somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জয় বাঙলা শ্লোগান এখন আর দেশ প্রেম বহন করে না। আবু জুবায়ের

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জয় হিন্দের সাথে মিল রেখে সরকার এখন জয় বাংলাকে জাতীয় শ্লোগান হিসাবে সব জায়গায় ব্যবহার করতে চাইছে। কিন্তু এই জয় বাঙলা শ্লোগান বাংলাদেশের স্বাধীন স্বত্তার সাথে বেমানান হিসাবে এরই মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে । মুক্তিযুদ্ধের সময় জয় বাঙলা মূলত ভারত থেকে আমদানী করা শ্লোগান যেমন অনেক মুক্তিযুদ্ধের গান ভারতের গীতিকার সুরকাররা করে দিয়েছে , ব্যপারটা সেই রকম । জয় বাঙলা সম্পর্কে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর এক নেতিবাচক ধারনা তৈরি হয়। নাট্যকার আতাউর রহমানের ছট ভাই , এক সময়ের আমার ঘনিষ্ট সহকর্মি সংসপ্তক নাটকের বড় মালু বলে খ্যাত মজিবুর রহমান দিলু কথা প্রসঙ্গে বেলেছিলো। ১৯৭২ সাল থেকে এদেশের অবস্থা ভায়াবহ আকার ধারন করে। নিউমার্কেটে তাঁরা দেখেন যে সেখানকার ব্যবসা সব মারোয়ারীরা দখল করে নিচ্ছে । সাদা ধুতি পড়া লোকজন ঢাকা শহরে ভরে যায়। তাঁরা নানা সময় আওয়ামী লীগের নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে। জনাব দিলু পরবর্তীতে মুজিবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রামে অংশ নেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা । মনে হয় তিনি জাসদের রাজনীতির সাথে এক সময় জড়িত ছিলেন । তিনি বলেছিলেন তাঁরা জয় বাঙলা শ্লোগানকে ব্যঙ্গ করে বলতেন " জয় বাঙলা জয় হিন্দ লুঙ্গী ছাইড়া ধুতি পিন্দ"। এছাড়া আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপের জন্য এই শ্লোগান আজ ব্যাপকভাবে বিতর্কিত হয়ে গেছে । জয় বাঙলা শ্লোগান অনেকটা রাজাকার শব্দের সমার্থক হয়ে গেছে । জয় বাঙলা শ্লোগানের সবচেয়ে বেশি প্রচারক হিসাবে গাজী মাজহারুল আনোয়ার এর নাম সামনে চলে আসে । তিনি সম্প্রতি বিএনপির মধ্যে একটি গ্রুপের সহায়তয় বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হিসাবে একটি পদ বাগিয়ে নিতে পেরেছেন । যদিও আদর্শিক কারণে জয় বাঙলা বাংলার জয় বিএনপির জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সাথে যায় না কিন্তু তিনি প্রচার করেন যে জয় বাঙলা বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলের শ্লোগান । পরে যখন তিনি বিএনপির মধ্যে সমালোচিত হচ্ছিলেন তখন তিনি বলা শুরু করেন আমার জীবনে সবেচেয়ে বড় ভুল জয় বাঙলা শ্লোগানকে ব্যবহার করে গান লেখা। তিনি এটাও ব্লেছিলেন আমি একজন পেশাদার গীতিকার। আমি কবিদের মত বিনে টাকায় কোন কিছু লিখে দেই না। আমি টাকার বিনিময়ে গান লিখি। যেকেউ আমাকে টাকা কিংবা সুবিধা দিলে আমি সেই আদর্শ বাঁ কন্সেপ্টকে মাথায় রেখে গান লিখি। একবার তাঁর সাথে আলাপচারিতায় আমাকে বলেছিলেন " জয় বাঙলা শব্দটা আসলে আমি ব্যবহার করেছিলাম তাতক্ষনিক প্রয়োজনে । সম্পূর্ন আওয়ামী দর্শনের ধারক বাহক গাজী মাজহারুল আনোয়ার জয় বাঙলা বাংলার জয় গানের জন্য বিবিসির কাছ থেকে সম্মাননাও পেয়েছেন । তিনি আজ বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এবং তিনি আওয়ামী দর্শনে উজ্জীবিত হয়ে বিএনপির মধ্যে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ধারাকে জয় বাঙলা বলে বিনাশ করছেন ।

এছাড়া আমাদের বাংলাদেশে আবহমান কাল থেকেই জয় বাঙলা বলেতে বুঝতে থাকি নানা ধরনের বাঙলা তারি, দোচনিয়া কিংবা বাঙলা মদ খাওয়ার পর মাতালদের খিস্তি খেউড়। বেশি মাতাল হয়ে পড়লে একজন মাতাল জোড়ে বলে উঠে জয় বাঙলা । অনেক সময় সেই সব মাতালরা পিছাব পায়খানা করার পর জয় বাঙলা আও জোরে করে বলে। লৌকিক সাহিত্য , লোক সাহিত্যেও জয় বাংলার নানা নেতিবাচক ব্যবহার আমরা দেখি। যদিও স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এটি অন্যতম দেশ প্রেম মূলক শ্লোগান ছিলো কিন্তু এটি আওয়ামী লীগ ও শেখ মিজবের কারনে এর চরিত্র সম্পূর্ন নষ্ট হয়ে গেছে । এই পচে যাওয়া শ্লোগানকে আবার জীবিত করার মানেই হলো আওয়ামী লীগ চাচ্ছে দেশকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দেশে বিদেশে অনেক জনপ্রিয় শ্লোগান পরবর্তীতে খুব খারাপ মানে তৈরি করেছিলো। পাকিস্তান পন্থী নেতা শেখ মুজিব কলকাতায় বেকার হোস্টেলে বসে যখন পাকিস্তান আন্দোলনের একজন কর্মী হওয়ার জন্য নেতাদের পিছন পিছন ঘুরছিলো সেই সময় তিনি আরেকটি শ্লোগানকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করেন তা হলো " লড়কে লেঙ্গে পাকিস্থান" । এই শ্লোগান ছিলো পাকিস্থান অর্জনের জন্য । সেই শেখ মুজিদঃ ১৯৭৩ সাল থেকে জয় বাঙলা শব্দটি শুনতে পারতেন না । তিনি ১৯৭৩ সালের পর তাঁর বেশির ভাগ জন সভায় । আওয়ামী লীগ জিন্দাবাদ , শেখ মুজিব জিন্দাবাদ , বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে শ্লোগান দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন । তাঁর মানে জয় বাঙলা শ্লোগান শেখ মুজিবও প্রত্যাখ্যান করেন একটা সময় পর। একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে জয় বাঙলা শ্লোগান প্রদান করে না । বিএনপি , সমাজতান্ত্রিক দল, জামাত কিংবা অন্যান্য কোন দলই এই শ্লোগানটা ব্যবহার করে না কারন তাঁরা জানে এই শ্লোগান একটি বিতর্কিত ও ভারত প্রদত্ত ধ্বনী। আমি আশা করবো হাই কোর্ট জয় বাঙলা শ্লোগান দিয়ে তাদের প্রতিদিনের কার্যক্রম শুরু করবেন না ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৭
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×