somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই দেখেন , রাজাকার জামাতের আসল চেহারা.... #:-S #:-S

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইসলাম ও বাংলাদেশের শত্রু : জামাতে ইসলামী ও ছাত্র শিবির সম্পর্কে জেনে নিন
মহানবীর (দঃ) সতর্কবাণী :

শেষ জমানায় কিছু প্রতারক সৃষ্টি হবে। তারা ধর্মের নামে দুনিয়া শিকার করবে। তারা মানুষের নিকট নিজেদের সাধুতা প্রকাশ ও মানুষকে প্রভাবিত করার জন্য ভেড়ার চামড়ার পোষাক পড়বে (মানুষের কল্যাণকারী সাজবে)। তাদের রসনা হবে চিনির চেয়ে মিষ্টি। কিন্তু তাদের হৃদয় হবে নেকড়ের হৃদয়ের মতো হিংস্র। (তিরমিজী)

মহানবীর (সা.) সঙ্গে নিজামীর তুলনার নিন্দা
Prothom alo নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ১৯-০৩-২০১০

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর তুলনার নিন্দা জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা কল্যাণ সংস্থা। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার নিন্দা জানায় তারা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধর্মকে নিয়ে ব্যবসা করার হীন লক্ষ্যে জামায়াত নিরপরাধ ও নিষ্পাপ মহানবীকে (সা.) যুদ্ধাপরাধসহ অনেক কলঙ্কে কলঙ্কিত নিজামীর সঙ্গে তুলনা করেছে। এটি তীব্রভাবে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। তিনি জামায়াতের রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। গত বুধবার শিবিরের এক আলোচনা সভায় হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিজামীর সঙ্গে তুলনা করে বক্তব্য দেন জামায়াতের নেতা রফিকুল ইসলাম খান ও শফিকুল ইসলাম।

আজ সারা বাংলার মুসলমানের একটাই স্লোগান:-
নবীজী(স),কোরান ও দেশ বিরোধী “জামাত-ইসলামের” ইসলাম আমরা মানি না, মানবো না
আমরা কোরান ও দেশপ্রেমিক নবীজীর(স) ইসলাম মানি ।


১৯৭০ এর পর মাওলানা মওদুদী কেন আর ঢাকায় আসেনি ?

১৯৭০ সালের ১৮ই জানুয়ারী তোলা কিছু ছবি। সত্তরের নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হিসেবে অত্যন্ত জাঁকজমক এবং ধুমধামের সাথে এদিন জামায়াতে ইসলামী পল্টনে ডাকে একটি মহাসমাবেশ। পাকিস্তান থেকে উড়ে আসেন দলটির প্রধান মওলানা মওদুদী সাহেবও। ঝকমকে গালিচা, ইলেক্ট্রিক ফ্যান আর হাজারো ফুলের সমাহারে সে এক দেখার মত মঞ্চ ছিল বটে।


কিন্তু গোল বাঁধলো অন্য জায়গায়। পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের উপর পূর্ণ স্বায়ত্বশাসন দাবী করে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ছয় দফা দাবীকে প্রত্যাখান করে পাকিস্তানপ্রেমী জামায়াতের সভা থেকে যখনই বিবৃতি দেওয়া হয় তখনই উত্তেজিত জনতা শুরু করে হট্টোগল। ক্ষুব্ধ স্বাধীনতাকামী জনতার ইট বৃষ্টির চোটে মওদুদী সাহেব তার ভারী শরীর নিয়ে পড়িমড়ি করে কোনো রকমে দৌঁড়ে পালালেও সেই সৌভাগ্য হয়নি অনেকের। জনতা পাকিস্তানী তাবেদার এই নরপিশাচ ধর্মব্যবসায়ীদের হাতের কাছে পেয়ে ছবির মত এমনই করে গণপিটুনী দেয়। পরবর্তীতে উত্তেজিত জনতা জামায়াতের মঞ্চেও অগ্নিসংযোগ করে। আর মওদুদী সাহেব ধাওয়া খেয়ে সোজা পাকিস্তান। সেই যে গেলেন, ক্রেন দিয়ে টেনেও তাকে আর এদেশে আনতে পারেনি জামায়াতের নেতারা।



উপমহাদেশের উলামায়ে কেরামের দৃষ্টিতে জামায়াতে ইসলামী ও মাওলানা মওদূদী।
Somewhereinblog.net ২১ শে মে, ২০১০ রাত ১০:৫৯ |

-আমরা তো শ্লোগান দেই "আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই", তাহলে সমস্যা কোথায়?
-সমস্যা হলো গোড়াতেই গলদ।
-সেটা কেমন?
-যেমন জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মওদূদী রাজনৈতিক দলের নামে একটা ফিরকা সৃষ্টি করে গিয়েছেন, যার সাথে ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলির বৈসাদৃশ্যতা লক্ষনীয়। যে কারনে ঊপমহাদেশের স্কলারগন জামায়াতে ইসলামীকে সত্যিকার ইসলামী আন্দোলন বলে কখনোই স্বীকৃতি দেননি।
-বৈসাদৃশ্যতাগুলি কি জানতে পারি?
-হাজারো বৈসাদৃশ্যের মধ্যে কয়েকটি এরকম: তারা মনে করে "নবীগন নিষ্পাপ নন", "সাহাবাগন সত্যের মাপকাঠি নন", "ইসলাম কোন ধর্ম নয়, একটি বিপ্লবী মতবাদ মাত্র", "কোরআন তাফসিরের জন্য কোন যোগ্যতার দরকার নেই ", "পূর্ববর্তী আলিমগন কোরআন-হাদিস ঠিকমত বোঝেননি, একমাত্র মাওলানা মওদূদী ছাড়া", "হিকমত অবলম্বনের জন্য শরীয়ত বিসর্জন দেয়া যায়", ইত্যাদি।
-কিন্তু ১৯৪১ সালে জামায়াতে ইসলামী গঠনের সময়তো আবুল হাসান আলী নদভী (রহঃ), মনজুর নোমানী (রহঃ) এদের মত অনেক যুগশ্রেষ্ঠ স্কলার সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
-হ্যা, অবাক হবেন যে, জামায়াতে ইসলামী-ই পৃথিবীতে একমাত্র সংগঠন যার প্রতিষ্ঠাকালীন সকল সদস্যই উক্ত সংগঠন ত্যাগ করেছিলেন। কেন ত্যাগ করেছিলেন তা সহজেই অনুমেয়।
-জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে সমসাময়িক ইসলামী স্কলারদের মত কিরুপ ছিল?
-হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী (রহঃ), হুসাইন আহমাদ মাদানী (রহঃ), শাব্বীর আহমাদ উসমানী (রহঃ), মুফতী শফী (রহঃ), জাকারিয়া (রহঃ), ক্বারী তৈয়ব (রহঃ) সহ সমসাময়িক প্রায় সকল স্কলারই জামায়াতে ইসলামীকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
-আর বর্তমানে?
-বর্তমানের উলামায়ে কিরামতো "জামায়াতে ইসলামী কোন ইসলামী দলই নয়",-এ রায় দিয়েছেন। তাছাড়া দলটি 1971 যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত।
(১৯৭১ এর রাজাকারবাহিনী ২০১৩ সালেও ধ্বংস তান্ডবলীলা চালাচ্ছে):-








