স্টার লাইন নামক বাসে চেপে ফেনী থেকে ঢাকায় যাচ্ছি……
ময়নামতী ক্যান্টনমেন্ট এর একটু আগে বাস থামালো দুপুরের খাবারের জন্য।
বাসে এক পত্রিকা বিক্রেতা উঠলো কিন্ত একটু ভিন্য টাইপের।
দেখলাম ছেলেটা প্রতিবন্ধি।
…তার পত্রিকা বিক্রয়ের কথাগুলো এমন,
"ভাই আমি প্রতিবন্ধি কিন্তু ভিক্ষা করিনা। আমার কাছ থেকে পত্রিকা কিনে আমাকে সাহায্য করুন। কিছু খাবো, সকাল থেকে কিছুই খাই নি। ভাই আমি ভিক্ষা করিনা…"
. . .ভাবলাম আজ নাহয় নেটে নিউজ গুলো নাই পড়ি, একটা পত্রিকা কিনে পড়ি। সেই সাথে ছেলেটাকেও সাহায্য করা হবে। তাই ১০ টাকা দিয়ে একটা পত্রিকা কিনে নিলাম।
কিন্তু আজ যে শোক দিবস আর জন্মদিন, পত্রিকা কেনার সময় সেটা মাথায় ছিলোনা।
মনে থাকলে পত্রিকা না নিয়ে ছেলেটাকে ১০ টা টাকা হাতে ধরিয়ে দিতাম।
. . যাইহোক, পত্রিকা কিনে পড়তে গিয়ে দেখি ২০ পৃষ্ঠার পত্রিকায় ১৮ পৃষ্ঠা শেখ মুজিব এর দখলে, আর বাকি ২ পৃষ্ঠার মাঝে একটা পৃষ্ঠায় জন্মদিনের খবর আরেকটা পৃষ্ঠায় খেলার খবর।
...অনেক খুজেছি পিনাক-৬ নামক লঞ্চটির খবর। ডুবে যাওয়া মানুষ গুলোর খবর, কিন্তু পাইনি।
কারন এগুলো তো শোকের কাতারে পড়ে না।
…অনেক খুজেছি বৃষ্টির কারনে শহরে হাটু পরিমান পানি উঠে মানুষের দুর্ভোগের খবর, কিন্তু পাইনি।
কারন গনভবনে তো আর পানি উঠেনা…
...হায়রে মিডিয়া, দিন আসে দিন যায়,
প্রতিদিন ঘটনা বদলায়,
আমরাও অতীত ভুলে যাই…
কি আর করার, অবশেষে খেলার পাতাটা পড়ে পত্রিকাটা রেখে দিলাম আর ভাবলাম, পত্রিকাটা কিনে কঠিন এক লস খাইলাম, তাই আবার নেটে চলে এলাম।
…যে যাই বলুক, আজ আমার শোক দিবস আর আনন্দ দিবস সেই ছেলেটাকেই ঘিরে যার কাছ থেকে পত্রিকাটা কিনেছি।
শোকের কারন ছেলেটা প্রতিবন্ধি, কোন কাজ করতে পারেনা।
আর আনন্দের কারন, প্রতিবিন্ধি হয়েও ছেলেটা ভিক্ষা করেনা, কাজ করে খায়।