আসন্ন বর্ষায় আমার নানাবাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইলে
চপই মেরেঙ্গা গ্রামে একজন গফুর ও আমিনা
নামহীন এক মহেশকে নিয়ে ঘোরতর বিপদে পড়বে।
আসন্ন বর্ষায় কিশোরগঞ্জের নীলগঞ্জে এক দরিদ্র পাড়ায়
একজন কুবেরের সংসারে পড়বে ভাতের টানাটানি
মালা ও গোপীদের জীবনে আরো দুর্ঘট বাড়বে।
কিন্তু এইসব কথা কবিতা বা গদ্যে আমরা লিখবো না।
আমরা বরং করবো মোহনীয় রহস্য রচনা;
করবো খামখেয়াল।
কপিলার কথা টেনে এনে পাঠকের দিকে
প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে আমি লিখবো: এমন ঘোর বৃষ্টির দিনে
‘পাখির নীড়ের মতন চোখ তুলে’ কপিলা যদি বলেন
‘আমারে নিবা মাঝি লগে’ আপনি তবে কী করবেন
হে বিবাহিত কপোর্রেট কুবের?
অথবা আমি হয়তো লিখবো: ‘আজি ঝর ঝর
মুখর বাদল দিনে’ সুরঞ্জনা, আমাকে ছেড়ে
‘কী কথা তাহার সাথে’? ‘তার সাথে’!
অথবা উদ্ধৃতি চিহ্নের ধার না ধেরেই স্ট্যাটাসে লিখবো:
‘যে যার ভূমিতে দূরে দূরে
চিরকাল থেকে ভাবে মিলনের শ্বাসরোধী কথা’।
অথবা লিখবো: আষাঢ়ী পূর্ণিমার টানে
এবার হাওরে যাবো। ঘোরলাগা আলোর নিচে
ট্রলারের ছাদে কাটাবো পাগল রাত্রি।
চারিদিক থাকবে শুনশান। তারই মধ্যে
ঘুঘুর ডাকের মতন বেজে যাবে
নেশাতুর বাঁশি। ট্রলারে, হেঁসেলের ফ্রিজে
পড়ে থাকবে রেড ওয়াইনের বোতল,
আমি তা ছুঁয়েও দেখবো না;
তবু প্রাণ ভেসে যাবে মদীরায়।
ঘোরলাগা আলোয় আমার মনে হবে,
চাঁদের বুকে একটা হুক দেখা যাচ্ছে।
সেই হুকে আমি ঝুলে যাবো পরম সুন্দর;
তবে কিনা, ঝুলে যাবার ঠিক মুহূর্ত আগে
আমার চোখে অকস্মাৎ ভেসে উঠবে
তোমার কণ্ঠার কাছে জাগ্রত প্রিয় তিল।
তখন অকারণেই মন বলবে,
যতই তুমি বিবাহিত হও না কেন
আমার তিরোধানের পর থেকে সকল পূর্ণিমায়
আমৃত্যু তুমি ইন্দ্রানী সেনের গলায় শুনবে:
‘আমারে যে জাগতে হবে
কী জানি সে আসবে কবে
যদি আমায় পড়ে তাহার মনে
বসন্তের এই মাতাল সমীরণে।
আজ জোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে’।
২৮.০২.১৮
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৪২