জীবনের পূর্নতাই আসে বিয়ের মাধ্যমে। মাঝরাতে দূস্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙলে যে আপনাকে স্বান্তনা দিবে। সে আপনার বিক্ষিপ্ত সময়ে আপনাকে প্রশান্তির বার্তা দিবে।.....
একজন মানুষের জীবনে বৌ থাকার গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে যখন সে পরিবার নামক (পালন-পোষণ) বৃত্ত থেকে মুক্ত হবে। এই বৃত্তটি সাময়িক সময় পর্যন্ত আপনাকে আগলিয়ে রাখবে। অদূর ভবিষ্যতে প্রয়োজন পড়বে একজন জীবন সঙ্গিনীর। যে সুখে দুঃখে সর্বদাই আপনার ছায়া হয়ে পাশে থাকবে। মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদি সবাই একটা মাত্রা/সীমা পর্যন্ত আপনাকে সহযোগিতা করতে পারবে; সর্বক্ষেত্রে নয়। ঠিক এর বিপরীত কোন সীমানাই/বাঁধা যে বন্ধনের মধ্যে নেই সেই বন্ধনই হচ্ছে 'বৈবাহিক বন্ধন'।
এমন কিছু নেই যা নিজের বৌয়ের সাথে শেয়ার করা যায় না।
.
স্বামী-স্ত্রী,সন্তান-সন্ততি,পিতা-মাতা,ভাই-বোন প্রভৃতি একান্নবর্তী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা মানব পরিমণ্ডলকে পরিবার বলে। মানব জীবনের যাত্রা থেকেই এই পরিবার সূত্রের শুভ সূচনা। আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-এর মাধ্যমেই এর প্রথম বিকাশ।
সন্দেহ নেই যে, পরিবারের প্রথম বিন্যাস ছিল স্বামী-স্ত্রীর মাধ্যমে। তারপর তা ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করেছে।
.
পৃথিবীর সকল মানুষকে আল্লাহ তায়ালা নারী-পুরুষ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর বেঁধে দিয়েছেন দয়া ও মায়ার বন্ধনে। বিয়ে একজন সুস্থ মানুষের প্রাকৃতিক প্রয়োজন। মানুষের স্বভাবগত পরিচ্ছন্নতা, মানসিক ভারসাম্যতা ও চারিত্রিক পবিত্রতার অন্যতম উপায় বিবাহ।
.
আল্লাহ তায়ালা সূরা রূমে উল্লেখ করেছেনঃ
''আর মহান আল্লাহর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে,তিনি তোমাদের জন্যই তোমাদের থেকেই তোমাদের সঙ্গিনীদেরকে সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা তাদের নিকট শান্তি পাও এবং সৃষ্টি করেছেন তোমাদের মধ্যে পরস্পরে ভালবাসা ও দয়া।"
.
ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ে-শাদির ফযিলত অনেক। বিবাহের প্রতি উৎসাহিত করে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনঃ
"যে ব্যক্তি পূত-পবিত্র অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে চায় সে যেন আযাদ নারীর প্রণয়বদ্ধ হয়।"
.
উপরোক্ত আলোচনা থেকে ইহাই বোধগম্য হচ্ছে যে, সৃষ্টির সূচনাই যেখানে মানব-মানবী দ্বারা সেখানে মানবী দ্বারা নিজের জীবনকে কিভাবে পরিচালনা করা সম্ভব ! বাস্তবিক দুটি শরীর হলেও এ যে একটি 'আত্মা'......
কিন্তু দুঃখের বিষয় শরীর থাকলেও আত্মা এক হতে পারছে না। খন্ড হয়ে বাস করছে আলাদা প্রান্তে। আসলে আমরা বিয়েকে যতটা না চারিত্রিক পবিত্রতা হিসেবে দেখছি তার থেকে বেশির ভাগ মানুষ দেখছে সামাজিক দায়বদ্ধতা হিসেবে। মেয়ে অবিবাহিত অবস্হায় ঘরে থাকলে মানুষ খারাপ বলবে, ছেলের বিয়ে না হলে বংশধর আসবে না ইত্যাদি ইত্যাদি কারনেই আমাদের সামাজিক বিয়ে গুলো হয়। খুব কম বাবা-মা ই বিয়ে হলে ছেলে মেয়ের চরিত্র ভাল থাকবে এটা চিন্তা করে বিয়ে দেয়।
আর ছোট বেলা থেকে ক্যারিয়ার নামক মরিচিকার বিষ বাষ্প এমন ভাবে মাথা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে যাতে অনেকে চরিত্রের উন্নয়ন করার কথা ভাবতেও পারে না। বিয়ে নামক জিনিসটার থেকে নিষিদ্ধ কর্মই অধিক প্রিয়। সবাই ক্যারিয়ার গঠনে ব্যস্ত, এদিক থেকে যে চরিত্র গোল্লায় যাচ্ছে তার দিকে কারো খেয়াল নেই। লাজ-লজ্জার বালাই ঠেলে কেউ যদি বলেও বসে কখনো তাহলে তার আর রক্ষে নেই……………পরিবার থেকে শুরু করে আশেপাশের মানুষের কত্তত্ত কথা শুনতে হবে তার ইয়াত্তা নেই।
.
আমরা লোকের কথা খুব ভয় পাই……..যতটা আল্লাহকে পাই তার থেকেও। তারপরও চরিত্রেকে নির্মল পবিত্র রাখার জন্য হলেও বিয়ে করুন, আর নিজে না করতে পারলেও যদি অন্য কেউ করে তাকে সহযোগীতা করতে না পারলেও তিরস্কার করবেন না। বিয়ে মানুষকে আর কিছু করুক না করুক………পবিত্র রাখতে এবং দায়িত্বশীল হতে সাহায্য করবেই। ইনশাআল্লাহ।
ছবি সূত্রঃ ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৭