somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উর্বশী!

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৩:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেয়েটি সামনের বসার জায়গাটিতে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে অনর্গল সেল ফোনে কথা বলে যাচ্ছে সিলেটিতে।

এমন নয় যে খুব আস্তে। এখান থেকে শব্দগুলো সব পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে, কিন্তু বুঝতে পারছিনা প্রায় কিছুই। একে তো সিলেটি ভাষা, তার ওপরে কথা বলছে খুব দ্রুত।

এ সময়টিতে ক্যাফে ম্যাংগোতে ভিড় থাকেনা তেমন। সাকুল্যে তিন জন এখন- আলাদা আলাদা ভাবে আসা। তিন জনই কফির অর্ডার দিয়েছি।
আমার হাতে রাজ্যের সময়। কিচ্ছু করার নেই আমার এখন। প্রথমে ভেবে ছিলাম লেইকের পাড়ে বসবো। গিয়ে দেখি সব যুগল। গল্প করছে, এদিকে সেদিকে ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে বসে, আধ শোয়া হয়ে কেউ কেউ। বসতে অস্বস্তি হল, হাঁটতে হাঁটতে তাই এখানে আসা।

দেয়ালে একটা টিকটিকি ছোট্ট একটা মথকে লক্ষ্য করে এগিয়ে যাচ্ছে। গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখছি ঘটনাটি। কানে আবহ শব্দের মতন ভেসে আসছে মেয়েটির কন্ঠ।

ক্যাফের তৃতীয় মানুষটি, সম্ভবতঃ তার জানেমানের জন্যে অপেক্ষা করছে। ঘন ঘন টেবিলে ফেলে রাখা মোবাইলের দিকে তাকাচ্ছে-সময় দেখছে বোধ হয়। রাজ্যের উৎকন্ঠা-উদ্ভ্রান্ত ভাব-আবার অল্প একটু বিরক্তি মিলিয়ে তার মুখটা দেখার মতন হয়েছে। কফি ঠান্ডা হচ্ছে তার। গত ১৫ মিনিটে একটা চুমুক পর্যন্ত দেয় নি।

টিকটিকি-মথ ও ছেলেটির মুখ আর নেপথ্যে মেয়েটির শব্দক্ষেপণ মিলিয়ে সময় সুন্দর একটা মন্তাজ সৃষ্টি করেছে। তার কথায় মাঝে মাঝে ছেদ পড়ছে শুধু খুব সুন্দর করে মগে চুমুক দেবার সময়।

আমার খুব ভাল্লাগছে।

মেয়েটির কথা বলা শেষ। টেবিলে ছড়িয়ে রাখা তার জিনিস পত্রগুলো গুছিয়ে বেড়িয়ে গেল সে।

ত্যতক্ষণে অন্তিম চুমুক দিয়ে আমিও বাইরে।, অল্প কিছু জায়গা পেরিয়ে রাস্তায়।

ঝিরঝিরে বৃষ্টি হচ্ছে। একটা কিশোর কুকুরের লেজ ধরে টানাটানি করছে বাচ্চা দু’টো ছেলে। হুড ওঠানো রিকশা কিছু, খুব সপ্রতিভ কাপড় চোপড় আগাগোড়া দামী বর্ষাতিতে ঢাকা, মাথায় হেলমেট চাপানো, আবেদনময় বাইসাইকেলে সওয়ার কিছু আরোহী, নাতি প্রশস্ত রাস্তাটায় একটু জটলার সৃষ্টি করছে।

হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকের মত একটা কথা মনে পড়ে গেল আমার- কখনই ত কোন মেয়েকে প্রথম দেখার সময় শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে না দেখলে আমার রূপসী মনে হয় নি।

এই মেয়েটাকে কেন এখনো মনে ধরে আছে?

মনে হচ্ছে কেন স্বর্গ থেকে এইমাত্র নেমে আসা উর্বশী!

কন্যাটির সৌন্দর্য কি এতই তীব্র, এতই অতুলনীয় যে তার আঞ্চলিকতার অনাড়ম্বরতাকে তা ছাড়িয়ে গেছে!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৩:২৭
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×