somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম এবং হিন্দু ধর্মের মধ্যে কিছু তুলনা-এটা আমার বক্তব্য না। জনৈক নাস্তিকের পাশাপাশি আমার কিছু মন্তব্য

১৩ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Click This Link
আলহামদুলিল্লাহ। আস সালাতু আস সালামু আলা রাসুলুল্লাহ।

উপরের লিংকে একজন ভদ্র লোক (পরিমল বাবুর মতো) ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মধ্যে বহুত কষ্ট কইরা ভাঙ্গা লেম্প দিয়া খুইজা খুইজা কিছু সাদৃশ্য উপস্থাপন করছে। সে মাঝখানে বইসা রেফারির দায়িত্ব পালন করছে যদিও তার রেফারী হওয়ার যোগ্যতা প্রশ্ন বিদ্ধ (সার্টিফিকেট আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখার জন্য চেহারা খাতুন সরি সাহারা খাতুন একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করার নির্দেশ দিয়েছেন) । তারপরও সে নিজে থেকেই রেফারীর দায়িত্ব নিয়া ছাগুগো সরি নাস্তিক গো মন জুগানির চেষ্টা করছে। কিছু হাততালি পাইয়াও গেছে। চলুন তাহার মূল্যহীন সরি মূলাবান বক্তব্য পড়ি এবং আমার মন্তব্যও। আমারটা ফ্রি।
=======================================

তুলনা#১.হিন্দু ধর্মে রয়েছে কুর্নিশ এবং প্রণামের রীতি, যাকে মুসলমানরা বলে রুকু এবং সেজদা। যৎসামান্য পার্থক্য যা আছে তা হল হিন্দুরা তাদের ভক্তি জ্ঞাপন করে মাটির তৈরি দেবতার মুর্তির সামনে আর মুসলমানরা করে একটি নির্দিষ্ট পাথরকে উদ্দেশ্য করে, যা হাজরে আসওয়াদ নামে পরিচিত, এবং সৌদি আরবের মক্কা শহরের কাবা শরীফে অবস্থিত। হিন্দুদের মধ্যে তাদের দেবতার মুর্তির পদতল এবং শিবলিংগ চুম্বনের রীতি আছে, আর মুসলমানদের হজের সময়ের একটি নিয়ম হলো কালো পাথরটিকে চুমা খাওয়া। উল্লেখ্য সবধরণের পুজা ও নামায বাসায় করা যায়, তবে মন্দির ও মসজিদ এসবের জন্য উত্তম স্থান। মসজিদকে আল্লাহর ঘর বলা হয়, তবে মুসলমানদের দাবি অনুযায়ী নিরাকার আল্লাহর জন্য ঘরের কি প্রয়োজন সেই ব্যখা এখনো পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য => হিন্দু ধর্মে রয়েছে কুর্নিশ। কাকে কুর্ণিশ করা হয়? মুর্তিকে মানুষকে এবং কিছু জড়পদার্থকে যারা নিজেরাই নিজেদের ভালো বা মন্দ কোনটাই করতে সক্ষম নয়। অন্যদিকে মুসলিমরা করে রুকু সেজদা। কাকে করে "সৃষ্টিকর্তাকে"। কোন মানুষ বা জড় পদার্থকে নয়। এটা হলো আকাশ পাতাল পার্থক্য। মুসলিমরা কেবল মাত্র এক ঈশ্বরকেই রুকু সিজদা করে। তবে হিন্দুরা যে কাউকে সিজদা করতে পারে। তবে তাদের গ্রন্থেও মুলত এক ঈশ্বরেরই উপাসনা করতে বলা হইছে। এখন কোন হিন্দু যদি না মানে সেটা তার ব্যাপার। লেখকের বুঝায় ভূল থাকতে পারে। আমরা শুধূমাত্র এক ঈশ্বরের উপাসনা করি কারণ আল্লাহ বলেন

সূরা হামীম আস সিজদাহ: ৪১:৩৭> তোমরা চন্দ্র সূর্যকে সিজদা করো না। সিজদাহ করো তাকে যিনি এগুলোকে সৃষ্টি করেছেন।

=> হিন্দুরা তাদের দেবতার মুর্তির পদতল এবং শিবলিংগ চুম্বন করে। কারণ তারা মনে করে এটা তাদের ঈশ্বরের কাছাকাছি পৌছে দিবে। তারা ভায়া ধরে কিন্তু ঈশ্বরের উপাসনায় আমরা কোন ভায়া ধরি না বা কোন লিংগে চুম্বন করি না। এটা কি আকাশ পাতাল তফাৎ না?