(শাহবাগে শান্তিপ্রিয় মুসলীম জনতা):-



সম্মানিত মুসলমান ভাই ও বোনেরা ,

ইহুদি নাসারাদের দালাল মৌদুদী -“জামায়াত ইসলামী ও শিবির” আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স) ও ইসলামের নামে কুতসা রটাচ্ছে , মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ ছড়াচ্ছে ।দেশের সমস্ত হক্কানি আলেম ওলামা ও পীর মাসায়েকগন দীর্ঘদিন ধরে তাদের ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছেন । এদের এখনি প্রতিরোধ করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব । ইসলামের নামে ধান্দাবাজী ব্যবসা বন্ধ করতে ও উগ্র জংগীবাদী ভ্রান্ত মতাবাদ থেকে ইসলামের পবিত্রতা রক্ষা করতে- আসুন এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আন্দোলন গড়ে তুলি ।
এই ফাসেক ভ্রান্ত মৌদুদী - “জামায়াত ইসলামী ও শিবির” নাম ধারন করে সারা দেশের নিরীহ মুসলমানদের ওপর জুলুম অত্যাচার করছে , যেমনটি এরা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ভাইদের নির্মম ভাবে হত্যা করে করেছিল , আমাদের মা-বোনদের ধর্ষন করেছিল । সেইসব সব রাজাকারদের বিরুদ্ধে বিচার চাওয়াতে তারা আজ সারা বাংলাদেশে ধ্বংস তান্ডবলীলা চালাচ্ছে । আমাদের জাতীয় পতাকা ছিড়ে ফেলছে , শহীদ মিনার ভেঙ্গে ফেলছে , চলন্ত গাড়ীতে ভাংচুর করে সাধারন যাত্রীদের হত্যা করছে , অফিস আদালত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে , এমনকি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারামের পেশ ইমামকে লাঞ্চিত করছে – মসজিদের জায়নামাযে আগুন ধরিয়ে মসজিদকে অপবিত্র করছে । কিছুদিন আগে হরতালে তারা কোরানে হাফেয আব্দুর রহমান কেও হত্যা করে । দেশপ্রেমিক শাহাবাগ আন্দোলনকারীরা পবিত্র কোরান থেকে তেলোয়াত করে মহান আল্লাহ তায়ালার নামে “রাজাকার বিরোধী” সমাবেশ শুরু করেন , জামাত-শিবিরের আক্রমনের শিকার শহিদদের নামাজে জানাজায় লক্ষ লক্ষ মুসলীম জনতা অংশ নেন । অথচ তারা নাকী ইসলাম বিরোধী কাজ করছে – তাদের নামে মিথ্যা সব কুতসা ছড়াচ্ছে , যারা নিজেদের ব্যবসায়ীক স্বার্থে সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (স) ও অন্য নবীদের নামে কুতসা রটাতে পারে ও ইসলামের নামে বিকৃত মতবাদ ছরাতে পারে , দেশপ্রেমিকদের হত্যা করতে পারে , মা বোনদের ধর্ষন করতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া কি আমাদের ঈমানী দায়িত্ব নয় ? আমাদের প্রিয় নবীজী (স) উনার সারাটা জীবন- দেশ ও ইসলামের জন্যে উতসর্গ করেছিলেন , আসুন আমরাও ইসলাম ও দেশ কে রক্ষা করতে এদের বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পরি । ঈমানী দায়িত্ব পালন করি ।

মওদুদী জামাত , সি আই এ–এর এজেন্ট
কুরআন শরীফের অনেক আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক প্রথমে ঈমান আনার কথা এবং পরে আমলের কথা বলেছেন। ইসলাম বিদ্বেষী কাফির-মুশরিকরা তাই মুসলমানদের ঈমানী চেতনায় বিভেদ তৈরীর জন্য সদা সক্রিয়। আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ করেনঃ
“তারা পূর্ব থেকেই বিভেদ সৃষ্টির সুযোগ সন্ধানে ছিল এবং আপনার কার্যসমূহ উলট-পালট করে দিচ্ছিল।”
(সূরা তওবা ৪৮)
এক্ষেত্রে ইসলাম বিদ্বেষী কাফির-মুশরিকরা মূলতঃ মুসলমানদের থেকেই এজেন্ট তৈরী করে। যারা মুসলমানদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ইসলামী আক্বীদার মধ্যে ফিৎনা তৈরী করে। আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চরম দুশমন, শয়তানের শিং এবং বৃটিশের দালাল ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী এ ধারার বিশেষ উদাহরণ। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শান ও মানের খেলাফসহ অসংখ্য কুফরী আক্বীদার বিস্তার করেছে সে।
এরপর পাক ভারত উপামহাদেশের এ ধারার অগ্রগামী হয়েছে তথাকথিত জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদী। স্বয়ং আল্লাহ পাক, তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাহাবা কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং আউলিয়া কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম, মোদ্দাকথা ইসলামের সব অনুষঙ্গেই মিথ্যা, কুফরী ও জঘন্য সমালোচলার জাল বিস্তার করেছে এই মওদুদী।
তার সেই অসংখ্য কুফরী আক্বীদার মাত্র ৫টি ক্ষুদ্র প্রমাণ নিম্নরূপঃ
১) আল্লাহ পাক সম্পর্কে কুফরী আক্বীদাঃ “যে ক্ষেত্রে নর-নারীর অবাধ মেলামেশা, সেক্ষেত্রে যেনার কারণে (আল্লাহ পাকের আদেশকৃত) রজম শাস্তি প্রয়োগ করা নিঃসন্দেহে জুলুম।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাফহীমাত, ২য় খন্ড, ২৮১ পৃষ্ঠা)
২) ফেরেশতা সম্পর্কে কুফরী আক্বীদাঃ “ফেরেশতা প্রায় ঐ জিনিস যাকে গ্রীক, ভারত ইত্যাদি দেশের মুশরিকরা দেবী-দেবতা স্থির করেছে।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাজদীদ ও ইহইয়ায়ে দ্বীন, ১০ পৃষ্ঠা)
৩) আম্বিয়া আলাইহিমুছ ছালাত ওয়াস সালাম সম্পর্কে কুফরী আক্বীদাঃ “নবীগণ মা’ছূম নন। প্রত্যক নবী গুনাহ করেছেন।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাফহীমাত, ২য় খন্ড, ৪৩ পৃষ্ঠা)
৪) হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে কুফরী আক্বীদাঃ “মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানবিক দুর্বলতা থেকে মুক্ত ছিলেন না।”(নাঊযুবিল্লাহ)
(তরজমানুস্সুন্নাহ, ৩য় খন্ড, ৩০৫ পৃষ্ঠা)
৫) সাহাবা কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম সম্পর্কে কুফরী আক্বীদাঃ “সাহাবাদিগকে সত্যের মাপকাঠি জানবে না।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(দস্তরে জামাতে ইসলামী, ৭ পৃষ্ঠা)
উল্লেখ্য, সব মুফতী-মাওলানাদের ইজমা তথা ঐক্যমতে উপরোক্ত আক্বীদাধারী ব্যক্তি মুসলমান নয় বরং মুরতাদ। আরো উল্লেখ্য যে, মওদুদী’র মৃত্যুর পর শিয়া সম্প্রদায়ের একটি মুখপত্রে বলা হয়েছিল, “মরহুম (মওদুদী) তার ভিন্ন আঙ্গিকে শিয়া মতবাদ প্রচলনেও সহায়তা করেছেন।”
(সাপ্তাহিক শিয়া, লাহোর, ১৯৭৯ ইং, ৫৭ সংখ্যা ৪০/৪১; খোমেনী ও মওদুদী দু’ভাই, পৃষ্ঠা ১২)
বিষাক্ত বীজ থেকে যেমন সুমিষ্ঠ ফল আশা করা যায় না তেমনি ইসলামী আন্দোলন ইত্যাদি মিষ্টি মিষ্টি কথা বললেও মওদুদী নিজেই যে কত বিষাক্ত বীজ ছিলো তা তার উপরোক্ত কুফরী আক্বীদা থেকেই সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়। তার উপরোক্ত আক্বীদাগুলো মুসলমানদের সাথে তার বিশ্বাসঘাতকতার স্বরূপই উন্মোচন করে। আর আল্লাহ পাক বিশ্বাসঘাতকদের সম্পর্কে পবিত্র কালামে ইরশাদ ফরমান,
“আল্লাহ পাক পছন্দ করেন না তাকে, যে বিশ্বাসঘাতক পাপী হয়।”
(সূরা আন্নিসা ১০৮)

