ভবিষ্যতে বিরাট বড় ফ্যাক্ট হবে। আমাদের বিষয়ে ভারতের নগ্ন হস্তক্ষেপ সবে শুরু। কোন একটা সময় ভারতের অনুমতি ছাড়া আপনি টয়লেটও করতে পারবেন না। একদিন এ জাতিকে খুব খারাপভাবে সাফার করতে হবে।
লিখে রাখেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৫৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×