৪৮ ঘণ্টায় ৪৯ জন মানুষের প্রাণ গেল সড়ক দুর্ঘটনায়, কোন রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা ফেস্টিভ্যাল ছাড়াই!
আমাদের সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রীর মুখের হাঁসিটা ম্লান হল না এতটুকুও! দায়িত্ববান মন্ত্রী বটে। শুনেছি তিনি কবি মানুষ, আর কবি সাহিত্যিক গন সাধারণত একটি বেশিই সেনসিটিভ হন বলে জানতাম। তবে কি মন্ত্রী মহাশয়ের হিয়া পাথর দিয়ে গড়া? শুনেছি পাথরেও নাকি কখনো কখনো ফুল ফোটে। তবে কি তার কাব্য প্রতিভাও তেমনি অস্বাভাবিক কিছু?
মোটেই তা নয়, তিনি কবি বলেই হয়ত প্রকাশ্যে বলেন না যে, শুধুমাত্র সংকেত চিনলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া যেতে পারে। তিনি পরিশীলিত কথা বলেন বলেই হয়ত মুখে বলেন না ঠিকই কিন্তু রাস্তায় অশিক্ষিত মফিজেরা (যে শুধু নিজের নামটাই লিখতে পারে ট্রাফিক সংকেতও চেনে না।) সড়কে ক্রমাগত নির্বিচারে সাধারণ মানুষ হত্যা করেই চলেছে।
তাদেরকে খুনি বলা যাবে না এই দাবীর সাথে আমিও একমত। আসলে খুনি তো সে বা তারা যারা মাতালের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দিয়ে বলে মানুষের পাহারা দাও!
রাস্তায় গাড়ী নেই বিআরটিসি বাস দেখে দৌড়ে যায় যাত্রী। বাসে উঠতে দেয় না চালকের সহকারী ওটা নাকি নির্দিষ্ট অফিস/প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেয়া। আবার এই বিআরটিসি সংখ্যা নিয়ে সরকারের কত তথ্য উপাত্ত!
আর বেসরকারি পরিবহন? জোড়া তালি দেয়া বডি। ভয়ঙ্কর নোংরা সিট। ভাড়া আদায় কারীর যা ইচ্ছে তা ব্যবহার। ইচ্ছেমত যাত্রী উঠানো নামানো। চালকের অনিয়ন্ত্রিত গাড়ী চালানো। এ সবই নিত্যকার ঘটনা। দেখার যেন কেউ নেই। এসব গাড়ির যাত্রীরা প্রতি মুহূর্তেই প্রমাদ গুনতে থাকে এই বুঝি গাড়ীটা দুর্ঘটনা ঘটাল। কিন্তু কিছুই করার নেই দুটি টাকা বাঁচাতে তাদের এতেই চড়তে হয়। চোখের সামনে দেখে তাদের গাড়ীটা অবলীলায় একজন বা একাধিক মানুষ মেরে দিয়ে সোজা বেড়িয়ে গেল। সারাজীবন ট্রমাটাইজড হয়ে মানুষগুলো বেঁচে থাকে। ঠিক যেমন ক্ষমতার লোভে নেতারা ঘোরের মধ্যে জীবন পাত করে চলেন।
ইতিহাস বলে রোম যখন পুরছিল নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল। বর্তমান দেখছি অতীত থেকে আলাদা কিছু নয়। যুগে যুগে একই ভাবে রোম পোড়ে আর নিরো'রা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বাঁশি বাজিয়ে চলেন।
হায় দুর্ভাগ্য আমাদের। মিষ্টি কথায় মন ভুলানো নেতার অভাব নেই, অভাব কেবল দুর্ভাগাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর মত মানুষের।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৬