আর আল্লাহ পাক যাকে অপছন্দ করেন তার পরিণাম কি ভয়াবহ হতে পারে তা কল্পনাতীত, দুনিয়াতেও তার লাঞ্ছনা-গঞ্জনার শেষ নেই। মওদুদীকে মানুষের কাছে লাঞ্ছিত করার জন্যই আল্লাহ পাকের কুদরত প্রকাশ পেয়েছে সাবেক সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি’র কর্মকর্তা ভ্যাসিলি মিত্রোখিনের তথ্যের ভিত্তিতে বৃটিশ অধ্যাপক ক্রিষ্টোফার এন্ড্রু’র রচনায়।
“........ ইন্টারনেটে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ভ্যাসিলি নিকোতিচ মিত্রোখিন ১৯২২ সালে মধ্য রাশিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। কাজাখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক মিত্রোখিন ইউক্রেনের মিলিটারী প্রসিকিউটর পদে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালে তৎকালীন রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এমজিবি’র ফরেন ইন্টিলিজেন্স অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। কয়েকটি অপারেশনে ব্যর্থতার পর তাকে কেজিবি’র নবগঠিত আর্কাইভ শাখার প্রধান পদে সরিয়ে নেয়া হয়।
১৯৮৫ সালে অবসর নেন মিত্রোখিন। কিন্তু ১৯৭২ থেকে ১৯৮৪ সালের মধ্যে তার তত্ত্বাবধানেই কেজিবি আর্কাইভের সব গোপন নথিপত্র লুবিয়াংকের কার্যালয় থেকে ইয়াসেনেভোস্থ কেজিবি’র প্রধান কার্যালয়ে সরিয়ে নেয়া হয়। এই সময়ের ভিতর জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তিনি বিভিন্ন গোপন দলীলের কপি সংগ্রহ করেন।
১৯৯২ সালে সদ্য স্বাধীন বাল্টিক রাষ্ট্র লাটভিয়ার মার্কিন দূতাবাসে দলীলের কপিসহ হাযির হন ৭০ বছরের বৃদ্ধ মিত্রোখিন। কিন্তু সিআইএ তার উপর ভরসা রাখতে পারেনি। এরপর তিনি বৃটিশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেন। সে বছরই মিত্রোখিন ও তার পরিবারের সাথে ৬ ট্রাংক ভর্তি ২৫ হাজার পৃষ্ঠার নথিপত্র যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসা হয়।
১৯৯৯ সালে লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয় ভ্যাসিলি মিত্রোখিন ও অধ্যাপক ক্রিষ্টোফার এন্ড্রু’র লেখা ‘দ্য মিত্রোখিন আর্কাইভ’ ‘দ্য এজিবি এন ইউরোপ এন্ড দ্য ওয়েষ্ট’। একই বছর নিউইয়র্ক থেকে ‘দ্য সোর্ড অব দ্য শিল্ড’ ‘দ্য মিত্রোখিন আর্কাইভ এন্ড দ্য সিক্রেট হিষ্ট্রি অব কেজিবি’।
২০০৪ সালের ২৩ জানুয়ারী মিত্রোখিন মারা যান। মৃত্যুর দেড় বছরের মাথায় মিত্রোখিন আর্কাইভ-এর দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হওয়ার মাধ্যমে আবারো আলোচনায় ফিরে এসেছেন তিনি। মিত্রোখিনের এসব তথ্যের ভিত্তিতে লেখা বই নিয়ে প্রথমে তোলপাড় শুরু হয় ভারতে। মিত্রোখিনের সংগ্রহ করা তথ্যমতে, ৭০-এর দশকে ভারতের ইন্দিরা গান্ধী সরকারকে ঘুষ দিয়ে হাতের মুঠোয় নিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। ক্রেমলিন থেকে পাঠানো হতো স্যুটকেস ভর্তি রুবল। বইয়ে এ-ও বলা হয়েছে, অনেক সময়ই প্রধানমন্ত্রী নিজে এই অর্থের উৎস সম্পর্কে জানতেন না। কিন্তু ইন্দিরার দলীয় তহবিলের জন্য অর্থ তোলার প্রধান দায়িত্ব ছিল যার, সেই ললিত নারায়ণ মিশ্র কিন্তু আগাগোড়া জানতেন ওই স্যুটকেসগুলোর আসল ঠিকানা।
ওই অর্থের একটা বড় অংশ ইন্দিরার পুত্র সঞ্জয় গান্ধীর কাছেও পৌছাতো বলে ওই বইয়ের দাবী। বলা হয়েছে, শুধু ১৯৭৫ সালের প্রথমার্ধ্বেই কংগ্রেসের দলীয় তহবিলে কেজিবি’র পাঠানো অর্থের পরিমাণ ছিল ২৫ লাখ। বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনেক আগেই রাশিয়ার নজরে পড়ে গিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।
.......
............ কেজিবি’র নথিপত্রের তথ্য বলে দাবী করে এন্ড্রু’র বই জানাচ্ছে। ১৯৭৩ সালের মধ্যে অন্তত ১০টি ভারতীয় সংবাদপত্র ও ১টি সংবাদ সংস্থাকে নিয়মিত অর্থ যুগিয়েছে তারা।
শুধু ’৭২ সালেই ওই সংবাদপত্রগুলোতে কেজিবি’র ফরমায়েশ অনুযায়ী ৩ হাজার ৭৮৯টি প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। ৭০-এর দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আমেরিকা-চীন ও রাশিয়া-ভারত স্পষ্টত দু’টি শিবিরে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। ’৭১-এর আগষ্টে ভারত রাশিয়ার সাথে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে। তারপর দুই দেশ যৌথ বিবৃতিতে ভিয়েতনাম থেকে মার্কিন সেনা সরানোর দাবী তোলে। ........
....... পাকিস্তালের রাজনীতিতে কেজিবি’র ভূমিকা নিয়ে আছে নানা তথ্য। ১৯৭৭ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভূট্টোকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে জেনারেল জিয়াউল হক্ব। মিত্রোখিনের তথ্য অনুযায়ী এ সময় থেকেই কেজিবি তাদের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নেয় ভূট্টোর ছেলে মুর্তাজাকে। আফগান গোয়েন্দা সংস্থা ‘খাদ’-এর প্রধান মুহম্মদ নাজিবুল্লাহর সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিল মুর্তাজার। ‘খাদ’-এর মাধ্যমেই মুর্তাজার সাথে যোগাযোগ করে কেজিবি। ......
....... ১৯৮২ সালে নাজিবুল্লাহর সহায়তায় জিয়াকে হত্যার দু’টি ষড়যন্ত্র করেন মুর্তাজা। কিন্তু দু’টিই ব্যর্থ হয় পাক জঙ্গীদের সোভিয়েত অস্ত্র ব্যবহারে অনভিজ্ঞতার কারণে। ......."
এরপর এন্ড্রু ও ভ্যাসিলি মিত্রোখিনের লেখা এবং বৃটেন থেকে প্রকাশিত ‘দ্য মিত্রোখিন আর্কাইভ’ নামক ঐ বইয়ের ভলিয়্যুম-২ এ যে বোমা বিস্ফোরণ করা হয়েছে তাহলো “ধর্মীয় দল জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবুল আলা মওদুদী ছিলেন সিআইএ’র এজেন্ট।”
তার এই কুকর্মের আরেকটি সাক্ষী সে সময়কার করাচীর ‘শিহাব’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক এবং জামায়াতের প্রাক্তন আমীর মাওলানা কাউসার নিয়াজী। তিনি জামায়াতে ইসলামী ও মওদুদীর তীব্র সমালোচনা করে এই তথ্য ফাঁস করে দেন যে,
“জামায়াতে ইসলামী আরবের দেশগুলোতে অবস্থিত বিভিন্ন তেল কোম্পানীর কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ সাহায্য লাভ করে আসছে।”
(পূর্ব দেশ, ২৩ ডিসেম্বর ১৯৬৯ ইং)
"সত্যই মওদুদী’র মৃত্যুর পর তখনকার দিনে (অর্থাৎ ১৯৭৯ সালে) ব্যাংকে তার নামে নগদ অর্থ যা গচ্ছিত ছিলো তার পরিমাণ ছিলো ১০,৩৭০০০ (দশ লক্ষ সাইত্রিশ হাজার) টাকা।"
(খোমেনী ও মওদুদী দু’ভাই, পৃষ্ঠা ৪৮)
একই সময় মাওলানা গোলাম গাউস হাজরবী বলেছেন,
“মওদুদী আমেরিকার স্বার্থে কাজ করছে। মওদুদী আমেরিকার এজেন্ট। তার মৃত্যু সেখানেই হবে যাদের স্বার্থে সে কাজ করছে।”
আল্লাহ পাক-এর কি অপার মহিমা! তাই-ই হয়েছে। মিষ্টার মওদুদী ১৯৭৯ সালে আমেরিকায় তার প্রভূদের কোলেই মৃত্যুবরণ করে।