আর কালো পাথর হাজরে আসওয়াদ? সেটাতে তো আমরা কেন চুম্বন করি তা উমর রাঃ ই ক্লিয়ার করে গেছেন। হাজরে আসওয়াদকে উদ্দেশ্য করে সেই পাথরের তিনি বলেছেন, আমি জানি তুমি কোন উপকার বা ক্ষতি করতে পারো না। আমি শুধুমাত্র এ কারণেই তোমায় চুমু দিচ্ছি কারণ আমি দেখেছি আমার প্রিয় রাসুল মোহাম্মদ সাঃ তোমার গায়ে চুমু দিয়েছেন। আর শুধুমাত্র তাই আমি তোমার গায়ে চুমু দিচ্ছি অন্যথায় কখনো দিতাম না।

=> মসজিদকে আল্লাহর ঘর বলা হয়, তবে মুসলমানদের দাবি অনুযায়ী নিরাকার আল্লাহর জন্য ঘরের কি প্রয়োজন সেই ব্যখা এখনো পাওয়া যায়নি।

মন্তব্যঃ নিরাকার আল্লাহ তুই সরি আপনি পাইছচ সরি পাইছেন কই। হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী আল্লাহ বা ঈশ্বর নিরাকার। ঈশ্বর সব জায়গায় আছে এমনকি টয়লেটেও। গাছের ভিতর আল্লাহ আছে, সাপের ভিতর আল্লাহ আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু ইসলাম অনুযায়ী আল্লাহ আছেন আরশে আজীমে। এবং তার ক্ষমতা সর্বক্ষেত্রে বিরাজমান। তার মানে এই না যে তিনি সব জায়গায়। বরং তার জ্ঞান সব জায়গা। কোন জায়গাই তার দৃষ্টির অগোচরে না। এছাড়াও দেখুন সূরা মুজাদালাহ-৬-৭, সূরা লুকমান-৩৪ নং আয়াত।
=========================================

তুলনা#২. মুসলমানরা হজের সময় কালো পাথরকে ঘিরে সাতবার পাক খায়, আর হিন্দু বরবধু বিয়ের সময আগুনকে ঘিরে সাতবার ঘোরে।


=> মুসলিমরা করে সেটা কার জন্য। এক আল্লাহর জন্য। কারণ প্রতিটি বৃত্তের একটা কেন্দ্র থাকে। সাতপাক দেই তখন আমরা কি বলি? কালো পাথড় জিন্দাবাদ?

কখনোই না। বরং আমরা বলি লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি'মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাকা।' অর্থাৎ

'হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, কেউ শরিক নেই তোমার, আমি তোমারই কাছে এসেছি। নিশ্চয়ই সব প্রশংসা (এককভাবে) কেবল তোমারই জন্য এবং সব নিয়ামত (এককভাবে) তোমারই দান। রাজত্ব আর প্রভুত্ব (এককভাবে) সবই তোমার। তুমি একক। কেউই তোমার শরিক নেই।'

নাই কোন মুর্তি, নাই কোন ব্যক্তি হোক সেটা ঈসা আঃ বা মোহাম্মদ সাঃ নেই কেউই তোমার ইবাদতের অংশীদার।

এবার হিন্দুদের দিকে আসি। তারা বিয়ের সময় সাতপাক খায় কাকে কেন্দ্র করে। আগুন কে। এ ব্যাপারে হিন্দুরা ভালো বলতে পারবো। তবে এটা আমরা বলতে পারি যে আমরা একমাত্র এক সৃষ্টিকর্তারই উপাসনা করি। আমরা আগুন পানি বাতাস কোন ভায়া ধরি না। আর ভায়া ধরলে সেটা হবে সেই বস্তুর উপাসনা, স্রষ্টার না।
========================================

