somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Semester Final

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবকিছু মিলিয়ে দেখলাম, নিজেকে দায়ী করা ঠিক হবেনা। পরিস্থিতি আর নিয়তি, উভয়ে মিলে সবকিছু ঘটাচ্ছে।
রোজার শুরু থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলাম যেভাবেই হোক আগেভাগে চট্টগ্রাম (hometown) চলে যাবো। সেহেরী থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আমার কর্ম নয়। তাই ঈদের দশদিন আগের ট্রেনের টিকেট এর ব্যাবস্থা করলাম। সেকেন্ড মিড দিয়েই দৌঁড়। এদিকে যে ঈদের আগের ক্লাস গুলো মিস যাবে সেই পরোয়া কে করে! সাতপাচ না ভেবে চলে গেলাম। পরিবারের সাথে ঈদ কাটানোটাই মূখ্য।
ঈদের পর আর শহর ছাড়তে ইচ্ছে করেনা। দোষ আমারও না। সব ঘোরাফেরা, খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ হতেই তো ঈদের নবম দিন গড়ালো। ভার্সিটি খুলেছে সেই কবে! অবশেষে এই শহরের বন্ধু সকলের রাগারাগীতে ঈদের এগারোদিন পর ফিরলাম। ততদিনে সেমিস্টার ফাইনাল নাকের ডগায় ভনভন করছে। সর্বোসাকূল্যে তিন চারটা ক্লাস পেলাম যার অর্ধেক করা হলোনা বিভিন্ন প্রোগ্রামের কারণে। এরমধ্যে HSC পর্যন্ত Science এ থাকায় একাউন্টিং কোর্সটা নিয়ে ভয়াবহ টেনশনে আছি। ক্লাশ করেছি মাত্র একটা। এখন পর্যন্ত একটা এসাইন্মেন্টও জমা দেওয়া হয়নি।এই সোমবার ক্লাস করেছি, সামনের সোমবার পরীক্ষা। আরে! পুরো এক সপ্তাহ হাতে আছে দেখি। বই একদম উড়াই দেওয়া যাবে। ব্যাপার না। এই করতে করতে শুক্রবার রাত। শেষ ক্লাসে পাওয়া আউটলাইন দেখে মাথা জ্বলতে লাগলো। এই কোর্সটায় সাথে পরিচিত কেউ নেই। আগামী দুইদিন ক্যাম্পাস বন্ধ। একটা শিট দিয়েছিলো স্যার। গতকাল ফটোকপি সেন্টারে গিয়ে পাইনি। স্যারের কাছে গিয়েছিলাম। স্যারের উত্তর ছিলো সোজা, ‘I don’t give a shit.’ কি থেকে কি করি!
হঠাত মনে পরলো ক্লাসে একটা পরিচিত মুখ ছিলো। Mutual Friend! নাহ, ক্লাবে দেখেছিলাম। নাম জানা আছে। ক্লাবের ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর কে ফোন দিয়ে নাম্বার নিলাম। ফোন দিলাম। অনুরোধ করলাম শিটের ছবি তুলে একটু মেইল করে দিতে। আর সাথে সিলেবাসটাও জেনে নিলাম। আরে! মাত্র এই কয়টা চ্যাপ্টার! ব্যাপার না। দুইদিন হাতে আছে, শেষ হয়ে যাবে। চিন্তা থেকে তো বাঁচা গেলো।
নাহ, বসে থাকা যায়না। এই ‘চিন্তা মুক্তির’ ব্যাপারটা সেলিব্রেট করা দরকার। একটা মুভি এখন না দেখলেই নয়। মুভি শেষ হওয়ার পর ঘুমানোর আগ পর্যন্ত সময় থাকলে পড়া যাবে। মুভি সিলেক্ট করতে হবে। এটাই এখন মূখ্য ব্যাপার। সেমিস্টার ফাইনাল আসতে এখনো গোটা দুইদিন বাকি।
(দুইদিন পর)
সব কিছুইও নির্ধারিত। আর আমার সময়গুলো যেন বিফলে না যায় সেদিকে প্রভুর সজাগ দৃষ্টি। সেইজন্যই গত কয়েকদিন আমার পড়তে বসা হয়নি/ বসতে দেওয়া হয়নি।পরিস্কার করছি ব্যাপারটাঃ
পরীক্ষা হওয়ার কথা আগামীকাল। গত দুইদিন এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা নিয়ে ছিলাম তাই পরীক্ষার কথা মাথায়ও আসেনি। আজ সকাল ১০টায় মনে পড়লো। হিসেব করতে লাগলাম কত ঘন্টা বাকি। নাহ, এখনো অনেক সময় বাকি। তার উপর সরকারী ছুটির দিন। পড়তে বসাটা ঠিক ছুটির দিনের সাথে যায়না। তবুও ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের প্ররোচনায় পড়তে বসলাম। কিছুক্ষন পর মনে হতে লাগলো মাথায় মেহেদী দেওয়া দরকার। দেওয়ার পর মনে হলো মাথায় মেহেদী দিয়ে কীভাবে পড়বো! শুয়ে শুয়ে পড়া ছাড়া আমি পড়তে পারিনা। গেমস, মুভি করতে করতে সন্ধ্যা। তখন গিয়ে মনে পড়লো গত দুইদিন আগে যে মেইল চেক করে আমার পরীক্ষার মেটারিয়াল নেওয়ার কথা তা এখনো করা হয়নি! এদিকে মডেমে টাকা নেই। দৌড়ে নিচে গেলাম। ভুলে গেলাম পেনড্রাইভ নিতে। মস্তিষ্ক পুরোপুরি কাজ করছেনা। দোকানেই মেইল খুলে সেই মিচুয়াল ফ্রেন্ডের পাঠানো খাতার+শীটের ছবি প্রিন্ট করালাম। দোকানদার মামা খুব সুন্দর করে সুযোগটা কাজে লাগালো। বিলের এমন একটা এমাউন্ট বলল যেইটা অনন্তের দ্বারাও সম্ভব না করা, এতোটাই অসম্ভোব। রাগটা নিজের উপর ডাইভার্ট করে কিছু টাকা দিয়ে বাকিটা পরে দেবো বলে বাসায় আসলাম।
খাইসে! ম্যাথের সলুশন আছে, কোশ্চেন নাই! পাঁচ পৃষ্ঠা জুড়ে থাকা এই সলুশনের কোশ্চেন বানানো আমার কম্ম নয়। স্যারকে ফোন দিলাম, বলল কারো থেকে যেনে নিতে। যার থেকে নিয়েছি তাকে ফোন দিলাম, কথা বোঝা যাচ্ছেনা মোবাইলে, অসাধারণ ৩জি, আর অসাধারণ বিশেষ এক অপারেটর যাদের রেগুলারই গালি দেই। বারান্দায় গিয়ে একটা লাইনই কানে ঢুকলো, আগামীকাল পরীক্ষা হবেনা। মাথা শূন্যে দোলা দিয়ে উঠলো। স্যারকে আবার ফোন দিয়ে নিশ্চিত হলাম। েতো খুশি কপই রাখি। তার মানে পরীক্ষার এই নাটকটার উপসংহার হলো আমার পকেট থেকে প্রিন্ট বাবদ বেশ কিছু টাকা খোয়ানো। খুশিতে কি করবো বুঝতে পারছিনা। আরো একদিন, হ্যাঁ, পুরো একদিন হাতে পাওয়া গেলো। এই খুশিতে আজ সারা রাত মুভি না দেখলে এই সুখবরকে অপমাণ করা হয়।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×