somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ কি ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার জন্য সংঘটিত হয়েছিল ?

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকের তথাকথিত সুশীলরা যে জঘন্য ইতিহাস বিকৃতি বা মিথ্যাচার করছে, তা এদেশে আর কেউ করেনি। তারা যে মিথ্যার বেসাতি সাজিয়েছেন তার কোন তুলনা হয় না। যেসব সুশীল (?) একাত্তরে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বলে দাবি করেন, তাদের এ দাবি বিভ্রান্তিকর, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নির্জলা মিথ্যা। আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক ছয় দফা, ১৯৭০ সালে দলটির নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো অথবা মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে মুজিবনগর সরকারের দলিলপত্রে কোথাও কি 'ধর্মনিরপেক্ষতা' শব্দটি খুঁজে পাওয়া যাবে? মূলত এ বাক্যটি সংবিধানে লিখে ধর্মপ্রাণ মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধে যারা 'শহীদ' হয়েছেন তাদের আত্মাকে কষ্ট দেওয়া হয়েছে।


তথাকথিত সেসব সুশীল আরো দাবি করছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও নাকি ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল। এটি নিতান্তই সত্যের অপলাপ। মুক্তিযোদ্ধাদের যারা এখনো জীবিত আছেন তাদের মধ্যে একটি নিরপেক্ষ জরিপ চালালেই তাদের এ অন্তঃসারশূন্য দাবির মুখোশ উন্মোচন হয়ে যাবে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কী ছিল তা 'শহীদ' শব্দের শাব্দিক ও পারিভাষিক অর্থ থেকেই সুস্পষ্ট।
ইসলামই তো অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা ছিল। কেননা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ইসলামই সবচে বেশি সোচ্চার। পবিত্র কুরআন ও হাদীসে জুলুমের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। এমনকি জুলুম প্রতিরোধে ইসলামে জিহাদের বিধান রাখা হয়েছে। ইসলামের এই বিধানই ধর্মপ্রাণ মানুষের শিরায় শিরায় জ্বালিয়ে দিয়েছে প্রতিরোধের অগ্নিশিখা।


সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করছেন তাদের মধ্যে ৯৮ ভাগ ছিলেন মুসলমান, আর মৃত্যুভয়ে যারা এদেশ ত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের মধ্যে ৯৫ ভাগ ছিলেন হিন্দু। সুতরাং এই ৯৮ ভাগ মুসলমান ধর্মনিরপেক্ষ চেতনায় বিশ্বাসী ছিল বলে কেউ যদি দাবি করেন, তাহলে তা পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছু নয়। চরম সত্য হল, সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকাংশই ধর্মনিরপেক্ষতা কী তা জানতেন না। প্রকৃতপক্ষে ১৯৭১ সালে এদেশের মুসলমানরা ইসলামী চেতনায় জেগে ওঠে জালিমের বিরুদ্ধে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং 'শহীদী মৃত্যু'র তামান্নায় নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছিল। যারা চার দশক পরেও নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আবিষ্কারে গলদঘর্ম তাদের জন্য- ধিক! শত ধিক!


ইসলামই যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল তার প্রমাণ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) এম এ জলিলের "অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা" নামক বই থেকে উদ্ধৃত করছি- 'ইসলাম মুক্তি এবং শান্তির এক বিপ্লবী ঘোষণা। স্বাভাবিক কারণেই ইসলাম মুক্তিযুদ্ধ চেতনার পক্ষের শক্তি। মানুষের সার্বিক মুক্তির সংগ্রামে ইসলাম প্রতিবন্ধক তো নয়ই, বরং যুগান্তকারী এক সহায়ক শক্তি- মূলশক্তি বললেও অত্যুক্তি হবে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহকে একমাত্র প্রভু ঘোষণার মধ্য দিয়ে ইসলাম মানুষকে মূলত স্বাধীন করে দিয়েছে। এই স্বাধীন মানুষের উপর একমাত্র আল্লাহর প্রভুত্ব ব্যতীত যে কোন ধরণের প্রভুত্ব চাপিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ইসলাম আপোসহীন জিহাদ ঘোষণা করে। এমন একটি জীবন দর্শন যা চূড়ান্ত অর্থেই পরিপূর্ণ, সেই ইসলাম সম্পর্কে যারা অসহিষ্ণু মনোভাব প্রদর্শন করে, তা তারা অজ্ঞতাবশতই করে বলে আমার বিশ্বাস। (পৃষ্ঠা-৭৩)


পরিশেষে বলতে চাই,
ইসলামী চেতনা ছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না, ইসলাম ত্যাগ করলে এদেশ স্বাধীন থাকবে না। বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিক ইসলাম ধর্মাবলম্বী না হলে এই রাষ্ট্রটির স্বাধীন অস্তিত্বের ভিত্তিই যে তৈরি হতো না, এই চরম সত্য যারা ৪২ বছর অস্বীকারের চেষ্টা করে চলেছেন, তারা শুধু চরম ইসলামবিদ্ধেষীই নন, একইসঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতারও শত্রু।
১২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×