তুলনা#৩. মুসলমানদের পুজা-অর্চনার সময় সূর্যের অবস্থানের উপর নির্ভরশীল। যেমন সূর্য ওঠার সময় একবার, মাথার উপর থাকার সময় একবার, ডোবার সময় একবার, না থাকলে একবার ইত্যাদি। হিন্দুদের সূর্যের প্রতি ভক্তি প্রকাশকে বলা হয় সূর্যনমস্কারম। এসম্পর্কে পরে বিস্তারিত আলোচনা করার ইচ্ছা থাকলো। কারো জানার ইচ্ছা থাকলে লিংক দেখে নিতে পারেন।

মন্তব্য => উনি পরে বিস্তারিত আলোচনা করবো বলে আশ্বাস দিছে। তবে আমি এখন এ সম্পর্কে আলোচনা করি। মুসলিমদের উপাসনা সূর্য ও চন্দ্র দ্বারা স্থির হয়। কেন? কারণ আল্লাহর নির্দেশ। সূর্য নামক প্রাকৃতিক ঘড়ির উপর ভিত্তি করে আমরা ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করি। চন্দ্রের উপর ভিত্তি করে রমজান মাস এবং অন্যান্য মাস গণনা করি। জাস্ট গণনার যন্ত্র। আর কিছু না। তবে কেউ আমরা সূর্যের উপাসনা করি না।

অন্যদিকে হিন্দুরা লেখকের ভাষায় "সূর্যনমস্কারম" নামক পুজায় লিপ্ত হয়। তবে এক ঈশ্বরের বা সৃষ্টিকর্তার না। তবে এটা তারা ঈশ্বরের সন্তুষ্টির জন্যই করে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে সূর্যকে।

অথচ স্রষ্টা আল্লাহ বলেছেন

সূরা হামীম আস সিজদাহ: ৪১:৩৭> তোমরা চন্দ্র সূর্যকে সিজদা করো না। সিজদাহ করো তাকে যিনি এগুলোকে সৃষ্টি করেছেন।

আর আমরা মুসলিমরা কোন মাধ্যম ছাড়াই মহান ঈশ্বরের উপাসনা করি। উভয় ধর্মের উপাসনায় বিস্তর তফাৎ রয়েছে। লেখক এখানেও তুলনা করতে ভূল করছেন।
=========================================

তুলনা#৪. হিন্দুদের জন্য পাপমুক্তির সহজ প্যাকেজ হলো গঙ্গাস্নান। আর মুসলমানদের এজন্য যথেষ্ঠ পরিমান টাকা খরচ করে হজে যেতে হয়। কথিত আছে যে একবার হজ করে আসলে একজন ব্যক্তি সদ্যভুমিষ্ঠ শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়।


=> হিন্দুদের জন্য সহজ প্যাকেজ হতে পারে আকাম কুকাম করে গঙ্গাস্নান করে পবিত্র হওয়ার। কিন্তু ইসলামে এটা অসম্ভব। কারণ হারাম খাইলে দোয়াই কবুল হয় না হজ্ব তো দুরের কথা। তবে কার হজ্ব কবুল হবে সেটা আল্লাহই ভালো জানেন।

=========================================

তুলনা#৫. মুসলমানদের ধর্মগুরুরা মৌলভী, হুজুর, পীর, দরবেশ ইত্যাদি নামে পরিচিত। এরা বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যক্রম (মিলাদ, জানাজা) পরিচালনার মাধ্যমে টাকা উপার্জন করে। নিজেদের প্রভাব বজায়ে রাখার জন্য এরা বিভিন্ন হাদিস ও ফতোয়া দেয়। হিন্দুদের ধর্মগুরুরা হলো ব্রাক্ষণ, মুনি ইত্যাদি। এরাও ধর্মীয় কার্যক্রমের (পুজা, কুন্ডলি) দ্বারা টাকা কামায় এবং জাতপ্রথা শক্তিশালী করার মাধ্যমে নিজেদের প্রভাব বজায়ে রাখে। হিন্দুদের হাদিসগুলিকে উপনিশদ বলে। হুজুরদের দাড়ি ও টুপি এবং ব্রাক্ষণদের টিকি দ্বারা চেনা যায়।

