somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিল্লীর তাবলীগী আমীর মাওলানা সাদের ব্যাপারে ২য় বার অবস্থান পরিষ্কার করল ‘দারুল উলুম দেওবন্দ’: বারংবার ভুল করেন মাওলানা সাদ

২১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দারুল উলুম দেওবন্দ মাওলানা সাদ কান্ধলভির ব্যাপারে নতুন ঘোষণা দিয়েছে। ঘোষণায় দারুল উলুম দেওবন্দ তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার ঘোষণা দিয়েছে।

দারুল উলুম দেওবন্দের ঘোষণায় বলা হয়েছে, হজরত মুসা আ. এর ঘটনার ব্যাপারে মাওলানা মুহাম্মদ সাদ এর রুজু ঘোষণার পর বিগত ক‘দিন ধরে দেশ-বিদেশের অনেকেই দারুল উলুম দেওবন্দের অবস্থান জানতে নিয়মিত প্রশ্ন করে করে যাচ্ছেন।

যার প্রেক্ষিতে এ কথা স্পষ্ট করা প্রয়োজন যে, শুধু মুসা আ. ঘটনার ব্যাপারে মাওলানা সাদ-এর রুজুনামা আশ্বস্ত হওয়ার মতো। কিন্তু দারুল উলুম দেওবন্দের [পূর্ব ঘোষিত] অবস্থানে মাওলানার যেই আদর্শিক গুমরাহির ওপর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল, তা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়া সম্ভব নয়।

কারণ, একাধিকবার রুজু করার পর তাৎক্ষণিকভাবে মাওলানা সাদ এমন বয়ান করেন যাতে আগের মতই ইজতিহাদসুলভ ভঙ্গি, ভুল দলিল উপস্থাপন ও দাওয়াত সম্পর্কে তার নিজস্ব চিন্তাধারার ওপর কুরআন-সুন্নাহর ভুল প্রয়োগ দেখা গেছে।

যার কারণে শুধু দারুল উলূম দেওবন্দ সংশ্লিষ্ট উলামায়ে কেরামই নন; অন্যান্য হকপন্থী আলেমগণও মাওলানার সামষ্টিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে চরম অনাস্থা প্রকাশ করেছে।

আমরা মনে করি, আকাবিরদের চিন্তা ও আদর্শ থেকে সামান্য বিচ্যূতিও তীব্র ক্ষতির কারণ। মাওলানাকে অবশ্যই নিজ বয়ানে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পূর্বসূরীদের পথ এড়িয়ে শরিয়তের ভাষ্য থেকে নিজস্ব (মতমতো) ইজতিহাদের এই ধারাবাহিকতা বন্ধ করতে হবে। কেননা মাওলানার এই মূলচ্যূত ইজতিহাদ দেখে আমাদের মনে হচ্ছে, আল্লাহ না করুন! তিনি এমন একটি দলের সৃষ্টি করছেন, যা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ; বিশেষত আমাদের পুণ্যাত্মা পূর্বসূরীদের মতাদর্শ বিরোধী হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে আকাবির-আসলাফের পথের ওপর অবিচল রাখুন। আমিন।

যারা দারুল উলূম দেওবন্দের কাছে বারবার শরণাপন্ন হচ্ছেন, তাদের পুনরায় বলা হচ্ছে তাবলিগ জামাতের অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের সঙ্গে দারুল উলূমের কোনো সম্পর্ক নেই।

প্রথম দিন থেকেই আমরা সেই ঘোষণা জানিয়ে আসছি। তারপরও যখনই কারো ভুল চিন্তাধারা ও মতাদর্শ সম্পর্কে দারুল উলূমকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে দারুল উলুম সবসময় উম্মাহকে পথ দেখানোর চেষ্টা করেছে। এ কাজকে দারুল উলুম নিজের ধর্মীয় ও শরয়ি দায়িত্ব মনে করে।

ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছেন, মুফতি আবুল কাসেম নুমানি ১৩ জুমাদাল উলা ১৪৩৯ হিজরি। মাওলানা আরশাদ মাদানিও মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরি।

উল্লেখ্য, তাবলিগ জামাতের অন্যতম মুরব্বি ও দিল্লি মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির নেতৃত্ব ও তার কিছু বক্তব্য নিয়ে তাবলিগের ভেতর ও বাইরে অসন্তোষ চলছে বেশ ক’বছর ধরে। দারুল উলুম দেওবন্দ ও উলামায়ে কেরাম তার নেতৃত্বকে তাবলিগ জামাতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে এড়িয়ে গেলেও তার বক্তব্যের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে শুরু থেকেই।

বিশেষত হজরত মুসা আ. এর ব্যাপারে তার বক্তব্যের ব্যাপারে জোর আপত্তির কথা জানায় দারুল উলুম দেওবন্দ। দেওবন্দের আপত্তির প্রেক্ষিতে মাওলানা সাদ একাধিকবার রুজু (বক্তব্য প্রত্যাহার) করার ঘোষণা দেন এবং দেওবন্দের কাছে চিঠি লিখেন। কিন্তু দারুল উলুম দেওবন্দ তাকে অস্পষ্ট আখ্যা দেয় এবং তাকে প্রকাশ্য ঘোষণা দেয়ার দাবি জানায়।

সেমতে মাওলানা সাদ প্রকাশ্য ঘোষণাও দেন। কিন্তু রুজু করার সাথে সাথে একই ধরনের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন। ফলে তার রুজুর ব্যাপারে সংশয় তৈরি হয় দারুল উলুমসহ অন্যান্য দীনি প্রতিষ্ঠানের উলামায়ে কেরামের। দারুল উলুমের নতুন ঘোষণায় সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।

অন্যদিকে মাওলানা সাদের বাংলাদেশের টঙ্গী ইজতেমায় অংশগ্রহণ নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ, দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ ও গুজরাট সফর করেন। বাংলাদেশের এ প্রতিনিধি দল নির্বাচন করেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

প্রতিনিধি দলের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দেশের শীর্ষ আলেমগণ পরামর্শ করে মাওলানা সাদ এ বছরের ইজতেমায় অংশ নিতে নিষেধ করেন। তবে তার প্রতিনিধি পাঠানোর কথা বলেন। কিন্তু উলামায়ে কেরামের মতামত উপেক্ষা করে তিনি বাংলাদেশে এলে উলামায়ে কেরাম ও সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ বিমানবন্দর ঘেরাও করে তার প্রতিবাদ জানান। অবশেষে ইজতেমায় অংশগ্রহণ না করে কাকরাইল মসজিদ থেকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

এ ঘটনার কয়েক সপ্তাহ না যেতেই দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে নতুন এ ঘোষণা আসলো।


‘রুজুর পর পুনরায় ভুল করে বসেন মাওলানা সাদ’
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:২৯
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×