জামায়াতী ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর ভ্রান্ত মতবাদ
Somewhereinblog.net ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:২৮ |


জামায়াতী ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর ভ্রান্ত মতবাদ

মাওলানা মওদুদী বাতিলপন্থী নাকি হকপন্থী? তা আপনি তার লিখা বইয়ের উদ্ধৃতি দিলেই বুঝতে পারবেন।
মওদুদীর কলম বলা যায় হাজ্জাজী কলম। নবী রাসূল থেকে নিয়ে হকপন্থীদের উপর যেমন তার কলম ছিল খরগ স্বরূপ, তেমনি কিছু বাতিলের বিরুদ্ধেও তার কলম ছিল সিদ্ধহস্ত। সে এতটাই বেপরোয়া এবং বেয়াদব ছিল যে, নবীদের সমালোচনা করতেও দ্বিধা করেনি। সাহাবায়ে কিরামতো তার কাছে কিছুই না। আর আল্লাহ তায়ালা এবং ফেরেস্তাদের সম্পর্কেও পোষণ করতো ভ্রান্ত আক্বিদা।

প্রমাণ স্বরূপ কয়েকটি ভ্রান্ত আক্বিদার নজীর নিচে উপস্থাপিত হল

আল্লাহ পাক সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাঃ

“যে ক্ষেত্রে নর-নারীর অবাধ মেলামেশা, সেক্ষেত্রে যেনার কারণে (আল্লাহ পাকের আদেশকৃত) রজম শাস্তি প্রয়োগ করা নিঃসন্দেহে জুলুম।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাফহীমাত, ২য় খণ্ড, ২৮১ পৃষ্ঠা)

ফেরেশতা সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাঃ

“ফেরেশতা প্রায় ঐ জিনিস যাকে গ্রীক, ভারত ইত্যাদি দেশের মুশরিকরা দেবী-দেবতা স্থির করেছে।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাজদীদ ও ইহইয়ায়ে দ্বীন, ১০ পৃষ্ঠা)

নবীদের ক্ষেত্রে মওদূদী সাহেবের বেয়াদবীমূলক মন্তব্য

হাদীসের বিশাল ভান্ডার আমাদের সামনে রয়েছে। কোন একটি হাদীস কোথাও নেই, যাতে নবীদের সমালোচনা করা হয়েছে। কোন নবীর ব্যাপারে তির্যক মন্তব্য বা খাট করা হয়েছে। কিন্তু মওদুদী সাহেব চরম ঐদ্ধতার সাথে বিভিন্ন নবীদের তার বেয়াদবী কলমে করেছেন নোংরাঘাত। নবীদের ব্যাপারে তার বেয়াদবীমূলক বক্তব্যের কয়েকটি উদাহরণ পেশ করছি।

১- আম্বিয়া আলাইহিমুছ ছালাত ওয়াস সালাম সম্পর্কে কুফরী আক্বীদাঃ “নবীগণ মা’ছূম নন। প্রত্যেক নবী গুনাহ করেছেন।” (নাঊযুবিল্লাহ) (তাফহীমাত, ২য় খণ্ড, ৪৩ পৃষ্ঠা)

২-মুসা আঃ এর উদাহরণ ঐ তাড়াহুরাকারী বিজেতার মত, যে নিজের অধীনতদের নির্দেশ দেয়া ছাড়াই মার্চ করতে করতে চলে যায়, আর পিছনে জংলার অগ্নির মত বিজিত এলাকায় বিদ্রোহ ছড়িয়ে যায়। [নাউজুবিল্লাহ] {রেসালায়ে তরজুমানুল কুরআন-২৯/৪-৫}

৩-হযরত দাউদ আঃ তার এলাকার ইসরাইলীদের সাধারণ রেওয়াজের বশবর্তী হয়ে উরিয়ার কাছ থেকে তালাকের আবেদন করেন। [নাউজুবিল্লাহ] {তাফহীমাত-২/৪২, দ্বিতীয় প্রকাশ, (তাফহিমুল কোরআন(উর্দু):৪র্থ খণ্ড, সুরা সাদ, ৩২৭ পৃ. ১ম সংস্করণ, অক্টোবর ১৯৬৬ইং)}

৪-হযরত দাউদ আঃ যে কাজটি করেছিলেন তাতে প্রবৃত্তির কামনার কিছু দখল ছিল, শাসন ক্ষমতার অসংগত ব্যবহারের সাথেও তার কিছু সম্পর্ক ছিল, এবং তা এমন কোন কাজ ছিল যা কোন ন্যায়নিষ্ঠ শাসকের জন্য শোভনীয় ছিল না। [তাফহীমুল কুরআন-১৩/৯৫, আধুনিক প্রকাশনী, ১১শ প্রকাশ}

৫- “হযরহ আদম আলাইহিস সালাম মানবিক দূর্বলতায় আক্রান্ত ছিলেন। তিনি শয়তানী প্রলোভন হতে সৃষ্ট তরিৎ জযবায় আত্মভোলা হয়ে নিজ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেন। ফলে আনুগত্যের উচ্চ শিখর হতে নাফারমানীর অতল গহ্বরে গিয়ে পড়েন।” (তাফহিমুল কোরআন (উর্দু): ৩য় খণ্ড, ১২৩ পৃ.)