=> গুরু তো হিজরারা ব্যবহার করে। যাই হোক ইসলামী স্কলারদের মুসলিমরা বলে আলেম অর্থ্যাৎ যিনি এলেম মানে কোরআন ও সহীহ হাদিসের জ্ঞান রাখেন। যিনি কোরআন ও সহীহ হাদিস অনুযায়ী আল্লাহ বিধানগুলো মানুষকে শোনান দলিল সহকারে। পীর কোন আরবী শব্দ না। খুব সম্ভব ফারসী। তবে পীর শব্দেরও অর্থ হলো জ্ঞানী অর্থ্যাৎ যিনি কোরআন ও হাদিসের জ্ঞানে সমৃদ্ধ। তবে কেউ যদি পীর মানে মনে করেন সেই ব্যক্তি যিনি আকাশে ওড়েন, হেটে হেটে সাগর পাড়ি দেন তবে সেটা হবে শুধু মাত্র তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। কারণ

সূরা আহকাফ-৯> হে নবী, (ঘোষনা কর) আমি জানি না আমার সাথে কি ব্যবহার করা হবে এবং আমি এটাও জানি না তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে।

খুবই আফসোস, যেখানে আল্লাহর রাসুল তার ঘনিষ্ট সাহাবা এবং তার অনুসারী ব্যাপারে ঘোষনা দিচ্ছেন যে তিনি আমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে সেটা জানেন না সেখানে আমরা আব্দুল কাদের জিলানী (রাহিমাহুল্লাহ), শাহ জালাল (রাহিমাহুল্লাহ) ও শাহ পরান (রাহিমাহুল্লাহ) দের নামে ঘোষনা দেই যে তারা আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট সুপারিশ করবে এবং তারা জান্নাতি। কি জঘন্য চিন্তা ভাবনা।

এখন আসি হিন্দুদের ব্যাপারে। হিন্দুদের ধর্মগুরুরা হলো ব্রাক্ষণ, মুনি। ব্রাক্ষন মানে যারা ঈশ্বরের বেশী প্রিয়, তারপর ক্ষত্রিয়, তারপর শুদ্র। ব্রাক্ষ্মনরা পুজা, কুন্ডলি করে ক্ষত্রিয়, শুদ্রদের তাদের মুঠোয় রাখতে চায় এবং এ আশা দেয় যে যদি ব্রাক্ষ্মন দের সন্তুষ্ট করা যায় তবে পরজনমে ভালো হবে। আমাদের মতে এটা এক ধরণের প্রতারণা। কারণ ঈশ্বরের চোখে সবাই সমান। এটাই হওয়া উচিত ঈশ্বরের মুলনীতি। যেমনঃ-

সূরা হুজরাত-১৩> হে মানুষ জাতি। আমি তোমাদের এক পুরুষ এবং এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতিতে ও গোত্রে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা এক জাতি বা গোত্র অন্য জাতি বা গোত্রের সাথে পরিচিত হতে পার। আল্লাহর নিকট সেই সর্বোত্তম যে যত বেশী মুত্তাকি।

মুত্তাকি মানে যে আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তাকে ভয় করে চলে, ন্যায় পরায়ণ, স্রষ্টাকে মেনে চলে।

এখন আমি যদি মক্কার ইমামের চেয়েও বেশী আল্লাহকে মেনে চলি বা আমার মধ্যে যদি বেশী আল্লাহকে মেনে চলার টেন্ডেন্সী থাকে এবং মেনে চলি তাহলে আমি আল্লাহর নিকট বেশী প্রিয়। আবার আমার চেয়ে কোন চাকমা যদি আল্লাহকে বেশী ভয় করে ন্যায়পরায়ণ হয়, বেশী আল্লাহকে মেনে চলে তাহলে সে আল্লাহর নিকট আমার চেয়ে বেশী প্রিয়। আবার চাকমার থেকে কোন নিগ্রোও যদি আল্লাহকে বেশী ভয় করে ন্যায়পরায়ণ হয়, বেশী আল্লাহকে মেনে চলে তাহলে সে আল্লাহর নিকট বেশী প্রিয় চাকমার থেকে।

