somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ কিছু পর্যালোচনা।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয় হচ্ছে নারী উন্নয়ন নীতি মালা ২০১১। দেশের ধর্মপ্রাণ আলেমগণ বলতেছেন এতে অনেক কুরআন হাদীস বিরুধী ধারা রয়েছে। আর সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে তাতে কুরআন হাদীস বিরুধী কোন ধারা নেই। ইতিমধ্যেই আলেম দের পক্ষ থেকে কি কি ধারা কুরআন বিরুধী তা বলা হয়েছে, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন জবাব পাওয়া যাচ্ছেনা। নিম্নে আলেমগণ যে ধারা গুলিকে কুরআন হাদীস বিরুধী বলে আখ্যায়িত করেছেন তার কিছুটা প্রকাশ করা হল।
*১৬.১ এ বলা হয়েছে। “বাংলাদেশে সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রীয় ও গণ জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমতা প্রতিষ্টা করা।”
পর্যালোচনা:
পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে জাতীয় জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমতা প্রতিষ্টা করা সম্ভব হলেও সর্ব ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। বরং সর্বক্ষেত্রে সমতা বিধান করলে নারীরা অনেক ক্ষেত্রে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে এবং আর্থিক দায়ভার নিজেই বহন করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠা সম্ভব না হওয়ার কারণ হচ্ছে ইসলামের দৃষ্টিতে (ক) কিছু ক্ষেত্রে নারী, পুরুষের চেয়ে ক্ষমতার উর্ধ্বে (খ) কিছু ক্ষেত্রে পুরুষ, নারীর সমতার উর্ধ্বে (গ) এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে উভয়ে একই সমতায় অবস্থিত।
পবিত্র কোরআনে বিষয়টিকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে:
ولهن مثل الذى عليهن بالمعروف وللرجال عليهن درجة والله عزيز حكيم অনুবাদ “ন্যায়সংগত ভঅবে নারীদের আছে পুরুষদের উপর তেমন অধিকার যেমনটি আছে তাদের উপর পুরুষদের অধিকার। তবে নারীদের উপর পুরুষদের মর্যাদা আছে এক ধাপ বেশি। আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।” সুরা:২ আয়াত:২২৮, আরো দ্র: সু:৪২ আ:২৭, সু:৪৩আ:৩২,
এমতাবস্থায় জাতীয় জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্টা সম্ভব হলেও সর্বক্ষেত্রে কখনো সম্ভব নয়। বিধায় এ ধারাটি উপরোক্ত আয়াত সমুহ সহ বহু আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক।
আলেমগণ এই ধারাটি সংশোধন করার প্রস্তাব দিয়েছেন এই ভাবে। “ধর্মীয় অনুশাসনের আলোকে জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারী পুরুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্টা করা।
*ধারা ১৬.৮ এ বলা হয়েছে ” নারী পুরুষের বিদ্যমান বৈষম্য নিরসন করা”
পর্যালোচনা:
অনুচ্ছেদের বক্তব্য অস্পষ্ট। নারী-পুরুষের মাঝে প্রকৃতিগত, স্বভাবগত, সৃষ্টিগত, দৈহিক ও আইন গত এমন সব তারতম্য ও ভিন্নতা রয়েছে যা দূর করা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। দেখুন (সু:৪২আ:২, সু:৪৩আ:৩২, সু:৪আ:৩২)
অতএব এ ক্ষেত্রে কোন্ কোন্ বৈষম্য দূর করতে হবে তা চিহ্ণিত করা হয়নি। বিষয়টিকে এভাবে বিশ্লেষণ করা যায় যে, মহান আল্লাহ নারী-পুরুষকে কখনো সমান রূপে সৃষ্টি করেন নি। বরং সৃষ্টিগত ভাবেই তাদের মাঝে পার্থক্য বিদ্যমান। যেমন নারী-পুরুষের গতিপ্রকৃতি, খাদ্যাভ্যাস, রুচি, শখ, শারিরীক গঠন এক নয়। যেহেতু নারী-পুরুষ সৃষ্টিগতভাবে সমান নয় তাই তাদের দায়িত্ব, কর্তব্য ও কর্মক্ষেত্র এক নয়। যেমন পুরুষ প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন করবে এবং উপার্যন করবে। আর নারীগণ সংসার/ পরিবারের দায়িত্ব পালন করবে। সন্তান ধারণ, সন্তান প্রসব, ও লালন পালন করবে। তার বিপরীতে পুরুষের পক্ষে যেমন সন্তান ধারণ সম্ভব নয়, তেমনিভাবে নারীর পক্ষেও প্রতিরক্ষাসহ পুরুষের কঠিন কাজগুলো কর সহজসাধ্য নয়। দায়িত্ব অনুপাতে অধিকার লাভ হয়। অধিকার সমান করতে হলে দায়িত্ব ও সম বন্টন করতে হয়। সংগত কারণেই মুসলিম সমাজে, মানব সভ্যতায় মেয়ে অপেক্ষা ছেলের দায়দায়িত্ব বেশি। অতএব নারী-পুরুষের মাঝে বিদ্যমান বৈষম্য নিরসন করা অসম্ভব, অযৌক্তিক। এছাড়াও উপরোক্ত ধারাটি কুরআনে কারীমের সুরা বাকারা ২২৮, সুরায়ে নিসার ৩৪ নং আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক।
উল্লেখ্য উপরোক্ত ধারায় বিদ্যমান বৈষম্য বলতে যদি অন্য কিছু বুঝায় তা সুস্পষ্টভাবে নীতিমালায় উল্লেখ থাকা জরুরী।
আলেম গণ মনে করেন উপরোক্ত ধারাটির সংশোধন এভাবে করা যেতে পারে। নারী পুরুষের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য কুরআন ও সুন্নাহ/ প্রত্যেক ধর্মের অনুশাসনের আলোকে নিরসন করা। (চলবে)
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×