৬- “হযরত নূহ আলাইহিস সালাম চিন্তাধারার দিক থেকে দ্বীনের চাহিদা হতে দূরে সরে গিয়েছিলেন। তার মধ্যে জাহিলিয়াতের জযবা স্থান পেয়েছিল।” (তাফহিমুল কোরআন: ২য়খণ্ড, ৩৪৪ পৃ. ৩য় সংস্করণ, ১৯৬৪ ইং)

৭- হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কেঃ “এখানে আর একটি প্রশ্নের উদ্রেক হয় যে, হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম যখন নক্ষত্র দেখে বলেছিলেন, এটা আমার প্রতিপালক এবং চন্দ্র-সূর্য দেখে এগুলোকেও নিজের প্রতিপালক হিসাবে আখ্যা দিয়েছিলেন, তখন সাময়িকভাবে হলেও কি তিনি শিরকে নিপতিত হননি?” (তাফহিমুল কোরআন ১মখণ্ড, ৫৫৮ পৃ.)

৮- “নবী হওয়ার পূর্বে মুসা আলাইহিস সালাম দ্বারা একটি বড় গুনাহ হয়েছিল। তিনি এক ব্যাক্তিকে কতল করেছিলেন।”
(রাসায়েল ও মাসায়েল, ১ম খণ্ড, ৩১ পৃ.)

৯-“হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম সম্পর্কেঃ ‘আমাকে মিসরের রাজকোষের পরিচালক নিয়োগ করুন’- এ কথাটি বলে শুধু অর্থমন্ত্রী হওয়ার জন্যই প্রার্থনা করেননি। কারো কারো ধারনা,বরং তিনি এ বলে ডিকটিটরীই চেয়েছিলেন মৌলিকভাবে। এরই ফলশ্রুতিতে বর্তমান ইতালীর মুসোলিনির যে মর্যাদা তিনিও এর কাছাকাছি মর্যাদার অধিকারী হয়েছিলেন।”
(তাফহীমাত: ২য় খণ্ড, ১২২ পৃ. ৫ম সংস্করন এবং নির্বাচিত রচনাবলী(বাংলা) ২য় খণ্ড, ১৫১ পৃ, আধুনিক প্রকাশনী, ১ম সংস্করন ১৯৯১ইং)

১০- “হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম এর দ্বারা রিসালাতের দায়িত্ব আদায় করার ব্যাপারে কিছু ত্রুটি হয়ে গিয়েছিল। সম্ভবত তিনি ধৈর্যহারা হয়ে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই আপন স্থান ত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন।”
(তাফহিমুল কোরআন: ২য়খণ্ড, সূরা ইউনুস (টিকা দ্রষ্টব্য) ৩য় সংস্করণ, ১৯৬৪ ইং)

১১- “হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম মারা গেছেন একথাও বলা যাবেনা, বরং বুঝতে হবে ব্যাপারটি অস্পষ্ট।”
(তাফহিমুল কোরআন ১মখণ্ড (সুরা নিসা), ৪২১ পৃ.)

১২- হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কেঃ
“আল্লাহ তা’য়ালার নিকট কাতর কন্ঠে এই আবেদন করুন, যে কাজের দায়িত্ব আপনাকে দেওয়া হয়েছিল তা সম্পন্ন করার ব্যাপারে আপনার দ্বারা যে ভুল ত্রুটি হয়েছে কিংবা তাতে যে অসম্পূর্ণতা রয়ে গেছে তা যেন তিনি ক্ষমা করে দেন।”
(তাফহিমুল কোরআন (বাংলা) ১৯শ খণ্ড, ২৮০পৃ. মুদ্রনেঃ ওরিয়েন্টাল প্রেস, ঢাকা ১৯৮০ ইং এবং কোরআনের চারটি মৌলিক পরিভাষা (বাংলা) ১১২পৃ. ৮ম প্রকাশ, আধুনিক প্রকাশনী: জুন ২০০২)

১৩- “মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানবিক দূর্বলতা থেকে মুক্ত ছিলেন না। অর্থাৎ তিনি মানবিক দূর্বলতার বশীভূত হয়ে গুনাহ করেছিলেন।”
(তরজমানুল কোরআন ৮৫ তম সংখ্যা, ২৩০পৃ. ও তরজমানুস্ সুন্নাহ, ৩য় খণ্ড, ৩০৫ পৃষ্ঠা)

১৪- “মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে মনগড়া কথা বলেছেন এবং নিজের কথায় নিজেই সন্দেহ পোষণ করেছেন।”
(তরজমানুল কোরআন, রবিউল আউয়াল সংখ্যা, ১৩৬৫ হিজরী)

১৫- হযরত মুহাম্মদ (সা.) রিসালাতের দায়িত্ব পালনে ত্রুটি করেছেন, তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
(তাফহীমুল কুরআন, সুরায়ে নসর এর তাফসীর)

সাহাবা কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাঃ

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বিদা হল-সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার উর্দ্ধে। তাদের দোষ বর্ণনা করা হারাম ও কবিরা গুনাহ”। (শরহুল আকায়েদ পৃষ্ঠা ৩৫২)
মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন-আমি [সাহাবাদের] তাদের প্রতি সন্তুষ্ট আর তারাও আমার অনুগত। {সূরা তাওবা-১০০}
রাসূল সাঃ সাহাবাদের সম্পর্কে বলেন-আমার সাহাবীরা তারকাতুল্য। তোমরা যারই অনুসরণ করবে হেদায়েত পেয়ে যাবে। {কানুযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০০২, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২৪৩৫৫}

অথচ দেখুন মওদুদী সাহেব কিভাবে সাহাবায়ে কিরামকে আক্রমণ করেছেন নোংরা উক্তিতে-

১) “সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার বাহিরে নন। তাদের দোষ বর্ণনা করা যায়। সাহাবাদের সম্মান করার জন্য যদি ইহা জরুরী মনে করা হয় যে, কোনভাবেই তাদের দোষ বর্ণনা করা যাবে না তবে আমার (মওদুদী) দৃষ্টিতে ইহা সম্মান নয় বরং মূর্তি পূজা। যার মূলোৎপাটন এর লক্ষ্যেই জামাতে ইসলামীর জন্ম”। (তরজুমানুল কুরআন ৩৫শ’ সংখ্যা, পৃষ্ঠা ৩২৭)

