somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"বাঙালি মুসলমান!! -এদের ফরজ, ওয়াজিবের কোন খবর থাকে না। সুন্নত, নফল নিয়ে এদের যত্ত মাথা ব্যাথা!!

১২ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"সকল মুসলমানদের মতামত আশা করছি.......

ঘটনা ১.....
"সময়টা ছিল ২০১৫ সালের ২৮ রমজান। ১২ ব্যাচের বন্ধুদের নিয়ে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হলো। তো,,ইফতারের প্রায় সব আয়োজন কম্পেলিট। ইফতারের আইটেম ১৫-১৬ টা করা হয়েছে....!
তখন ইফতারের আর প্রায় ৫ মিনিটি বাকি ছিল, এমন সময় আমার এক বন্ধু আবিষ্কার করলেন যে, ইফতারের প্রধান আইটেম "খেজুর" ই নাই। এমন কি এই জিনিষটার কথা কারো মনে ও ছিল নাহ।

তখন সাথে সাথে আমার কিছু বন্ধু বলে উঠল..
-এটা কিছু হইল? খেজুর ছাড়া ইফতার কি হবে?
-তোরা এটা কি বা*লের ইফতার পার্টি দিলি? যে, খেজুর ই কিনছ নাই?
-ভাইরে, তোরা আজকে আমার রোজাটাই বরবাদ করলি, খেজুর ছাড়া ইফতার!! ধুর,
-আর এই জন্যেই আমি আসতে চাই নি। এবার বুঝলি??

এ রকম আরো অনেক মন্তব্য করতে থাকল তারা। যেহেতু আর ইফতারের বেশী সময় ছিল না, সেহেতু খেজুর আর ক্রয় করি নাই। এবং শেষ পর্যান্ত খেজুর ছাড়াই ইফতার করতে হলো সবার...!!

তো, যথারীতি ইফতার শেষ হলো সবার। ইফতার শেষে কেউ কেউ মসজিদের দিকে দৌড় দিলো। আর অনেকেই দেখলাম মসজিদের না গিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে ফেবুতে লগইন করে, ইফতার পার্টির সেলফি-কুলপি আপলোড দিচ্ছে!! যাদের মোধ্যে বেশীর ভাগই ছিলো তারাই, যারা একটু আগে খেজুর নিয়ে নিজেদের মোধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু করে দিয়েছিল!!

তো ঘটনা ১ থেকে আপনি কি বুঝলেন?
এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা....
একটা খেজুর নিয়ে আমরা নিজেদের মোধ্যে অনেক তর্ক বিতর্ক করতেছি, খেজুর ছাড়া ইফতার হবে না, ইফতারিতে খেজুর থাকতেই হবে এ রকম আরো অনেক মনগড়া হাদিস তৈরি করতেছি, অথচ আমাদের ফরজ "মাগরিবের নামাজ" যে ছুটে যাচ্ছে তার দিকে আমাদের কোন খবর ই নেই। নেই কোন মাথা ব্যাথা ও... আর আমরা ফরজ নামাজ না পড়ে সুন্নত খেজুর নিয়েই পড়ে আছি!! X(



ঘটনা ২....
"গত পরশু দিন অর্থাৎ রমজানের তৃতীয় দিন আমার এক বন্ধুর সাথে তারাবীর নামাজ আদায় করতে মসজিদে গেলাম। তো, যথারীতি নামাজ শুধু হলো। তারাবীর নামাজ ৮ রাকাত পড়ার পর দেখলাম আমার বন্ধুটা বাহির হয়ে যাচ্ছে!!
-কিরে আর নামাজ পড়বি না?
-না..!
-কেন?
-তারাবীর নামাজ ৮ রাকাত পড়লেই হয়। আমি অনেক বইতে পড়ছি যে, তারাবীর নামাজ ৮ রাকাত। এবং অনেক হুজুরে ও বলছে!!

এরপর তখন আর তার সাথে আমি কোন তর্কে জড়ালাম না, নামাজ শেষে তাকে বললামঃ তা ভাই বুঝলাম তারাবীহ ৮ রাকাত, কিন্তু তুই "বিতিরের নামাজ" পড়ছত? এরপর সে আর কোন কথাই বল্ল না.....!!
.
তো ঘটনা ২ থেকে আপনি কি বুঝলেন?
এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা! আমরা তারাবীর নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে নিজেদের মোধ্যে অনেক তর্কবিতর্কে যক্ত হই, অথচ বিতিরের ওয়াজিব নামাজটাই আদায় করি নাহ। আবার অনেক সময় দেখলাম তারবীর ২০ রাকাত আদায় করার পর মসজিদ থেকে বাহির হয়ে যাচ্ছে, এদের অবস্থা এই রকম যে বিতিরের আর ৩ রাকাত নামাজ পড়লে এরা মারাই যাবে!! অথচ তারাবির নামাজ ২০ রাকাত থেকে এই বিতিরের ৩ রাকাতই গুরুত্বপূর্ণ!

আমরা আসলে এমন এক মুসলমান যে, ১নং-খাওয়ার পর মিস্টি খাওয়া সুন্নত, ইফতারিতে খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত! ২নং- আবার মেসওয়াক করা, রাস্তায় চলাফেরার সময় চক্ষু অবনত করাটাও সুন্নত! কিন্তু আমরা ঐ ১নং সুন্নত গুলো নিয়েই পড়ে থাকি এবং এইসব নিয়ে নিজেদের মোধ্যে তর্কবিতর্ক ও করি। কিন্তু ঐ ২ নং সুন্নত গুলোর দিতে আমরা ভুলে ও তাকাই নাহ। ঐ সুন্নত গুলা মানা তো দূরের কথা, এগুলা ও যে সুন্নত সেটাই জানি না আমরা অনেকেই!!

এর কারন হচ্ছে এক নাম্বার সুন্নত গুলা আমাদের পক্ষে ছিল, তাই এই সব আমরা পালনে ব্যস্ত! আর দু নাম্বার গুলা যেহেতু আমাদের পক্ষে নেই, তাই আমরা আর এগুলা নিয়ে মাথা ও ঘামাই নাহ... :3
আর আমরা বাঙালিরা তো সব সময়ই সুযোগের অপেক্ষায় থাকি, এমন কি আমরা আমাদের এই ধর্মীয় বিষয় গুলা ও নিজেদের সুযোগ-সুবিধা মত করে নিচ্ছি। X(


সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:২১
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×