somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেমের প্রথম অলিখিত সংবিধান

০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজ ৭ই মার্চ, ছেলেটির পবিত্রতম ভালোবাসার এক বছর পূর্তি কিন্তু তার ভালোবাসার মানুষটি আর তার নেই...
প্রতিদিন আফিসের ক্লান্তি শেষে এখন সে রাস্তায় একা হাটে... শহরের অলিগলির ল্যাম্পপোস্ট গুলো তার এখন প্রেমের একমাত্র সম্ভল...
.
মানিক মিয়া এভিনিউ কিংবা সংসদ ভবনের সামনে সেই কদম ফুল গাছটা আর ফুসকাওয়ালা এখনো তাদের মত দাড়িয়ে আছে...
বেশ কয়েকটি সন্ধ্যায় সংসদ ভবনের সামনে বসে ছেলেটি মেয়েটির হাত ধরে ঘোষনা দিত,
"তোমার আর আমার বিয়ে হবে এই সংসদ ভবনে... ভাড়া নেয়া হবে পুরো এরিয়া... থাকবেনা কোন বিরোধী দলীয় সড়যন্ত্র কিংবা কোন ওয়াক আউট... সবাই সেদিন আমাদের বিয়ের দাওয়াত খাবে... আমি আর তুমি সবার পাশ কাটিয়ে এসে বসে থাকবো সবুজ ঘেরা বিশাল মাঠে... কিছুদূর পাশে পা মেলে দিয়ে শুয়ে থাকবে একটা লাল রঙা কুকুর, তা দেখে তুমি আমার বাহুতে আলতো ঘুসি দিয়ে বলবে, "কুত্তা!"
.
এসব ভাবতে ভাবতে রাস্তায় শুয়ে থাকা কোন এক কুকুরের কোমল লেজে পাড়া দিয়ে হুঁশ ফিরলো ছেলেটির...

আবারও মনে পড়লো আজ ৭ই মার্চ...
...গত বছর ঠিক এই দিনেই সন্ধের নিভু নিভু আলোতে মেয়েটার দেখা করার তুমুল ইচ্ছা আর পাগলামোর কাছে হার মেনেছিলো ছেলেটির লুকিয়ে থাকার স্বভাব... ভেবেছিলো এত ভালো তাকে না দেখেই একটা মেয়ে কিভাবে বাসতে পারে!! শংকীত ছিল ছেলেটি...

কিন্তু ছেলেটির সব শংকা আশংকা উড়ে গেল মেয়েটার কাজল মোড়ানো দুটি চোখের ভাষা দেখে... নিজের অজান্তেই একটা চকলেটে প্রেম নিবেদন হলেও শংকাটা যেন কাটছেই না ছেলেটির....
.
প্রেম ভালোবাসায় জড়ানোর আগে ভেবে চিনতে সিদ্ধান্তে পৌছা উচিৎ বলেই ভালোলাগাটাকে ভালোবাসায় নিতে আরো কিছুদিন সময় বাড়িয়ে নিজের গুরুদ্বায়িত্ব পালন করলো ছেলেটি... ভাবার সময় দিল মেয়েটিকে; কিন্তু ভাবনার সমীকরন শুন্য... ভাবতে ভাবতে ভাবলেশহীন ছেলেটি সব শংকা কে আকাঙ্ক্ষা বানিয়ে মুখোমুখি হয় মেয়েটির...
.
হ্যাঁ
সেদিন ছিল ৭ই মার্চ... অগ্নীঝরা মার্চ ফুল হয়ে ঝরেছিল সেদিন দুজনের চারপাশে... কোন এক অভাগার বাশির সূরে সেদিন দুজনেই মজেছিল প্রেমময় সন্ধ্যায়... ছেলেটির কাঁধজুড়ে বয়ে গিয়েছিল মেয়েটির উষ্ণ নিঃশ্বাস ... রচিত হচ্ছিলো দুজনের প্রেমের অলিখিত সংবিধান...
.

ধুলোমাখা পথ ধরে হেটে চলেছে ছেলেটি, কখনও কল্পনা নিয়ে কিংবা কখনও বাস্তবতা নিয়ে গন্তব্য থেকে বহু দূরে...
.
পরনে ট্রাউজার এর বাম পকেট টা ছোট্ট ছেঁড়া, সিগারেট টা বাম পকেটেই রেখেছিল সে... হয়ত পড়ে গেছে ফেলে আসা পথে যেমনটা চলে গিয়েছিলো মেয়েটি ছোট্ট একটা কারন দেখিয়ে...
.
হাটতে হাটতে ক্লান্ত ছেলেটি... বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নামার আর বেশি বাকি নেই, গন্তব্যে পৌছাতে হবে, অনেক দূর হাটতে হবে তাকে... পকেটে থাকা বাকী টাকাগুলো সেদিনের মত আজও সাপুড়ে নিয়ে গেছে সাপের ভয় দেখিয়ে, কিন্তু ছেলেটি ভয় পায়নি আজ... কারন আজ ভয় পেলে যে তার পাশে কেউ সাহস দেয়ার জন্য থাকবে না সেদিনের মত...
সেদিনের কাজল মোড়ানো চোখের ভাষা মিথ্যে হলেও আজ সাপের চোখ গুলো সেদিনের মতই স্বচ্ছ ছিল, কোন মিথ্যে ছিলো না... তাইতো ছেলেটি আজ হাসিমুখে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষনা করলো...
.
হেটেই চলেছে ছেলেটি, খুব দ্রুত হাটছে সে... কেননা আজ যে ৭ই মার্চ!!
সংকল্প করেছে ছেলেটি,
হোক তার ভালোবাসা নিষ্প্রাণ,
তবুও আজ সারাটা সন্ধ্যা বসে থাকবে সে, যেখানে রচিত হয়েছিল তাদের প্রেমের প্রথম অলিখিত সংবিধান..

.
গল্পঃ প্রেমের প্রথম অলিখিত সংবিধান
লিখাঃ জে. আর শুভ
০৭/০৩/২০১৮ খ্রীঃ
.
ফেসবুকে আমিঃ http://www.facebook.com/zr.shuvo
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১:৪৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×