২) “সাহাবায়ে কিরাম অনেকে মনগড়া হাদিস বর্ণনা করেছেন।”
(তরজমানুল কোরআন ৩৫ সংখ্যা) ঙ/৩)

৩) “সাহাবাদের মধ্যে জাহেলিয়াতের বদ-স্বভাবের পুনরাবৃত্তি ঘটে।”
(তাফহীমাত ২য় খণ্ড, ১৫৫ পৃষ্ঠা)

৪) “হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু খিলাফতের দায়িত্ব পালনে সম্পুর্ণ অযোগ্য ছিলেন”।
(তাজদীদ ও ইয়াহইয়ায়ে দীন: পৃষ্ঠা ২২,)

৫) “নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওফাতের সময় ব্যাক্তিসম্মানের কু-মনোবৃত্তি হযরত উমর (রঃ)কে পরাভূত করেছিল।
(তরজুমানুল কুরআন, রবিউস সানি ৩৫৭ হিজরী)।

৬) “হযরত উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু এর মাঝে সজন-প্রীতির বদগুণ বিদ্যমান ছিল।
(খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ৯৯)

৭) “হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বীয় খেলাফতকালে এমন কিছু কাজ করেছেন যাকে অন্যায় বলা ছাড়া উপায় নেই। (খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ১৪৬/১৪৩)

৮) “হযরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বার্থবাদী, গনিমতের মাল আত্মসাৎকারী, মিথ্যা সাক্ষ্যগ্রহকারী ও অত্যাচারী ছিলেন”।
(খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ১৭৩)

পবিত্র কুরআন শরীফ সম্পর্কে ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য

কোরআন করিম হেদায়েতের জন্য যথেষ্ট, কিন্তু নাজাত বা মুক্তির জন্য নয়।” (তাফহিমাত, ১ম খণ্ড, ৩১২ পৃষ্ঠা)

আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি যেন আপনি (নবী) মানবজাতিকে অন্ধকারের অতল গহবর থেকে উদ্ধার করে আলোর পথ দেখাতে পারেন। সূরা ইবরাহীম, আয়াতঃ ১।
মুফাসসিরীনে কেরামের ব্যাখ্যানুযায়ী আলোর পথই হচ্ছে মুক্তির পথ। কে সত্যবাদী? মহান মালিক নাকি মাওদূদী সাহেব?

নবীজী সাঃ এর হাদীস সম্পর্কে ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য

“হাদীস কিছু লোক থেকে কিছু লোক পর্যন্ত অর্থাৎ মানুষের মুখে মুখে বর্ণিত হয়ে আসছে। এসবকে বড়জোর সঠিক বলে ধারণা করা যেতে পারে কিন্তু দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করার কোন অবকাশ নেই। আর একথা স্পষ্ট যে, আল্লাহর দীনের যে সকল বিষয় এতো গুরুত্বপূর্ণ যে, এগুলোর দ্বারা ঈমান ও কাফেরের মাঝে পার্থক্য নির্ণীত হয় সেগুলো গুটিকয়েক লোকের বর্ণনার উপর নির্ভর করে মানুষকে বিপদগ্রস্ত করা আল্লাহ তায়ালা কখনো পছন্দ করতে পারেন না।”
(রাসায়েল ও মাসায়েল, ৬৭ পৃষ্ঠা) কী কুখ্যাত মন্তব্য!!! একটু বিবেচনা করুন।

মওদূদী সাহেবের আরো কিছু ভ্রান্ত মতবাদ

ইসলামী রীতিনীতি

“পোশাক পরিচ্ছদ, চাল-চলন, আকৃতি-প্রকৃতি চুল কার্টিং ইত্যাদির ব্যাপারে বিধর্মীদের অনুকরণ করতে কোন দোষ নেই”। (তরজুমানুল কুরআন, ছফর সংখ্যা, ১৩৬৯ হিজরী)

ইসলাম বলে, ইসলামী পোশাক-পরিচ্ছদ-প্রকৃতি চাল-চলন ইত্যাদি গ্রহণ করবে। এসব ব্যাপারে বিধর্মীদের অনুকরণ করবে না। (এমদাদুল মুফতিয়ীন, ২য় খণ্ড, ১৫৪ পৃষ্ঠা)

প্রসঙ্গঃ দাড়ি কাটা ও রাখা

ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-তোমরা গোফ খাট কর আর দাড়ি লম্বা কর। (তিররমিযী শরীফ, হাদিস নং-২৭৬৩)
এছাড়া অন্য হাদিসে এসেছে-পুরুষদের স্বাভাবিক প্রকৃতি হল সে তার দাড়ি লম্বা রাখবে। (আবু দাউদ শরীফ, হাদিস নং-৫৩)
দাড়ি লম্বা করার কথা হয়েছে হাদিসে। কাটার কথা কোথাও নেই। তাই সাহাবায়ে কিরামের আমলই আমাদের একমাত্র ভরসা এই ক্ষেত্রে যে, দাড়ি কতটুকু বড় রাখতে হবে? মুসান্নাফে ইবনে শাইবাতে এসেছে-হযরত ইবনে ওমর রা. এর আমল ছিল-তিনি দাড়ি এক মুষ্টি পরিমাণ রাখতেন। সুতরাং দাড়ি এক মুষ্টি পরিমাণ রাখা ওয়াজিব। এর চে’ কম দাড়ি রাখা আর চেছে ফেলার মাঝে কোন পার্থক্য নাই। যেমন জোহরের ফরজ নামায চার রাকাত। দুই রাকাত সারা জীবন পড়লেও যেমন জোহর কোনদিনও আদায় হবেনা। তেমনি এক মুষ্টির কম দাড়ি রাখলে তা কোনদিনও দাড়ি রাখা বলে সাব্যস্ত হবেনা।
অথচ মওদুদী সাহেবের আক্বিদা দেখুন কী বলে?

“দাড়ি কাটা ছাঁটা জায়িয। কেটে ছেঁটে এক মুষ্টির কম হলেও ক্ষতি নেই। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে পরিমাণ দাড়ি রেখেছেন সে পরিমাণ দাড়ি রাখাকে সুন্নত বলা এবং এর অনুসরণে জোর দেয়া আমার মতে মারাত্মক অন্যায়”। (রাছায়েল মাছায়েল, ১ম খণ্ড, ২৪৭ পৃষ্ঠা)

প্রসঙ্গঃ সুন্নতে রাসূল

“হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদত, আখলাককে সুন্নত বলা এবং তা অনুসরণে জোর দেয়া আমার মতে সাংঘাতিক ধরনের বিদয়াত ও মারাত্মক ধর্ম বিকৃতি।
(রাছায়েল মাছায়েল, ২৪৮ পৃষ্ঠা)

ইসলাম বলে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদত,আখলাক ও স্বভাব-চরিত্র আমাদের অনুকরণের জন্য উত্তম নমুনা বা সুন্নত। মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-তোমাদের জন্য নবীজীর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব, আয়াতঃ ২১, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৫৪৪}

