somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বয়স যখন 'বার থেকে বিশ' আগলে রাখুন আরেকটু।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সময়টা কৈশোর থেকে তারুণ্য অথবা বলা যায় ১২ থেকে ২০। চোখে চোখে রাখুন সন্তানকে। এ সময় সে যা দেখবে তাই শিখবে। যে পরিবেশে বেড়ে উঠবে সমগ্র জীবন তাই ধারণ করবে। চাইলেও সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না। কৈশোরের ভাল লাগা, দুঃখ, ক্ষোভ, ঘৃণা তাঁর অবচেতন মনকে এতটাই আচ্ছন্ন করে রাখে যে তাঁর ছায়া পরবর্তী জীবনের সবটাতেই পরে।
আপনি চাইলেই এই বয়সের একজন মানুষকে মানবতাবাদী করে গড়ে তুলতে পারেন চাইলে তাকে প্রতিহিংসা পরায়ণ করে গড়ে তুলতে পারেন।
আপনার সন্তানের কৈশোরের বন্ধু কে বা কারা তাদের খোজ নিন। সে কাদের সাথে মিশছে কাদের অনুসরণ করছে জানার চেষ্টা করুন।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, ঠিক এই বয়স থেকেই সন্তানদের সাথে মা বাবার দুরুত্ব তৈরি হতে শুরু করে। ঠিক যে সময়টায় তাকে আরও বেশী সময় দেয়া প্রয়োজন। ১২-১৩ বছর বয়সে এসে ছেলে-মেয়েরা একই সাথে তাদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের ধাক্কা সামলায়। এ সময় তাঁর মনে হাজারটা প্রশ্ন ভিড় করে। সে সেই প্রশ্নের উত্তর অভিভাবকদের কাছ থেকে পায় না। লজ্জা ভয় জড়তা তাকে তা প্রকাশে বাঁধা দেয়। অভিভাবক গন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সন্তানের সে প্রশ্নের উত্তর দেন না। ফলে তাঁরা সমবয়সীদের সাথে আলাপ করে বেশিরভাগ সময়েই ভুল সিদ্ধান্ত নেয়।
ছেলেমেয়েদের এই নতুন জীবনের এক দিকে থাকে বাঁধ ভাঙ্গা উল্লাস অন্যদিকে একটা দুর্বিনীত ভাব। জয় করার একটা অদম্য স্পৃহা তখন তাদের চেপে ধরে। এ সময় যদি সে সঠিক মানসিক পরিচর্যা না পায় তাহলে নানা রকম গোল বাধতে পারে।
দেখবেন এ বয়সে হঠাৎ করে, কেউ কেউ মনমরা হয়ে থাকছে। কেউবা শাসন মানছে না। কেউ কেউ একাকীত্বকে বেছে নিচ্ছে। এর সবটারই সুদূরপ্রসারী প্রভাব আছে। আর তা মোটেও ভাল নয়।
কৈশোরে আপনার সন্তানের আচরণ যেমনই হোক না কেন, তাকে সময় দিন। তাঁর সমস্যা, ভাল লাগা - মন্দ লাগা জানতে চেষ্টা করুন। তাঁর সাথে একমত হতে পারলে ভাল না পারলে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে যুক্তি তর্কের মাধ্যমে তাকে সঠিকটা বোঝাতে চেষ্টা করুন। বিশেষ করে তাকে বলতে দিন। তাকে গুরুত্ব দিন। তাঁর সাথে বন্ধু বৎসল হন।
আপনার সন্তানকে কখনোই এটা ভাবতে দিবেন না যে, আপনার কাছে তাঁর মতামতের গুরুত্ব নেই। এটা বলবেন না যে, তুমি ছোট তুমি বুঝবে না। বরং তাঁর কাছ থেকে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে পরামর্শ নিন এতে সে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে শিখবে। নিজের উপর তাঁর আস্থা বাড়বে।
আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল আমরা আমাদের সন্তানদের সব সময় প্রথম স্থান অধিকার করতে দেখতে চাই। এটা ঠিক নয় সবার ক্ষমতা এক নয় সবাই সব বিষয়ে ভাল হতে পারে না। আপনার সন্তানের সব থেকে আগ্রহের বিষয়টায় জোর দিন সে ক্ষেত্রে সে অন্য সব বিষয়ের থেকে সফল হবে। যে কোন প্রতিযোগিতায় সন্তানের সাফল্যে মা-বাবা তাঁর থেকেও বেশী আনন্দিত হন এটা তো স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু যখন সে খারাপ করে তখন কি এটা ভেবে দেখেছেন আপনার সন্তান যে কষ্ট করেছে সেও কম অপমানিত হয় নি। সে সময় তাঁর পাশে থাকুন পরবর্তীতে তুমি আরও ভাল করতে পারবে সেটা বলুন। তাকে হতাশ হতে দিবেন না।
ভবিষ্যতে আপনার সন্তানকে যে রূপে দেখতে চাইছেন এখনি সময় তাকে সেই রূপে গড়ে তোলার। আর সে কাজটিই একমাত্র আপনিই করতে পারেন।
ইদানীং অনেকেই প্রাইভেসির কথা বলে সন্তানদের অন্দরে ঢুকতে চান না। আপনি যদি তাঁর বন্ধু হয়ে যেতে পারেন তাহলে তো আর প্রাইভেসীর আড়ালটা থাকছে না। মা'ই তো পারেন মেয়ের সমস্যার সঠিক সমাধান করে দিতে। বাবাই পারেন ঘরে-বাইরে ছেলের প্রকৃত বন্ধু হয়ে উঠতে। ছেলে মেয়ের বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে মা-বাবাও আড্ডা দিতে পারেন। এতে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে হৃদ্যতা পূর্ণ হবে। ফলে একে অন্যের সমস্যার সঠিক সমাধান করতে পারবেন।
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×