somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মোজাম ভাইয়ের আবহা ভ্রমণ-শেষ পর্ব (আরব ডায়েরি-৯৩)

৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের পর্ব

ক্ষিদে পেয়ে গিয়েছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম বাহিরে খাব। কিন্তু রেস্টুরেন্টের খাবার সারা সৌদিতে একইরকম- কোন বৈচিত্র নেই। তাই শেষ পর্যন্ত বাসাতেই লাঞ্চ করার কথা ভাবি। শাকিলাও তাই চাচ্ছিল। আমরা চা শেষ করে বাসায় ফিরে আসি। শাকিলাও এরই মাঝে কলেজ থেকে ফিরে আসে।

একসাথে লাঞ্চ সেরে আমরা তড়িঘড়ি করে আল সুদা’র পথে রওনা দেই। আল সুদা হচ্ছে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ চূড়া।১০,৮৪৮ ফিট উচ্চতার আল সুদা সৌদি আরবের সবচেয়ে ঠান্ডা স্থানও বটে। চারিদিকে সবুজের সমারোহ, চমৎকার আবহাওয়া আর নয়নজুড়ানো সৌন্দর্যের কারনে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক এখানে বেড়াতে আসে।

আল সুদায় বেশ কয়েকটি স্পট আছে যেখানে লোকাল সৌদিদের দেখতে পাওয়া যায়। তারা সেখানে নিজেদের উৎপন্ন মধু বিক্রি করে থাকে। কিছু কিছু জায়গা বণ্যভাবেই গুছিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে মানুষজন সেখানে রান্না করে খেতে পারে, একান্ত সময় কাটাতে পারে।
আল সুদা পৌছতে ৩০ মিনিটের মতো লাগলো। গাড়ী পার্ক করার সাথে সাথে কোথা থেকে এক বেবুন আমাদের গাড়ীর বনেটের উপর এসে বসল। সৌদিরা এখানে গাড়ী থামিয়ে বেবুনদের খাবার দেয়। কিন্তু আমরাতো খাবার নিয়ে আসিনি। বেবুনটির চেহারা দেখে মায়া লাগল। আশেপাশে আরো কিছু বেবুনকে ঘুরে বেড়াতে দেখলাম। আমরা খুব সাবধানে নেমে কিছু ছবি তুলেই অন্য আরেকটি জায়গায় চলে আসলাম।




খাবারের আশায়

এখান থেকে রিজাল আলমা যাবার সর্পিল রাস্তাটি দেখা যাচ্ছিল। কয়েকজন সৌদি বেদু তাদের মধু বিক্রি করছে। মধু আর আসল নেই, এখানেও ভেজাল। এরাও চালাক হয়ে গেছে। চিনি গুলিয়ে মধু বানায় আর বেশী দামে বিক্রি করে নতুনদেরকে বোকা বানায়। আমাদেরকে দেখেই সবাই মধু কেনার জন্য ডাকাডাকি করতে লাগল।


মধু বিক্রয়রত সৌদি লোকাল


রিজাল আলমা যাবার সর্পিল রাস্তা

মোজাম ভাই এক বেদু’র সাথে কথা বলল। তার সাথে ছবি তুলল, তার মধুও চেখে দেখল। এখনতো মধু কিনতেই হবে। তাদের সাথে কোমড়ে ঝোলানো ছোরা থাকে। বিপদ! উচ্চ মূল্যে এই ভেজাল মধু কেইবা কিনতে চায়। মানে মানে করে কেটে পড়লাম।


মোজাম ভাই এর পাল্লায় পড়েছিল

আল সুদা’র পাহাড়্গুলো মাঝে মাঝেই মেঘে ঢেকে যায়। জুনিপারের সারিগুলো প্রায়ই ভৌতিক মনে হয়। কিন্তু দুপুরের এই কটকটে রোদে মেঘে ভেজার আশা বাদই দিতে হল। আল সুদা’য় আরো কিছুক্ষণ থেকে আমার ভার্সিটির পথ ধরি। এক জায়গায় রাস্তার ধারে এক বাংলাদেশি সমুচা ও চা বিক্রি করে। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারনে তার স্বাদ মোজাম ভাইকে দিতে পারলাম না। ভার্সিটি এসে কিছুক্ষণ থেকে বাসায় রওনা হই।


জুনিপারের সারি

আজ ছিল মঙ্গলবার। আবহার প্রাণকেন্দ্রে সুক তালাতার বাজার বসেছে। এমন কোন জিনিস নাই এখানে পাওয়া যায় না। মশলা, তরি তরকারি, হাড়ি পাতিল, খরগোশ, হাস, মুরগী- সবই পাওয়া যায়। ইচ্ছে ছিল মোজাম ভাইকে ঘুরিয়ে দেখাব। কিন্তু সময়ের কারনে তা আর হয়ে উঠেনি।

মাগরিবের নামাজ শেষে মোজাম ভাইকে এয়ারপোর্ট দিয়ে আসলাম। তবে যাবার আগে- তিনি আরেকবার সময় নিয়ে আবহা বেড়াতে আসার কথা বলে গেলেন। সেই অপেক্ষায় আছি।

(শেষ)
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:২৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×