পিরোজপুরে পাড়েরহাট বন্দরের রাজাকার কমান্ডার আবদুল মবিন হাওলাদারের ছেলে কাদের উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে ৭১ এ তার বাবার কর্মকাণ্ডের বিবরণ দেয়। সে বলে, 'একাত্তরে আমার বাবা এমন কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ নাই, যা করে নাই। আমার মা ও আমরা তাকে ঘৃণা করি। মুক্তিযুদ্ধের সময় সে হত্যা, নারী ধর্ষণ, লুণ্ঠন করেছে। অনেক মা-বোনকে পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছে। মানুষের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। যুদ্ধের পরও গর্ব করে সে এ কথা এলাকার অনেককে বলেছে। সাঈদী ছিল আমার বাবার দোসর।' কালের কন্ঠ
পাড়েরহাট বন্দরের রাজলক্ষী কলেজে ১৯৭১ ছিল রাজাকারদের ক্যাম্প। এই ক্যাম্পেই অবস্থান করে তদন্ত শুরু করে দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল টিম। এসময় এলাকাবাসী তাদের জানায়, ১৯৭১ সালে পুরো পাড়েরহাট বন্দর জুড়েই চলে দানবীয় তাণ্ডব। বন্দরে হিন্দুরের ঘর বাড়িতে অগ্নি সংযোগ, মালামাল লুট আর এলাকার হিন্দু নারীদের ধরে নিয়ে গণধর্ষণের মত কাজ করে এ এলাকার রাজাকারেরা।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী রুহুল আমিন হাওলাদার (৬০) জানান, ৭১ সালে পাড়েরহাট বন্দরের ব্যবসায়ী মদন সাহার ঘর ভেঙ্গে সাঈদী তার শশুরের বাড়িতে নিয়ে যায়। এলাকার লুটের মাল নিয়ে পাঁচ রাজাকার গড়ে তোলে পাঁচ তহবিল। রাজাকারদের প্রত্যক্ষ মদদে যাদের হত্যা করা হয় সেই ভয়াল স্মৃতি ধারণ করে আজও বেঁচে আছেন অনেক স্বজন| তাদের চোখের সামনেই প্রিয়জনদের ধরে নিয়ে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। এসব হত্যাকাণ্ডের সাথে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সম্পৃক্ততার তথ্য দিয়েছেন অনেকেই।
৭১-এ পাক হানাদারদের হাতে নিহত হরলাল মালাকারের স্ত্রী ঊষা রানী মালাকার জানান, যুদ্ধের সময় জ্যৈষ্ঠ মাসে রাজ্জাক ও দেলোয়ারসহ আরো ২০/২৫ জন আমার স্বামীসহ ১১ জনকে ধরে নিয়ে পিরোজপুরে বলেশ্বর নদের পাড়ে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে। স্বামীর লাশও খুঁজে পাই নাই।
ব্যবসায়ী বাসুদেব বনিক জানান, রাজাকারেরা ৭১ সালে ইন্দুরকানী বাজার থেকে আমার বড় চাচাকে ধরে এনে পিরোজপুর পাক সেনাদের ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা করে। পাড়েরহাট বন্দরে স্বাধীনতার স্বপক্ষের প্রায় ১৬ জনকে ধরে নিয়ে পাক হানাদারদের হাতে তুলে দেয় স্থানীয় রাজাকারেরা।
শির্ষ নিউজ
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৩১