লাভ নাই বাহে, কোনহ লাভ নাই....
যতই লেখালেখি করে যাও বাহে , যতই লেখে যাও....
কেহ আসিবে নাই হামার দুখত..
মেম্বর চেয়ারম্যান আইসে
হাউস জাগা কন্ঠে আবেগ চড়ায়, বাহাবা কুড়ায়..
হামরা ওর কথা বিশ্বাস করি না বাহে..
জীবন কি এই তিস্তা জানে আর হামরা জানি.....
হামরা জানি এই তিস্তার পাড়ত কেমতে কত জীবন ভাসি চলে ...
ছিপছিপে গড়নের সমিরন বেওয়া বিড়বিড় করে...
একনিশ্বাসে...
তার প্রতিটি আক্ষেপসূচক শব্দের জোরে..
আমার সকল ভবিতব্য শব্দের মালা ছিঁড়ে যায়..
আমি ভাবি... নিমগ্ন হয়ে মাটির মানুষের খুব কাছ থেকে
ওসব অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত অষ্টক ষষ্টক বিলাসিতায়
কবি মাল্যদান, পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান..
কি লাভ হল..
ওদের জীবন কেউ তো আঁকিনি...
সমিরন বেওয়ার আক্ষেপ..
গত বানত হামার সব শেষ বাহে..
গাভীন গরুডা একেলা বুড়ামানুষ টানিবার পারু নাই...
চোক্ষের সামনত বানত ভাসি গেল..
বলেই হু হু করে কেঁদে ফেলে ....
আমি বিস্তৃত তিস্তার ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা
আকাশে খুঁজি আকাশ দেবতা..
নেই.. নেই...
কেউ নেই ওদের...
আমার বিশ্বাস..
নদী শিকস্তি নদী পয়স্তিদের
চোখের জল তিস্তার জলে মিশে..
আরো দুর্বার হয়ে ওঠে..
প্রতিবছর বর্ষায় হয় আরো হিংস্র..
গিলে নিতে আরো আরো গৃহস্থালি; বাস্তুভিটার শেষটুকু মাটি...
ফুঁসে ওঠে সমুদ্র দানব, এল নিনো লা নিনো..
হ্যারিকেন টর্নেডো সাইক্লোন...
এরপর রংপুর শহরের কোন এক ঝুপড়ীতে
ওদের জীবন প্রদীপ টিমটিম জ্বলে..
দু একটা ছাগী ছানা ওদের শেষলগ্ন সঙ্গী ও সম্বল..
তিস্তাপাড়ের সমিরন বেওয়াদের সংগ্রামী জীবন,
এই নাগরিক বুকের মাঝে শুধুই রক্তক্ষরণ..
অষ্টপ্রহর ধরে ওদের তেল নুন লকড়ির খোঁজ..
আর এদিকে নগরে আমরা পাতি হৃদয়ের বনভোজ..
নিজেকে হীন হীন মনে হয়..
হাতের শেষ কম্বলটি তার হাতে গুঁজে সরে পড়ি..
নিজের অপারগতায় নিজে আরো সংকুচিত হই...
এই শীতে শত শত সমিরনের হাতে একটি দুটি কম্বল প্রয়োজন...
কেননা ওদের ঝুপড়ি থেকে আজো ভেসে আসে আর্তের খুকখুক...
আছেন কি কেউ?
শীত আর শৈত্যপ্রবাহের দিনে ওদের ঝুপড়ির ওম বাড়াবেন!
ছবিঃ অন্তর্জাল
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৫৭