দেবীর মূর্তি তো সরানো শেষ! এখন কথা হইতেসে সুপ্রিমকোর্ট থেকে দেবী থেমিসের মূর্তি সরানোর পর আমরা কি করতে পারি?
ওয়েল... প্রথমেই কারেন্ট ইস্যুতে আসি। গরমের ইয়েতে অনেকেই টিকতে পারছেন না। আমরা তাদের জন্য দেবী থেমিসের মূর্তির বদলে ঐখানে লাখ টাকার একটা ফ্যানের ভাস্কর্য তৈরি করতে পারি। অথবা আরেকটা কাজ করা যাইতে পারে। ঐখানে তালপাতার পাখা হাতে শফি হুজুরের মুর্যাল বসাইতে পারি। এতে শফি হুজুরের মার্কাটাও ধরে রাখা গ্যালো আবার চলমান লোডশেডিঙয়ে লোকজন পাংখা দেইখা শান্তি পাইলো। অথবা একটু পিছনে যাইতে পারি। ঐ যে র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমনের একটা হতবাক মূর্তি বানাইতে পারি। তনু নামের একটা মেয়েরে ভাল্লুকে খাইয়া যাইতাসে এই আইডিয়াটাও খারাপ না! এই ভাস্কর্যও পাবলিকে খাইবো। ওহ! আই স্কিপড এ সেন্সেটিভ ইস্যু। ঐযে ধর্ষনের বিচার না পাইয়া মাঝখানে যে বাপ তার কন্যারে নিয়া টেরেনের নিচে ঝাপ দিসিলো সেইডারো একটা মুর্যাল বানানো যাইতে পারে। অবশ্য এইটা পাবলিক বেশী খাইবোনা। কারন এই ইস্যুডা ফেইসবুকে কম খাইসে মানুষ।
ফানি কিছুও করতে পারি, যেমন "নোয়াখালী বিভাগ চাই" "ভরসা রাখুন নৌকায়" "ভরসা রাখুন আল্লাহ্র উপর" "ভাই চিকন পিনের চার্জার হবে?" এই মহান বানীগুলা বাঁধাই করে বড়
বড় প্লাকার্ড বসাইতে পারি। ওহ! বিশ্বজিৎ রে যে স্টাইলে কোপানো হইসিলো মনে আছে? চরম স্টাইল মাম্মা ! ওই স্টাইলে কোপানোর একটা ভাস্কর্য বানাইতে পারি। আমরা চাইলে কিন্তু মৃণাল হকের সাথে কথা বলে "ফেলানী"র একটা মুর্তি বানাইতে পারি। ব্যাকগ্রাউন্ডে সবুজ মাঠ। তার সামনেই কাঁটাতার। কাঁটাতারে ফেলানী নামের বন্ধুরাষ্ট্রের উপহার দেয়া একটা লাশ ঝুলে আছে! সেইরকম হবে। ফরেইনরা আসলে যখন জিজ্ঞাসা করবে - মেয়েটি কে? কাঁটাতারে ঝুলে আছে ক্যানো? আমরা গর্বে বুকের ছাতি ফুলায়ে বলবো- বন্ধুরাষ্ট্রের উপহার! বুঝেছেন মশাই!!
বন্ধুরাষ্টের কথা এসে গ্যালো যখন তখন আমরা তাদের দেয়া অনেক কিছুই তুলে ধরতে পারি। তিস্তা ব্যারেজ বা ফারাক্কা বাঁধের একটা মুর্যাল বানাইতে পারি। স্টার জলসার স্টারটা স্থাপন করতে পারি।
অথবা আমরা আমাদের অর্জনের কথা লিখতে পারি। যেমন- আমরা কবার শীর্ষ দূর্নিতীগ্রস্থ দেশের তালিকায় উঠেছি, আমরা কবার আমাদের শেয়ার বাজার নষ্ট করেছি, বায়ু-পরিবেশ দূষণে কবার শীর্ষে এসেছি- ব্যাংকের রিজার্ভ খুইয়েছি।
ওহ আমরা তো নাসিরনগর আর গাইবান্ধার সংখ্যালঘুদের উপর পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের পর তাদের হতভম্ভ মুর্তিটাও স্থাপন করতে পারি। অভয়নগরের মালোপাড়ায় নির্বাচনের পর ভাঙচুরের, মন্দিরের প্রতিমা ভাঙা এসবের মোর্যাল বানাইতে পারি।
সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্ন যখন এসেই গেল- আমরা কাঠমোল্লা, নাস্তিক পরিচয়ধারী কিছু কুলাঙ্গার, কিছু বুদ্ধিবেশ্যার মুর্তি স্থাপন করতে পারি। স্বাধীনতার বিপক্ষের সব শক্তিকে একটি ম্যুরালে দেখাতে পারি। মুক্তিযুদ্ধের সময় পালিয়ে থাকা বুদ্ধিজীবিদের;
যারা পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিলিবণ্টন করার চেষ্টা করেন তাদের মূর্তি গড়ে তুলতে পারি।
সবশেষে প্রশ্ন রাখা যায়- মিয়াভাই, আচ্ছা দেবী থেমিসকে পরানোর জন্য যে বোরখাটা বানানো হয়েছিল? তার কি হবে?
আমি উত্তরে বলবো- গ্রীক দেবীর জন্য যে বোরকা আগাম সেলাই করে রেখেছিল সেই বোরকাটা সানি লিয়নি দেবীকে দান করুন!
আর যদি আমাকে প্রশ্ন করেন- ভাই আপনি কাকে বসাতে চান ওখানে?
আমি বলবো- শেখ হাসিনা। একজন মেধাবী, সাহসী, চতুর, বুদ্ধিদীপ্ত, প্রাণোচ্ছল নেত্রীর মূর্তি। যিনি জানেন, কোথায় কি বলতে হবে, করতে হবে এবং শী হিটস অন পারফেক্ট মোমেন্ট। সরাসরি ছক্কা। ওভার গ্যালারি
বারবারা বিডলারকে লেখা চিঠির শেষাংশ একদিন খুব মনে পড়বে-
এসো বারবারা,
রবিশঙ্করের সুরে সুরে মুমূর্ষু মানবতাকে গাই
বিবেকের জংধরা দরোজায় প্রবল করাঘাত করি
অন্যায়ের বিপুল হিমালয় দেখে এসে ক্রুদ্ধ হই,
সংগঠিত হই জল্লাদের শাণিত অস্ত্র
সভ্যতার নির্মল পুষ্পকে আহত করার পূর্বে,
সংগীত ও চিত্রকলাকে ধ্বংস করার পূর্বে
ছাড়পত্রহীন সূর্য কিরণকে বিষাক্ত করার পূর্বে
এসো বারবারা বজ্র হয়ে বিদ্ধ করি তাকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৭ সকাল ৭:৪৮