কোন মুসলিম দাবী করতে পারে না যে আমিই আল্লাহর বেশী প্রিয়। তবে খ্রিষ্টান ও হিন্দুরা পারে। যেমন খ্রিষ্টান পাদ্রীরা নাকি ঈশ্বরের বেশী কাছের। হিন্দু ব্রাক্ষণরা নাকি ক্ষত্রিয় ও শুদ্রদের থেকে বেশী কাছের।

তবে ঈশ্বরের মূলনীতি অনুযায়ী ঈশ্বরের নিকট সবাই সমান। আর এই বিশ্বাসই প্রতিষ্ঠা করেছে ইসলাম।

=========================================

তুলনা#৬. ব্রাক্ষণরা মালা এবং হুজুররা তসবিহ ব্যবহার করে। এসব দিয়ে তারা আসলে কি করে তা সাধারন মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।

মন্তব্য => ব্রাক্ষণরা মালা পড়ে, সুতা পড়ে, লেংটা হয়ে গাছে ঝুলে থাকে, বা উলঙ্গ হয়ে কাপড় মাথায় তুলে নাচে তাতে আপনার সমস্যা কি। তবে ইসলাম ধর্মে এগুলোর কোন ভিত্তি নাই। হিন্দু ধর্মে এগুলো করার জন্য উপনিষদে বিধান থাকতে পারে তবে ইসলাম ধর্মের কোথাও এমন করার কথা বলা নাই। তবে মাজারে মাজারে যারা করে তারা শুধু তাদের অনুমান ও মনো বাসনারই অনুসরণ করে। আর কোন ব্যক্তি দিয়ে কোন ধর্মকে বিচার করা বোকামী ছাড়া আর কিছু না। কারণ ব্যক্তির কার্যকলাপ সেই ধর্ম অনুসারে নাও হতে পারে।


তসবিহ অর্থ প্রশংসা মহত্ব বর্ণনা করা।
আর এই তাসবিহ রাসুল সাঃ পড়েছেন এবং আমরাও পড়ি। তবে দানার মাধ্যমে হাতে নিয়ে গণনা করে রাসুল সাঃ কখনো করেন নি। যতদুর জানা যায় খুবই কম সংখ্যক সাহাবা খেজুরের দানা দিয়ে জাস্ট গণনা করে পড়তেন যেন গণনায় ভূল না হয় সেজন্য। যেমন সুবহান আল্লাহ ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার এবং আল্লাহু আকবর ৩৪ বার। সর্বমোট ১০০ বার।

অনেক মুসলিম তাসবিহ দানাকে ইবাদতের জিনিস মনে করে এবং হিন্দু ও ইসলাম সম্পর্কে উপরের লিংকের লেখকও এটাকে ইবাদাতের বস্তু মনে করেন। কিন্তু এটা যারা মনে করে তা তাদের জ্ঞান স্বল্পতা হিসেবে ধরে নিতে হবে। কারণ এটা জাস্ট গণনার সুবিধার জন্য বাড়তি কিছূ না।
=========================================

তুলনা#৭. মুসলমানদের মধ্যে কবরপুজার রীতি আছে। তবে হিন্দুরা এই ঝামেলা থেকে মুক্ত কারণ তাদের কবরই হয়না। তবে কাজ চালানোর জন্য তারা মাঝেমধ্যে কিছু মুসলমানদের কবর ব্যবহার করে। যেমন আজমীর শরীফ।

=> মুসলিমদের কিছু মানুষ কবরপুজা ব্যক্তিপুজা, হুজুরপুজা করতে পারে । তবে সেটা আপনার বক্তব্য অনুযায়ী ইসলামের রীতি না। ইসলামে কবর পাকা করা নিষেধ, কবরের উপর ঘর করা নিষেধ, কবরে বাতি দেওয়া নিষেধ, কবরে জিলাফ টাঙ্গানো নিষেধ। উল্টা কোন উচু কবর দেখলে সেটা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হইছে সহীহ হাদিসে।

