somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এয়ারপোর্টের সিকিউরিটি অফিসাররা কি সবাই ফকির/ফকিন্নির বাচ্চা?

২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবাই বলে জিয়া আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের অবস্থা নাকি পাল্টাইছে। আগের মতো খাই খাই স্বভাব নাকি এখন আর নাই। কিন্তু এখনো সিকিউরিটি অফিসার / মহিলা অফিসারদের কাছ থেকে পরিত্রাণ নাই যাত্রীদের।
একটি জরুরী কাজে এই মাসের ০২/০৮/২০১৪ তারিখে দেশে যাই একদম খালি হাতে রিজেন্ট এয়াওয়েজের ফ্লাইটে। সাথে ছিল শুধুমাত্র একটি ১৯" এলইডি টেলিভিশন কাম কম্পিউটার মনিটর, একটি ব্যাক্তিগত ল্যাপটপ আর ৯২ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার। যাওয়ার দিন কোন সমস্যা হয়নি। আসার দিন ১৩/০৮/২০১৪ আমার লাগেজ হলো ২৪.৩ কেজি। হ্যান্ডক্যারি কিছুই নেই। ল্যাপটপ বহন করলেও এটাকে হ্যান্ডক্যারি ধরা হয় না বা ওজন ও করা হয় না সাধারণত। তো ভাবলাম, যেহেতু হ্যান্ডক্যারি নেই, তাহলে ২৪ কেজিই বুকিং দিয়ে দেই। বুকিং দিতে গেলাম, এয়াওয়েজের অফিসার ২০ কেজির ওপরে বুকিং ছাড়লই না। আমি বাংলাদেশী ভাইকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম যে আমার হ্যান্ডক্যারি আর বুকিং মিলিয়ে ২৭ কেজি হয়। আমি ২৪ কেজি বুকিং দিয়ে দেই, আর কোন হ্যান্ডক্যারি নেই। না তা হবে না। ২০ কেজিই দিতে হবে আর ৪ কেজি হাতে করে নিতেই হবে। অগত্যা ২০ কেজিই বুকিং দিয়ে, অতিরিক্ত ৪ কেজি মোস্তফা শপিং সেন্টারের (সাথেই ছিল) একটা পলিথিনের ব্যাগে ভরে ভালো করে বেঁধে আসলাম ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে।
ইমিগ্রেশন অফিসার পাসপোর্ট দেখে জানতে চাইল ৩ মাসে দুইবার দেশে আসলাম কেন?
উনাকে সবকিছু বুঝিয়ে বললাম।
তারপর জানতে চাইল গ্রামের নাম ও ইউনিয়নের নাম। বলল এই গ্রামের নামেই তো আপনাদের ইউনিয়ন?
আমি বললাম হ্যাঁ আর মনে মনে বিরক্ত হচ্ছিলাম। উনি আমাকে এসব প্রশ্ন কেন করছেন ভেবে। পরে বললো, আমি আপনাদের গ্রামে গিয়েছিলাম।
এখনতো স্বভাবতই বলতে হয়, তাই নাকি? কিন্তু কেন?
তিনি বললেন, আপনাদের যে বর্তমান চেয়ারম্যান (আমি বললাম আব্দুল মোমেন) তিনি আমার ভাতিজি জামাই।
আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার বাড়ি দেশের বাড়ি কোথায়?
তিনি বললেন, মাগুরা। আরো বললেন, আমার ছোট ভাই আর আপনাদের চেয়ারম্যান একই সাথে ইসলামী ইউনিতে পড়তো। সেখান থেকে বন্ধুত্ব। তারপর যখন আপনাদের চেয়্যারম্যান বিয়ে করবে বলে আমার ছোট ভাইয়ের সাথে আলাপ করেন, তখন আমার ছোট ভাই ভাতিজির কথা বলেন। তারপর দেখা-দেখি আর বিয়ে।
আমি বললাম তাহলে তো সম্পর্কে আপনি আমার তালুই সাহেব হন। তারপর দুজনেই হাসি। পরে উনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এসে পড়লাম সিকিউরিটি অফিসারদের কাছে, যারা সবাই ফকির/ফকিন্নির পুত/মাইয়া। সিকিউরিটি আমার ল্যাপটপ আর হাতের ব্যাগ স্ক্যানিং এ দিলেন। সাথে সাথে ল্যাপটপ/ মোবাইল আর মানিব্যাগ বের করে দিতে বললেন। দিলাম, ভাবলাম মানিব্যাগ ও মনে হয় সিকিউরিটি চেকিং এর মধ্যে পড়ে। উনি (ফকিন্নির পুলা) মানিব্যাগ হাতে নিয়ে বাকিগুলি ছেড়ে দিলেন। বলতেছেন, মানিব্যাগে ডলার আছে, ডলার, দেশী টাকা কত আছে। যা আছে আমাদের চা-টা খাওনের জন্য দিয়ে যান। এইবার আমার মাথায় ক্যাচ করেছে হালা, ফকিন্নির পুতে তো মানিব্যাগ নিছে ডলার বা টাকা নেয়ার জন্য। ততক্ষনে ফকিন্নির পুতে ডলার গুলি দেখে মানিব্যাগেই রেখে দিয়েছে আর বাংলাদেশী চকচকে নতুন টাকাগুলি বের করে গুনে একহাতে টাকা রেখে অন্য হাতে মানিব্যাগ আমাকে ফেরত দিচ্ছে। আমি মানিব্যাগটা হাতে নিয়ে অন্য হাতে খামচি মেরে টাকাগুলি ওই ফকিন্নির পুতের কাছ থেকে নিয়ে আসি। এরই ফাকেঁ দুই-তিন জন মিলে আমাকে বোঝানো শুরু করছে।
আপনি দেশী টাকা নিয়ে কি করবেন ওখানে? আমাদের দিয়ে যান আমরা সবাই চা-টা খাবনে!!!
