somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদ্রিতাকে কি গিফট দেয়া যায়?

২২ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ফোনাআলাপ:
-"দেখো, আমি কিন্তু আগেই বলছি, আমরা মধ্যবিত্ত পরিবার। তোমাকে ভালো কিছু গিফট করা আমার পক্ষে সম্ভব না। আর তাছাড়া আমরা কলেজে পড়ি!"
-"এই কথাটা কি তোমার ডেইলি বলা লাগে? আমি কি বলছি তোমাকে গিফট দিতে? তুমি আমার সাথে এমন করো কেন?"

(আসলেও! আমি একটা গর্দভ, আমি বিষয়টা জানি। প্রেম জিনিসটাই আমার জন্য না, সেটাও জানি। কিন্তু কেউ বোধহয় ইচ্ছে করে প্রেমে পড়ে না। আমিও পড়িনি। আমাকে প্রায় ল্যাং মেরে ভালোবাসার গর্তে ফেলা হয়েছে)

-"আচ্ছা বাবা, বুজলাম। কিন্তু আজকে আসতে পারবো না।"
-"কেন? সত্যি পাঁচ মিনিটের বেশি লাগবে না..."
-"নেক্সট রোববার একটা পরীক্ষা আছে, আসতে পারবো না..."
-"তাহলে, হিমেলকে দিয়ে পাঠিয়ে দিবো?" (আদ্রিতার কাজিন)
-"কি??"
-"সেটা দেখো। এখন রাখি।"

প্রেম করি, বেশি দেখা করি না। আজব হলেও হতে পারে, আমি এমনই, কিছুই করার নাই। আমি আগেই বলছি। ইংলিশ কোচিং এর বাইরেও একশ বার বলছি, এখনও বলি। আমরা মধ্যবিত্ত পরিবার। আমাকে সামনে কিছু করা লাগবে। একদিন আদ্রিতা কি বলছে শুনবেন,
'আমাকে বিয়ে করে ঘরজামাই থাকবা, টাকা পয়সার চিন্তা করো কেন?'
দুই দিন কথা বলি নাই। কিন্তু কান্নাকাটি, ফোন দিয়ে জ্বালানো, আর ভাল্লাগে না।

বাসার নিচে এসে হিমেল ছোকরাটা ম্যাসেজ দিচ্ছে। নিচে নামলাম। ছেলেটা আমাকে পছন্দ করেনা। আদ্রিতা ওকে টাকাপয়সা এইটা সেইটা দিয়ে আমার কাছে পাঠায়। আজকেও আরেকটা 'গিফট' পাঠালো। আমি নামার সময় বুক শেলফ থেকে গোর্কির 'মা' বইটা নিয়ে নামলাম।

-পড়ে ফেরত দিতে বলবা।
-পুরান বইতো!?
-তো কি হইসে?
-আচ্ছা, বলবো নে।

হিমেল তার বাবা, কিংবা চাচার কাছে বিচার দিলে, এই মহল্লায় থাকা লাগবে না। কিন্তু জানি, আদ্রিতা ওর মুখ বন্ধ রাখবে।
চকলেট, কলম আর একটা সেন্টের বোতল। আর একটা কাগজের টুকরায় লেখা, একটা ফেসবুক আইডি খুলো না! আমার বান্ধবীরা কথা শোনায়। চিন্তা করেন অবস্থা! কয়দিন পরে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা!!
ফোন দেই, ধরেনা। বুঝতে পেরেছে, আমার মেজাজ গরম।

২.
দিনগুলো খুব মিস করি। এখন আমার আদ্রিতা কোথায়? কতদূরে!
প্যারিস ঢাকা থেকে কতদূরে?
হঠাৎ করেই ওর বাবা ওকে বিয়ে দিয়ে দিলো। আমার কিছুই করার ছিলো না, সত্যি!
আমি ওর সাথে শেষবারের মতো দেখা করার সময়, কাঁদতেও পারি নাই। ওকে আমি কাঁদতে শুনেছি, ফোনে। বাস্তবে মন খারাপ করতে দেখেছি। কিন্তু যখন ও আমাকে জড়িয়ে ধরে রাস্তার মধ্যে কাঁদছিলো;....তখন চারদিকে সব থেমে গেছে, আমার বুকে প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছে, চোখটা হয়তো লাল। আমি শুধু বললাম, "আদ্রিতা, I Love You."
বিকেল মরে যাচ্ছে, আমি শেষবারের মতো বললাম, " দেখো তুমি অনেক ভালো থাকবে।"

আমার ইন্টার পরীক্ষা খারাপ হলো না, প্রথমবর্ষ থেকেই ভালো করে পড়েছি।
পরীক্ষা দিয়েই আমি একটা স্কলারশিপের জন্য অ্যাপ্লাই করলাম। সোজা টরোন্টো।
শুধু আসার আগে হিমেলের বাচ্চাটাকে ইচ্ছে মতো পিঠিয়ে এসেছি।


৩.
বালিশটা উড়ে এসে আমার মাথায় লাগলো।
আদ্রিতার কাজ।
ওর ছেলেমানুষী গেলো না।

-"এইযে ব্লগারমিয়া, সারাদিন কি ব্লগেই পড়ে থাকবেন?"

আমার পিচ্চি মেয়েটা টি শার্ট ধরে টানছে আর বলছে,
-"বাবা, কফি খাবো, কোল্দ কফি" .....ওর সবগুলো দাঁত এখনো উঠেনি, হাহাহা।

বের হতে হবে। আজকে আদ্রিতার জন্মদিন, কি গিফট দেয়া যায় বলুনতো।
আগেতো পুরোনো বই দিয়ে কাজ চালাতাম, এখন?



মো.আশরাফুল আলম খান প্রান্ত/ ঢাকা
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১১:৫১
২৪টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×