প্রসঙ্গঃ দ্বীনের আসল উদ্দেশ্য

“দ্বীনের আসল মকছুদ হলো ইসলামী হুকুমত। নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি সমস্ত ইবাদত হলো উক্ত মকছুদ অর্জনের মাধ্যম”।
(আকাবেরে উম্মত কী নজরমে, ৬৪ পৃষ্ঠা)
* ইসলাম বলে, দ্বীনের আসল মকছুদ নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি কায়েম করা। ইসলামী হুকমত উক্ত মকছুদ অর্জনে সহায়ক। (শরহুল আকায়েদ, ৩০৪ পৃষ্ঠা)

এত সব ভ্রান্ত আক্বিদা পোষণ করার পরও যদি কেউ তাকে আল্লাহ ওয়ালা বলে সম্বোধন করে তাহলে তাদের ক্ষেত্রে আমাদের কী’বা বলার আছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের মওদুদী ফিতনা থেকে আমাদের দেশে সাধারণ মুসলমানদের হিফাযত করুন।










আপনার সন্তানকে মাদকাসক্ত বানিয়ে সে টাকায় চলছে রাজাকারের বিপ্লব
Somewhereinblog.net ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ ভোর ৬:৩৬ |



শিরোনামটায় ভড়কালেন! ভড়কানোর কিছুই নেই। আজ এই ২০১০ সালে এসে বাংলাদেশে মাদকাসক্তি একটি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌছেছে। খুব কম পরিবারই আছে যেখানে মাদক ছোবল দেয়নি। এমন ভাগ্যবান পরিবার কম, যাদের কোনো সদস্য মাদকের নেশায় উম্মত্ত হয়ে জিম্মি করে রাখেনি তাদের। হালের ক্রেজ ইয়াবা হলেও পরিসংখ্যানে এখনও সবচেয়ে ক্ষতিকর মাদক হিসেবে বর্তমান হেরোইন। ব্রাউন সুগার এবং ইনজেকশন ফরমে এটা আসক্তদের প্রিয় গভীর নেশা এবং স্বল্প দামের কারণে। ৪০০ টাকার ইয়াবা কিংবা ৬০০ টাকার ফেন্সিডিলের বদলে ১০০ টাকা খরচ করেই তারা চলে যাচ্ছে নেশার রাজ্যে। এই নেশার টাকা যোগাড় করতে তারা কি করে এ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। পরিচিত বা বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়দের দেখেই মোটামুটি এ ব্যাপারে কম বেশী সবাই জানেন। এই যে চুরি ছ্যাচরামি করে, ডাকাতি-ছিনতাই করে, ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করে মাদকাসক্তরা নেশার রাজ্যে ঘোরাফেরা করে যাচ্ছে- টাকাটা যাচ্ছে কোথায়? উত্তরটা শিরোনামেই দিয়েছি। এ টাকা কাজে লাগছে ইসলামী বিপ্লবের পুঁজি জোগাতে।

হেরোইন একটি কেমিক্যাল ড্রাগ। মূল উৎস পপি। আর এর চাষাবাদ এশিয়াতে তিনটি অঞ্চলে। লাওস, বার্মা এবং আফগানিস্তান। শীতল যুদ্ধে সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নকে শায়েস্তা করতে এশিয়াতে যে গোপন যুদ্ধ চালিয়েছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার উপজাত হয়েই পপির প্রসার। ভিয়েতনামে নিজেদের অব্স্থান সংহত করতে ষাটের দশকে লাওসে মং (hmong)উপজাতিদের কাজে লাগিয়েছিলো সিআইএ। বিনিময়ে তাদের একমাত্র অর্থকরী ফসল পপির উৎপাদন ও বিপননে সহায়তার চুক্তিতে যেতে হয়েছিলো তাদের। আশির দশকে আফগানিস্তানে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। রাশিয়াকে হটাতে গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের হাতকে শক্ত করার রাস্তা নেয় তারা। মাধ্যম হয় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। মুজাহেদিনদের জন্য বরাদ্দ অনুদানের ২ বিলিয়ন ডলারের অর্ধেক পান হেকমতিয়ার যার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে আফগানিস্তানের বেশীরভাগ আফিম ক্ষেত্র। (১) এসব আফিম চলে যেত পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিম সীমান্তবর্তী প্রদেশের ল্যাবরেটরিতে। সেখানে তৈরি হতো হেরোইন। এরপর বাজারজাত হতো। বাজার? খোদ পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশ। সঙ্গে প্রতিবেশী ইরানও। (২)

আবাদী অঞ্চলগুলো আশির দশকের শুরুতেই কব্জায় নিয়ে এসেছিল মুজাহেদিনরা। কৃষকদের বিপ্লবী কর হিসেবে বাধ্যতামূলকভাবে পপি চাষের নির্দেশ দেয় তারা। ’৮১ সালে ২৫০ টন থেকে উৎপাদন ১০ বছরের মাথায় ২০০০ টনে উত্তীর্ণ হয়। (৩) মুজাহেদিনদের কাজ ছিলো সীমান্ত পার করে পাকিস্তানে নিয়ে আসা। সেখানে আইএসআই’র জেনারেল ফজলে হকের রক্ষাকবচে থাকা পাকিস্তানী হেরোইন রিফাইনারদের কাছে এসব বিক্রি করতো তারা। ফজলে হক একই সঙ্গে নর্থওয়েস্ট ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্সের গভর্নরও। ধারণা করা হয় ১৯৮৮ সালে শুধু খাইবার জেলাতেই হেরোইন তৈরির রিফাইনারির সংখ্যা ছিলো একশ থেকে দুশোটি। (৪)

আশির দশকেই পাকিস্তানের উত্থান বিশ্বের সবচেয়ে বড় হেরোইন প্রস্ততকারী দেশ হিসেবে। ইউরোপ বা অন্যান্য বাজার ধরার আগে ঘরেই শুরু হয়ে যায় এর বিপনন। ৮৫ সালে পাকিস্তানে হেরোইন আসক্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ লাখেরও বেশী। (৫) বাংলাদেশেও ওই একইসময় হেরোইন আঘাত হানে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাতেই জানি সে সময় প্রতিটি গাজার আখড়ায় ফ্রিতে হেরোইন বিলি করা হতো এবং শিখিয়ে দেওয়া হতো সেবন প্রণালী। মাসখানেকের এই বিনিয়োগ যথেষ্ট ছিলো ঢাকার বুকে কয়েক হাজার হেরোইন আসক্ত তৈরি করতে।
আফগানিস্তান থেকে রাশিয়ানদের পশ্চাদপসারণ এবং খোদ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থও ফুরোয়। কিন্তু হেরোইন ব্যবসা থামেনি। নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে আফগানিস্তান বিশ্বের ৭৫ভাগ হেরোইনের যোগানদাতা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে। ‘৯৯তে তাদের কাঁচা আফিম উৎপাদন ছিলো ৪ হাজার ৬০০ টন! (৬) এই হেরোইনের টাকাই বিনিয়োগ হতে থাকে জঙ্গীবাদে। নিজেদের গৃহযুদ্ধ তো আছেই। পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ থেকে শুরু করে বলকান রাজ্যগুলোতেও কাঁচা আফিমের পয়সায় ভিত্তি পায় ইসলামী বিপ্লবের নামে সন্ত্রাস। কাশ্মীর, কসোভো, চেচনিয়াতে ধর্মের আফিমে বুঁদ জঙ্গীরা নব উদ্যোমে ঝাপায়, আর সেটাকা জোগান দিতে হেরোইনের নেশায় বুঁদ হয়ে ঝিমাতে থাকে উপমহাদেশের কয়েক প্রজন্মের কিশোর, তরুণ, যুবারা। অতিষ্ঠ ইরান ১৯৯৮ সালে বন্ধ করে দেয় সীমান্ত। এর আগে সাত বছরে তারা আটক করে ১৯৭ মেট্রিক টন হেরোইন। (৭)
আসক্তিতেই থেমে থাকে না বিপদ। সঙ্গে আসে এইডসও। বাংলাদেশে আক্রান্ত এইডস রুগীদের একটা বড় অংশই ইনজেকশনের মাধ্যমে হেরোইন নেয়ার কারণে তালিকাভুক্ত। বাকিদেশগুলোতেও একই অবস্থা। ২০০১ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে প্রথম ইনজেকশনে নেশা নিয়ে অভ্যস্তদের মাধ্যমে মহামারী আকারে এইচআইভি ছড়িয়ে পড়ার শংকা জানানো হয়। মধ্য এশিয়ায় সংখ্যাটা দশ লাখেরও বেশী বলে জানানো হয়। (৮)

