somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খান আতাকে ক্ষমা করুন !

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খান আতা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে উজ্জ্বল নক্ষত্র । তিনি বহু প্রতিভাধর একজন ব্যক্তি ছিলেন । তিনি মুক্তিযুধের পূর্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছিলেন । তবে সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন এবং নানা ধরনের কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিলেন । সাগর মোস্তফা নামে একজন বলেছেন
পাকিস্তানি চলচ্চিত্রকার এ জে কারদার ১৯৭১ সালে “বিট্রেয়াল”-এর মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, যেখানে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতাকে ঢেকে দেয়া হয় বা সেগুলোকে দেখানো হয় না। এই প্রামাণ্যচিত্রের সহকারী পরিচালক ছিলেন-খান আতা।
যেখানে জুলাই মাসে শুরু হয় জহির রায়হানের স্টপ জেনোসাইড নির্মাণের কাজ। পরে একে একে নির্মিত হলো লিবারেশন ফাইটারস (পরিচালক আলমগীর কবির), ইনোসেন্ট মিলিয়নস (বাবুল চৌধুরী) এবং এ স্টেট ইজ বর্ন (জহির রায়হান)। সেখানে খান আতা ১৯৭১ সালে চলে যান পাকিস্তানি চলচ্চিত্রকার এ জে কারদােরের সাথে “বিট্রেয়াল”-এর মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে।
যেখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে লিয়ার লেভিন এসেছিলেন বাংলাদেশ ফ্রন্টে। তেমনি এসেছিলেন শুকদেব। ভারতীয় চলচ্চিত্রকার শুকদেব মহাকাব্যসম ছবি নাইন মান্থস টু ফ্রিডম-এ তুলে ধরেন একটি জাতির রক্তাক্ত, বেদনার্ত এবং সংঘাতময় জন্ম-ইতিহাস। সেখানে খান আতা পাকিস্তানি চলচ্চিত্রকার এ জে কারদারের সাথে “বিট্রেয়াল”-এর মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে থাকেন।
যেখানে একাত্তর সালে যুক্তরাজ্যের টেলিভিশন চ্যানেল গ্রানাডার জন্য ২৬ মিনিটের প্রামাণ্য ছবি মেজর খালেদস ওয়ার তৈরি করেছিলেন এক ভারতীয় মহিলা। জাপানি চলচ্চিত্রকার নাগিশা ওশিমা নির্মাণ করেন বাংলাদেশ স্টোরি। পরে তিনি রহমান: দি ফাদার অব নেশন নামে নির্মাণ করেন আরেকটি ছবি। ভারতীয় প্রামাণ্যচিত্রনির্মাতা গীতা মেহতা নির্মাণ করেন ডেটলাইন বাংলাদেশ, যার বিষয়বস্তু গণহত্যা ও আমাদের মুক্তিসংগ্রাম। ভারতীয় চলচ্চিত্রকার দুর্গাপ্রসাদ নির্মাণ করেন দুরন্ত পদ্মা। সেখানে খান আতা একজন বাঙ্গালী হয়েও পাকিস্তানি চলচ্চিত্রকার এ জে কারদারের “বিট্রেয়াল”-এর মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে থাকেন। কিন্তু কেন? বা কি করে খান আতা এসব করেন...সেটাও কি জোড় করে স্বাক্ষর নেবার মত গল্প....!!!



নাট্যজন নাসিরুদ্দীন বাচ্চুর বক্তব্য এভাবে এসেছে =
খান আতাউর রহমান প্রসংগ-
………………………
সম্প্রতি নিউইয়র্কে সংস্কৃতি কর্মীদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমার বক্তব্য শেষে এক প্রশ্ন উত্তরে কৃতি চলচ্চিত্র নির্মাতা, সংগীত পরিচালক ও অভিনেতা খান আতাউর রহমান সম্পর্কে আমার একটি উক্তিকে কেন্দ্র করে ফেসবুক ও অনলাইনে সংবাদ মাধ্যমে তর্ক-বিতর্ক চলছে। অহেতুক বিতর্ক নিরসনে আমার কথা পুনর্ব্যাক্ত করছি।

* বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সংগীত পরিচালক খান আতাউর রহমান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণে অপারগ হয়েছিলেন। যে ৫৫ জন বুদ্ধিজিবী ও শিল্পী ১৯৭১ -এর ১৭মে মুক্তিযুদ্ধকে “আওয়ামী লীগের চরমপন্থীদের কাজ” বলে নিন্দাসূচক বিবৃতি দিয়েছিলেন দু:খজনকভাবে খান আতাউর রহমান তার ৯ নম্বর সাক্ষরদাতা ছিলেন। (১৭মে ১৯৭১ দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকা দ্রষ্টব্য)।

* ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার ড. নীলিমা ইব্রাহীমকে প্রধান করে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিলেন রেডিও টেলিভিশনে পাকিস্তানীদের প্রচার কার্যে সহযোগীতা কারীদের সনাক্ত করার জন্য। ১৯৭২ -এর ১৩মে নীলিমা ইব্রাহীম কমিটি যে তালিকা সরকারকে পেশ করেন সে তালিকায় ৩৫ নম্বর নামটি খান আতাউর রহমানের।

তালিকাভুক্তদের সম্পর্কে কমিটির সুনির্দিষ্ট বক্তব্য রয়েছে। তালিকাভুক্ত শিল্পীদের ৬ মাস পর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ পুনর্বিবচনার সুপারিশ করা হয়। (দ্রষ্টব্য – বাংলাদেশ বেতার তথ্য মন্ত্রণালয়ের নং জি১১। সি-১। ৭২। ১৬/৬/৭২)

একথা অনস্বীকার্য যে খান আতাউর রহমান একজন গুণী শিল্পী। তার সৃষ্টিশীলতা নিয়ে কোন প্রশ্ন নাই। মুক্তিযুদ্ধপূর্বকালে তাঁর চলচ্চিত্রসমূহ আমাদের ঋদ্দ্ব ও উজ্জিবীত করেছে । যেমন “সোয়ে নাদীয়া জাগো পানি” “নবাব সিরাজদৌলা” সহ অনেক চলচ্চিত্র। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি পাকিস্তানের সমর্থক ছিলেন এবং তা তাঁর রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। আবার আলতাফ মাহমুদ, জহির রায়হান, শহীদউল্লাহ কায়সারের মত শিল্পী সাহিত্যিকরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল্ন তাঁদের স্বীয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এবং শাহাদাত বরণ করেছেন। অনেকের মনে প্রশ্ন উদ্রেক হয়েছে যে ৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর অব্যহতিতে কেন আমি বা আমরা তাঁকে রক্ষা করেছিলাম। কারণ খান আতাউর রহমান কোন প্রকার মানবতা বিরোধী কর্মে লিপ্ত ছিলেন না যদিও পাকিস্তানীদের সমর্থনে রেডিও টেলিভিশনে অনুষ্ঠান করেছেন। আর খান আতাউর রহমান একজন শিল্পী এবং ৯মাসে তাঁর কর্ম সম্পর্কে আমরা অবহিত ছিলাম না। তাছাড়া আমরা এও ভেবেছি ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক অনেকে পাকিস্তানীদের পক্ষাবলম্বন করেছে। আমরা তা বিচারের এখতিয়ার রাখিনা। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের এ কথা বাধ্যতামূলক মানতে বলা হয়েছিল যে কোন অবস্থাতেই যুদ্ধোত্তর সময়ে কাউকে ক্ষতি বা আঘাত করা যাবেনা। বিচারিক প্রক্রিয়ায় দোষী সাব্যস্তদের বিচার করা হবে রাষ্ট্রীয়ভাবে। মুক্তিযোদ্ধারা সেই আদেশ পুরোপুরি ভাবে মেনেছিলো বিধায় যুদ্ধোত্তর কালে প্রাণহানির ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে কম হয়েছিল। জেনেভা কনভেনশন মুক্তিযোদ্ধারা পুরোপুরি মেনেছিলো কিন্তু পাকিস্তানীরা জেনেভা কনভেনশনের তোয়াক্কা করেনি।

* আমার মূল বক্তব্যে নয় এক প্রশ্নের উত্তরে ইতিহাসের দায় থেকে আমি খান আতাউর রহমান সম্পর্কে উক্তিটি করেছিলাম। সবশেষে আবারো বলছি খান আতাউর রহমান একজন সৃষ্টিশীল মানুষ কিন্তু ১৯৭১ সালে তিনি দেশ ও মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ব্যক্তিগত ভাবে আমার তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নাই শিল্পী হিসাবে তাঁর প্রশংসা করি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধকালে তার ভূমিকার সমালোচনা তো করতেই পারি।

ক্ষমা করে দিন খান আতাকে ।

* আশা করি আমার উপরোল্লিখিত বক্তব্য অনুধাবনে সকল তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটবে।( লেটেস্ট নিউজ)


তালিকা আরো যাদের নাম আছে -

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×