একটি কেস ষ্টাডি:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত মাষ্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছেন - মো: মোশাররফ হোসেন, মাদ্রাসায় পড়াশুনা করা এ মেধাবী শিক্ষার্থী বর্তমানে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ে শিক্ষকতা করছেন। ২০০৭ সালে ওই বিভাগের মাষ্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছেন- আনওয়ারুস সালাম, যিনি বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক। আলীয়া মাদ্রাসায় পড়া-লেখার আগে প্রচন্ড এই মেধাবী শিক্ষার্থী কওমী মাদ্রাসা থেকেও সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করেছেন। ২০০৮ সালে একই বিভাগের মাষ্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছেন- আশরাফুল আলম, তিনিও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিভাগের শিক্ষক হিসেবে সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন। ঢাবির এই বিভাগটির চলতি (২০০৯) মাষ্টার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহন করছেন পাঁচজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। যাদের মধ্যে দুজন অনার্সে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের একজন অনার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছেন। একদা প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দু''জন শিক্ষকও মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেছেন।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অন্তত দু''জন শিক্ষক মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেছেন ।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।
১৯৮৬ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত আলিম পরীক্ষাকে উচ্চ মাধ্যমিক এর (এইচ.এস.সি) সমমান প্রদান করা হয়। ধর্মীয় বিষয় শিক্ষার প্রতি গুরুত্ত্বারোপ করে আলীয়া মাদ্রাসাগুলোর দাখিল ও আলিম শ্রেণীর সিলেবাসে বাংলা ও ইংরেজী বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই সিলেবাসে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর বাংলা ও ইংরেজী পাঠ্যসূচীর প্রায় অনুরূপ। তবে মাদ্রাসার সিলেবাসে ইংরেজী লিটারেচার ও গ্রামার এবং বাংলা সাহিত্য ও ব্যাকরণ এর দীর্ঘ সিলেবাস থাকলেও তাদেরকে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হচ্ছিল।
গত বছর মাদ্রাসায় পড়ুয়ারা আদালতের রায়ের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তারপরই ঢাবির সিন্ডিকেট তড়িঘড়ি করে এ বিষয়ে আইন পাশ করে। এবারও বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। দেখা যাক মহামান্য আদালত কী রায় প্রদান করেন। ...................
তবে এই অবসরে অজ্ঞজনদের মনে কিছু প্রশ্নের উদয় হয়েছে -
১. মাদ্রাসায় পড়াশুনা করা মেধাবী এই শিক্ষার্থীরা যে ঢাবির ৬টি বিভাগে ভর্তি হতে পারছেন না, তার দায়ভার কে নিবে?
২. দেশের অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কোন বিষয়ে পড়া-লেখার জন্য কোন জটিল আইন আরোপ করা না হলেও ঢাবিতে এই অদ্ভুত আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য কী। ওই ৬টি বিভাগে মেধাবী শিক্ষার্থী নিশ্চিত করা নাকি ভিন্ন কোন উদ্দেশ্য রয়েছে?
৩. যদি মেধাবী শিক্ষার্থী ঢাবি কর্তৃপক্ষের টার্গেট হতো তবে, এবারে ঢাবির "খ"-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া আব্দুল আলিম কিংবা খ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজীতে সর্বোচ্চ নম্বর (২৮.৫০) পাওয়া মনির হোসেন, রোল নং- ১১৫৯৩২; কেন ইংরেজী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অথবা তার পছন্দের অন্য কোন বিষয়ে পড়তে পারবেন না?
৩. উদ্দেশ্য যদি ভিন্ন কিছু হয়, তাহলে কবি নীরব ।
ভাইজানরা/ আপুরা, এ বিষয়ে আপনাদের নিরপেক্ষ ও সুচিন্তিত মতামত আশা করছি।
জনাব মুবাশ্বির সাহেবের একটি পোষ্টই আমার এই লেখার অনুপ্রেরণা।
Click This Link
আরও উল্লেখ্য যে:
(ইংরেজী, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ এবং ভাষাতত্ত্ব- এই ছয়টি বিষয়ে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য আবারো শর্তারোপ করা হল। শর্তটি হল- উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজীতে ২০০ নম্বরের শর্ত।)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৫৬