এদিকে হেরোইনের টাকায় রমরমা অবস্থায় চলে যায় আইএসআই। আশির দশকে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে ৩০ থেকে ৫০ ভাগ জোগান আসতে থাকে হেরোইন বিক্রির খাত থেকে। সুবাদেই ধ্বসে যায় তাদের গণতান্ত্রিক বুনিয়াদ যার ফলে পতন হয় বেনজির ভুট্টো ও নওয়াজ শরীফের সরকারের। আইএসআই আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে, সামরিক বাহিনীতে বাড়ে তাদের প্রভাব। আর কাশ্মীর ও আফগানিস্তানে চালাতে থাকে ইসলামী জঙ্গীদের সহযোগিতা। ভাগের টাকায় বাদ পড়ে না বাংলাদেশের জামাতে ইসলামীও। (৯)
(চলবে)

ছবি : হাসান বিপুল
তথ্যসূত্র :
১. John F. Burns, “Afghans: Now They Blame America,” New York Times Sunday Magazine, February 4, 1990, 37; Lawrence Lifschultz, “Dangerous Liaison: The CIAISI
Connection,” Newsline (Karachi), November 1989, 52–53.
২/৫.Pakistan Narcotics Control Board, National Survey on Drug Abuse in Pakistan (Islamabad: Narcotics Control Board, 1986), iii, ix, 23, 308.
৩.U.S. Central Intelligence Agency, “Memorandum, Subject: Iran — An Opium Cornucopia,”
September 27, 1979; U.S. Department of State, Bureau of International Narcotics Matters, International Narcotics Control Strategy Report (Washington, D.C.: U.S. State Department, February 1984), 4; U.S. Department of State, Bureau for International Narcotics and Law Enforcement Affairs, International Narcotics Control Strategy Report, March 1998 (Washington, D.C.: U.S. State Department, 1998), 23; Geopolitical Drug Dispatch, “Afghanistan: Aiming to be the Leading Opium Producer,”
no. 3 (January 1992), 1, 3.
৪.Kathy Evans, “The Tribal Trail,” Newsline (Karachi), December 1989, 26.
৬.U.S. Department of State, International Narcotics Control Strategy Report, March 2000, 56; United Nations, United Nations International Drug Control Programme,
Afghanistan: Annual Survey 2000 (Islamabad: UNDCP, 2000), 15.
৭. Rashid, Taliban, 122, 124; United Nations, United Nations Office for Drug Control and Crime Prevention, Pakistan Regional Office, Strategic Study #2: The Dynamics of the Farmgate Opium Trade and the Coping Strategies of Opium Traders
৮. New York Times, November 29, 2001.
৯. Miriam Abou Zahab, “Pakistan: d’un narco-Etat a une ‘success story’ dans la guerre contre la drogue?” Cahiers d’études sur la Méditerranée orientale et le monde turcoiranien 32 (July-December 2001):147–53; Rashid, Taliban, 121–22; M. Emdad-ul Haq, Drugs in South Asia: From the Opium Trade to the Present Day (New York: St.Martin’s Press, 2000), 213.







এরশাদের শাসন আমলে বাংলাদেশে হেরোইনের প্রসার। ঢাকায় শুরুতে এই হেরোইনের বিক্রিটা সীমাবদ্ধ ছিলো অল্প কিছু জায়গায়। আসক্তদের মধ্যে চালু রসিকতাটা ছিলো- রাজার নেশা কিনতে যাইতে হয় ফকিরনিগো কাছে। মোহাম্মদপুর টাউন হল, জেনেভা ক্যাম্প ও মীরপুর-বিক্রেতারা সব বিহারী। বিশাল বস্তিগুলোতে সহজলভ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত এগুলোই ছিলো ডেন। এবং পরেরদিকে পাইকারি আড়ত। অদ্ভুত সব কায়দায় এদেশে হেরোইন ঢুকতো। বিমানবন্দরে যেসব বড় চালান ধরা পড়েছিলো তার মধ্যে ছিলো চাঞ্চল্যকর মাধ্যমের কয়েকটি ছিলো টুথপেস্ট, বিদেশী পুতুল, সিগারেটের কার্টন। (১০)

বলা হয়ে থাকে বড় চালান পার করার জন্য এসব কয়েক কেজির চালান ইচ্ছে করেই ধরিয়ে দেওয়া হতো। বাহক হিসেবে বহু পাকিস্তানী এখনও ঢাকা কারাগারে পচে মরছে। পরে এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে আফ্রিকান কিছু যুবক যারা স্রেফ টাকার লোভে পাকিস্তান থেকে এসব নিয়ে এদেশে আসতো। স্মরণে পড়ছে চট্টগ্রামে জাহাজে করে একটি বিশাল চালন আটকের কথা, যার নেপথ্যে রওশন এরশাদ এবং জনৈক কানা ফকিরের যুক্ত ছিলো বলে শোনা যায়। জাহাজটি ছিলো সালা্হউদ্দিন কাদের চৌধুরীর। (১১)

বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর সঙ্গে শুরুতেই এই মাদক ব্যবসায় সংশ্লিষ্ঠতার প্রমাণ মেলেনি। তবে চোরের সাতদিন গৃহস্থের একদিন। ২০০৬ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যে সাড়ে ২২ কেজি হেরোইন পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় বদরুদ্দোজা চৌধুরী নামে এক ব্যক্তিকে। বিডি ফুডস নামে একটি কোম্পানির এই মালিক জামাতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার ছেলে হাসান শাহরিয়ার চৌধুরী দৈনিক নয়া দিগন্তের পরিচালক মন্ডলীর সদস্য এবং দিগন্ত টিভিতেও তার অংশীদারিত্ব রয়েছে। সবজী, টিস্যু পেপার, কসমেটিকসের মধ্যে করে এসব হেরোইন পাচার করতো তার কোম্পানি। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে তারা এসব চালান নিয়ে আসতো। এই পাচারে ব্যবহার করতো এমদাদ ট্রেডার্স এবং জামিল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং কোম্পানি নামে দুটো ভুয়া কোম্পানিকেও। (১২)

(চলবে)

সূত্র :
১০/১১ : ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
১২ : Click This Link
Click This Link

প্রচারে- বাংলাদেশের মুসলীম জনতা

৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×