ছোটবেলায় যখন আলিফ লায়লায় নাবিক সিন্দাবাদকে দেখতাম তখন থেকেই আমি নাবিক হতে চাইতাম এটা কখনো বলবো না।কারণ আমি আমার আশেপাশে কোন মেরিনার কে দেখিনি।ছোটবেলার কোন বন্ধুর মুখেও জাহাজী বাবার সমুদ্রজয়ের কোন কাহিনী শুনিনি।সমুদ্রকে কল্পকাহিনী আর ভ্রমনের কোন জায়গা ছাড়া অন্য কিছু ভাবার মত কোন জ্ঞান আমি পাইনি কারো কাছ থেকে।
অতঃপর এইচএসসির পর বন্ধুবান্ধব আর কিছু কোচিং সেন্টার কিংবা কোন প্রাইভেট একাডেমির মুখরোচক বিজ্ঞাপন থেকে মেরিন বিষয়ক তাত্ত্বিক জ্ঞান সংগ্রহ।
আধুনিক কালে যারা মেরিন এ আসছেন তাদের মধ্যে প্রেস্টিজিয়াস আর উচ্চবংশীয়রা ছাড়া বাকি সবারই মেরিনে আসার গল্পটি এমনই।
যারা সবাই জানে মেরিনারদের বেতন ৫০০ থেকে ১২০০০ ডলার কিংবা আরো বেশি।
এদের মধ্যে কেউ কেউ হয়ত মেধা দেখিয়ে মেরিন একাডেমিতে চান্স পেয়ে রয়েল ক্যাডেট হয়ে যায় আর বাকিরা পা দেয় এইচএনডি কিংবা ৫/৬ বছরে ক্যাপ্টেন চীফ ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ফাঁদে।
পাসিং আউট করে ১৫০ ডলারের চাকরিই হয়ত সর্বোচ্চ প্রাপ্তি।তবে শুধু তাদের জন্য যাদের কপালে জুটে।আর বাকিরা? থাক সে কথা।
সরকারী কিংবা বেসরকারী যে একাডেমিই হোক না কেন একজন ক্যাডেট একাডেমিতে জয়েন করে সবার প্রথমে ব্লাডি,বাগার,বুলশিট এ শব্দগুলো মুখস্ত করে আর সাথে একটা শব্দ আত্তস্থ করে।জানতে চান সেটা কি? “ডিগনিটি”।এটা মেরিনারদের অলংকার।তবে সেই ডিগনিটি এখন আর আমরা দেখাতে পারি না।কারন আমরা পেটের দাবিতে এখন রাস্তায় নেমেছি।
আন্দোলনের খবর দেখে পুরো বাংলা হয়ত হা হুতাস করে,তবে আমার মা নীরবে কাঁদেন ছেলের অনাকাংক্ষিত ভবিষ্যৎ দেখে।
পকেটের শেষ ২ টাকাও যখন শেষ হয়ে যায় তখন চায়ের দোকানে বিল আর মোড়ের লোডের দোকানের বিল পরিশোধ করতে গুগলে সার্চ করতে হয় এইচএসসি পাসড জব ইন ঢাকা।
তবুও আমরা হতাশ হইনা জানেন।তবুও আমাদের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়না।তবুও আমরা মাথা নত করিনা কেন জানেন?
কারণ আমরা যাযাবর,
আমরা সিন্দাবাদ,
আমরাই মেরিনার।।