somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোহিঙ্গাদের নিয়ে আমাদের সুদূরপ্রসারী চিন্তা করা উচিৎ।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবিঃ বিবিসি বাংলা
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার আর ফিরিয়ে নেবে না, ওদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আমাদেরই করতে হবে: এরশাদ (বাংলা ট্রিবিউন সেপ্টেম্বর ২৪)
সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদের এই ধারনার সাথে আমি একমত। চীন-রাশিয়া-ভারতের অবস্থান সেটাই নির্দেশ করছে। রোহিঙ্গা প্রশ্নে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি, বিভিন্ন দেশের টনকে টন খাদ্য সাহায্য পাঠানো, তুরস্কের এক লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করে দেয়ার ঘোষণা এ সবই রোহিঙ্গা সমস্যা সহজে না মেটার বার্তা বহন করে। কারণ একই সাথে এ সব দেশ মায়ানমারের সাথে ব্যবসা -বাণিজ্য পরিচালনা করছে। স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক বহাল রাখছে। তাঁরা মুখে যাই বলুক সম্পূর্ণ দায়টা তো বাংলাদেশের কাঁধেই বর্তেছে।
যুক্ত রাষ্ট্র কি চায় সেটা যেমন ধোঁয়াশার তেমনি তাঁর ক্ষমতার বহরও। বর্তমান বিশ্ব নেতৃত্ব যে আর যুক্তরাষ্ট্রের একক কর্তৃত্বে নেই সে তো বলাই বাহুল্য। এক্ষেত্রে ইসরাইলের সাথে মায়ানমারের সম্পর্কও ধর্তব্যের বিষয় যার উপর যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সিদ্ধান্তই নির্ভর করে। এদিকে চীন মায়ানমারকে সম্পূর্ণরূপে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়ার একটি মোক্ষম সুযোগ পেয়েছে। তাঁরা সেটি সফলভাবে কাজেও লাগিয়েছে। রাশিয়া-ভারতও এই সুযোগটি হাত ছাড়া করবে না তা তো তারাও স্পষ্ট করেছে। সারা বিশ্বে যত নিন্দা যত প্রতিবাদই উঠুক না কেন তাতে মিয়ানমারের কিছুই যায় আসে না।
বাংলাদেশের থিংক ট্যাঙ্ক যদি এখনই এটা বুঝতে সক্ষম হয়ে থাকেন তাহলে সেটা অবশ্যই স্বস্তির। কাজেই এখন দীর্ঘসময় ধরে এমনকি স্থায়ী ভাবে এই লোকগুলোর নিরাপত্তা সহ মৌলিক চাহিদা সমূহ মেটানোর ব্যবস্থা কি হবে সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। তাঁরা যদি মনে করে অনন্তকাল ধরে পূর্বাপর মিলিয়ে প্রায় দশ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে খাইয়ে পরিয়ে বাঁচিয়ে রাখবে সেটা যেমন অসম্ভব তেমনি অসম্ভব এই সমস্যাকে মাথা থেকে ঝেরে ফেলা।
আমাদেরকে ভাবতে হবেঃ
যতদিন পর্যন্ত এই লোকগুলোকে আশ্রয় দিতে হবে ততদিন পর্যন্ত যেন তাঁরা এ দেশের জন্য বোঝা হয়ে না থাকে।
আমরা কিভাবে তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে আটকে রেখেও কর্মমুখী করে তুলতে পারি। যাতে তাঁরা কোন জঙ্গি সংগঠনের পাল্লায় না পড়তে পারে কিংবা আভ্যন্তরিক শান্তি শৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতে না পারে।
একই সাথে এদের দেখভাল করতে গিয়ে বাংলাদেশও যেন কোনরকম অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে না পরে যায়।
অনেকেই হয়ত প্রশ্ন করবেন, এত কম আয়তনের দেশ হিসেবে কিভাবে এদেরকে মূল জনগোষ্ঠীর থেকে আলাদা করে একটি নির্দিষ্ট স্থানে আটকে রেখে কর্মমুখী করা সম্ভব? আমি বলব সে সুযোগ কিন্তু আমাদের আছে। আমরা চাইলে এই বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে হাতিয়া সংলগ্ন সাগরের বুকে জেগে ওঠা বিশাল ভূখণ্ডে স্থানান্তর করতে পারি।


চিহ্নিত জায়গাগুলোতে জেগে উঠেছে নতুন চর যার পরিমানও আনুমানিক ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটারের কম নয়!

নির্দিষ্ট স্থানে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাদের উৎপাদন মুখি নানা কাজে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। তাঁরা যতদিন এখানে থাকবে আত্মনির্ভরশীল হয়ে থাকুক। বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে বলে তাঁরা কি বাংলাদেশকে ছিবড়ে খাবে! বাংলাদেশের পক্ষে এর পূর্বে আশা পাঁচ থেকে সাত লাখ রোহিঙ্গার বোঝা কাঁধে নিয়ে আরও পাঁচ লাখের বোঝা এভাবে বহন করা যায় না। আর সেটা এ দেশের আর্থ সামাজিকতার প্রতিও এক সময় হুমকি হয়ে দেখা দিতে বাধ্য। দিনের পর দিন বছরের পর বছর তো এভাবে তাদের হাতে তুলে খাওয়ানো যাবে না। আমরা আটকে পড়া পাকিস্তানীদের বোঝা বইছি অর্ধ শতাব্দী ধরে। কে আমাদের সাহায্য করছে? এই রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রেও দু এক বছর পর আমরা ভিন্ন চিত্র দেখব সে নিশ্চয়তা কে দেবে?
মায়ানমারে যদি কোনদিন তাদের পাঠানো সম্ভব হয় সেদিন ওখান থেকেও জাহাজ ভড়ে পাঠানো যাবে। অতএব কক্সবাজার-টেকনাফের মত এমন একটি পর্যটন এলাকায় তাদের রাখা মানে আমাদের পর্যটন শিল্পকেও হুমকির মুখে ফেলা। আর কিছুদিন পরেই হয়ত আমরা দেখব পাহাড়ি-বাঙ্গালির সাথে এদেরকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ভেবে দেখবেন?

[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:১৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×