আমি বলি কি, "টাকা কামাইতে কষ্ট লাগে। সারাদিন কাম করি, তারপর টাকা দেয়। আপনাদের মতো খাড়ায়া থাইক্যা টাকা পাই না? পাইলে দিতাম। বাসায় যান, ভাবী খুব সুন্দর চা বানায়? ভাবীর হাতের চা খান গিয়ে।
এতোক্ষন একজন অফিসার আমাকে লক্ষ্য করছিলেন, তিনি ছুটে এসে বললেন, ওই আপনি বিদেশে কি করেন?
আমি জবাব দিলাম, 'দৈনিক কামলা দেই। কমার্শিয়াল অফিসার"।
তারপর বললেন আপনি যে হাতে করে ব্যাগ নিচ্ছেন, সেটাতে কি আছে? সেটা নেয়া যাবে না।
আমি বললাম, সেটাতে কষানো গরুর মাংস আছে। খাবেন, বের করে দিচ্ছি।
উনি বলেন, না খাবো না। আপনি ওটা নিতে পারবেন না।
চেকিং এর এপাশে চলে এসেছি। এসে দেখি এক মহিলা অফিসার আমার ল্যাপটপের ব্যাগ খুলে সব বের করেছে। আন্ডারওয়্যার, স্যান্ডো গেণ্জি, একটা পেনড্রাইভ, ল্যাপটপের পাওয়ার ক্যাবল, লুঙ্গি, একটু শুকনো খাবার। এবার উনি আমাকে বোঝাচ্ছেন-
আপনারা তো টাকা কামাই করতেই যাচ্ছেন। এই দেশী টাকা তো আর কোন কাজে লাগবে না, শুধু শুধু সেখানে থেকে নষ্ট হবে। হয়তো দেখবেন একদিন মানিব্যাগ থেকে কোথাও হারিয়ে ফেলেছেন। তারচেয়ে আমাদের দিয়ে যান।
আমি বললাম, ওই টাকার নোট গুলিতে যে আমি বাংলাদেশ দেখি। দেশের কথা মনে হলে ওই নোটগুলিতে হাত দেই, আমি আমার দেশকে আমার আবেগকে তো আপনার হাতে দিয়ে দিতে পারি না।
এইবার তিনি রাগতস্বরে বললেন, ঠিকাছে আপনি যান। আমি আমার জিনিসগুলি ব্যাগে ভরতে ভরতে আর একজন বয়স্ক অফিসার আসলো, বললো এইবারের মতো আপনাকে গরুর মাংস নিয়ে যেতে দিলাম। পরবর্তীতে আর আনবেন না। আমি বললাম, আমার বুকিং বেশি হয়েছে বলে এভাবে নিয়ে আসতে হয়েছে। না হলে আমি আনতাম নাকি। এসব আমারও না। আমার এক কাজিনের, তার মা দিয়ে দিয়েছে।
তারপর চলে আসি। আমার পিছনের যাত্রী ২০০ টাকা দিয়ে ব্যাগ ছাড়িয়ে নিয়ে এসে বলে ভাই আপনি দেখাইলেন। এতোক্ষন এদের সাথে ঝগড়া করলেন! আপনি চলে আসলে সেই অফিসার কি বলেছে জানেন? বলেছে, বাংগালিকে যতো বেশি সুযোগ দেই, ততোই মাথায় চড়তে চায়। আমি উনাকে বলি তাই নাকি? আসলে এটা ঠিক না। আমরাই এইসব ফকিন্নির পুতেরে সুযোগ দিয়া যাইতেছি বছরের পর বছর।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৩০
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×