আর হিন্দুরা যদি মুসলিমদের কবর ব্যবহার করে তবে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে যারা ধর্মের বিধানগুলো অর্থাৎ কোরআন ও সহীহ হাদিসে মেনে চলে তারা এই সব ঝামেলা থেকে মুক্ত। কবর সম্পর্কে কোরআনের বাণী।

সূরা ফাতির-২২> হে নবী তুমি কবরে শায়িত ব্যক্তিদের শোনাতে সক্ষম নয়।
সূরা নাহল-২১> তারা (কবরবাসীরা) মৃত প্রাণহীন। কবে পুনরুত্থিত হবে তারা তা জানে না।

কবর যারা পুজা করে তারা মূলত নিজেদের অক্ষমতা, সৃষ্টিকর্তাকে না চেনা এবং গোড়ামির কারণেই এটা করে।

========================================

তুলনা#৮. দুই ধর্মেই না খেয়ে থাকার রীতি বিদ্যমান, যাকে মুসলমানরা রোজা বলে আর হিন্দুরা বলে উপবাস।

=> হুম আছে। তবে আমরা না খেয়ে থাকি সূর্যদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কার সন্তুষ্টির জন্য? একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর জন্যআল্লাহর নির্দেশে। না মোহাম্মদ সাঃ এর জন্য, না কোন পীরের জন্য, না কোন ব্যক্তির জন্য। তবে হিন্দুরা উপবাস করে কি কারণে? কার সন্তুষ্টির জন্য? সেটার উত্তর বোধ হয় তারাই জানে।

=========================================

তুলনা#৯. নামাজ, রোজা, উপবাস কোনো কিছুই উত্তর অথবা দক্ষিণ মেরুতে গিয়ে করা সম্ভব নয়। অতদুর যাওয়ার দরকার নাই, নরওয়েতে গেলেই এসব মাথা থেকে আউট হয়ে যাওয়ার কথা, কারণ সেখানে সূর্য ডোবেইনা, একদিক থেকে ডুবে গিয়ে দুম করে আরেকদিক থেকে উঠে পরে। এজন্য নরওয়েকে বলা হয় নিশীথ সূর্যের দেশ।

=> তাহলে কি সেখানকার মানুষরা সালাত পড়ে না। সূর্যের চান্দি দেখতেই হইবো নাইলে নামাজ হইবো না এই বুদ্ধি আপনারে কে দিলো। সূর্যের ব্যবহার হয় ঘড়ির মতো। যদি সূর্যের জায়গায় হাতের ঘড়িকে ধরা হয় আর হাতের ঘড়ির ব্যাটারী শেষ হইয়া যায়। তাইলেই কি সালাত বন্ধ কইরা দিমু। এটাতো বোকার মতো প্রশ্ন।

=========================================

তুলনা#১০. হিন্দুদের শেষ বয়সে একবার তীর্থযাত্রা না করলেই নয়, আর মুসলমানরা সাধারণত হজ করে। তবে রাজনীতিবিদদের মধ্যে ঘন ঘন হজ করার প্রবণতা দেখা যায়।

=> "তীর্থযাত্রা না করলেই নয়" এমন কঠোরতা হিন্দু ধর্মে থাকতে পারে ইসলামে নাই। কারণ যাদের সেখানে যাওয়া এবং আসার মতো পর্যাপ্ত অর্থ আছে তারাই সেখানে ভ্রমন করব। আর রাজনীতিবিদ, হেতানেরা তো হজ না পিংনিক করতে যায়।

=========================================

তুলনা#১১. হিন্দুরা সব ডিপার্টমেন্টের জন্য একজন করে দেবতা রেখে দিয়েছে আর মুসলমানরা রেখেছে একজন করে ফেরেস্তা।

=> আবারো ভূল করছে বেচারা। হিন্দুরা সব ডিপার্টমেন্টে একজন করে দেবতা রাখতে পারে, যেহেতু আমি হিন্দু না এবং হিন্দু ধর্মগ্রন্থতে এই বিধান সম্পর্কে জানি না তাই এ ব্যাপারে কিছু বললাম না। তবে মুসলিমরা কোন ডিপার্টমেন্টে একজন করে ফেরেস্তা রাখে নাই। রাখছেন কে? স্রষ্টা আল্লাহ, যিনি আমাদের তার উপাসনার জন্যই সৃষ্টি করেছেন

হিন্দু ধর্মে শিব হলো ধ্বংসের দেবতা। তাই ধ্বংস থেকে বাচার জন্যই হোক বা অন্য কোন কারণে হোক হিন্দুরা শিবের উপাসনা করা শুরু করছে।

কিন্তু আমাদের গ্রন্থধারী মুসলিমদের কথা হলো মহান স্রষ্ট্রাই যদি আমাকে ধ্বংস করতে চান তাহলে আজরাইল, বা জীব্রাইল আঃ কি আমাকে রক্ষা করতে পারবেন? পারবেন না। তাই মহান স্রষ্টাকেই উপাসনা করতে হবে, স্রষ্টাকেই উপাসনা করতে হবে। সৃষ্টিকে না।


একটা ভিন্ন প্রশ্ন। অনেকগুলো আলাদা আলাদা ভিন্ন ভিন্ন দেবতার উপাসনা করা ভালো নাকি এক স্রষ্টার?

=========================================

তুলনা#১২. হিন্দুদের ভেতরে ভুতপেত্নী সংক্রান্ত কাহিনীগুলি বেশী প্রচলিত। মুসলমানরা ভুতপ্রেত বিশ্বাস করেনা, তবে তারা জিনপরী বিশ্বাস করে। অনেক মুসলমান পুরুষ মৃত্যুর পর পরীদের সাথে যৌনসংগমে লিপ্ত হওয়ার স্বপ্নে বিভোর থাকেন। তবে হিন্দু পুরুষরা পেত্নীদের সাথে এসব করার ইচ্ছা পোষণ করেননা।

=> হিন্দুদের ব্যাপারে কিছু বললাম না যেহেতু জানি না। তবে মুসলিমরা জিন জাতিতে বিশ্বাস করে। অনেক মুসলিমদের ব্যাপারে আপনার যেই ধারণা সেটা আপনার বিকৃত মানসিকতার পরিচায়ক। আর হিন্দু পুরুষদের প্রতি আপনার যেই প্রেম শেষ লাইনে উল্লেখ করছেন সেটার জন্য আপনাকে পরিমল জয়ধর এ্যাওয়ার্ড-২০১১ প্রদান করা উচিত।

=========================================

কিছু তুলনা খ্রিষ্ঠান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্যও প্রযোজ্য, যা সময়ের অভাবে আলোচনা করা হলোনা। আপনাদের উৎসাহ পেলে পরে আরো তুলনা প্রকাশ করতে পারবো বলে আশা রাখি। আজ এ পর্যন্তই।

মন্তব্য => উস্তাদ মনে হয় তেমন উৎসাহ পায় নাই তাই বাকী সম্প্রদায়গুলোর ব্যাপারে পোষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকছে।

সবাইকে ধন্যবাদ।

কোন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী যদি আমার কোন আচরণে কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে নিজ গুণে ক্ষমা করে দিবেন। কারণ আল্লাহ বলেছেন

সূরা আনআম-১০৮> তাদের তোমরা খারাপ বলো না, মন্দ বলো না, গালি দিয় না, তারা (ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা) যাদের উপাসনা করে মহান আল্লাহ কে বাদ দিয়ে। তাহলে তারাও গালি দিবে, মন্দ বলবে আল্লাহ তায়ালা কে অজ্ঞান বশতঃ বা জ্ঞান স্বল্পতাবশতঃ।

সূরা বাকারা-২৫৬> দ্বীন ধর্ম গ্রহণের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নাই, নিশ্চয়ই সত্য আলাদা হয়ে গেছে মিথ্যা থেকে।

আল্লাহ নো দ্যা বেষ্ট।

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১:৫৯
৪৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×