ঘোর কলিকাল উপস্থিত। প্রভুর প্রতি মানুষের বিশ্বাস কমে গেছে। পুজারীরাও এখন আর আগের মত পুজা অর্চনা করেনা। প্রভু দ্বিধায় পড়ে গেলেন। চিত্রগুপ্তকে ডেকে এর একটা বিহিত করাবার জন্য আজ্ঞা দিলেন।
মাথা চুলকিয়ে চুল তুলে ফেলার জোগাড় করল চিত্রগুপ্ত তবু কোন উপায় পাওয়া যাচ্ছেনা। ঈশ্বরের কানে কানে কিছু কুমন্ত্রণা দেয়ার লোভ সামলাতে পারলনা বেচারা। বর্জ্র, সুনামী, বন্যা, ভূমিকম্পের মত করে কিছু হুমকি ধামকি দেবার কথা বলল প্রভুকে। এতেও কাজ না হলে বিদ্যুতের তার আউলাইয়া দেয়া, গুম কইরা ফেলা, খুন কইরা ফেলা, রাস্তায় সবার সামনে মাইর দেয়া সহ নানাবিধ উপায় প্রভুকে বাতলানো হলো। প্রভু এগুলোর সবই একে একে প্রয়োগ করিলেন।
কিন্তু বিধিবাম। এইবার মানুষ এমন খ্যাপা খ্যাপছে যে তারা কোন কিছুতেই প্রভুর নিন্দা হইতে বিরত থাকিতে পারিতেছেনা। কোন যাদুমন্ত্রবলে তারা এত উজ্জীবিত হইয়া প্রভুর নিন্দা করিতেছে তাহা কাহারো বোধগম্য হইতেছেনা। প্র্রভু এইজন্য নাস্তিকদিগকে দোষ দিলেন। উহারা নিজেরা অবিশ্বাস তো করেই পুজারীদেরও তাহাদের দলে ভিড়াইয়া লইয়াছে। উহাদিগকে মারিয়া ফেলার কোন বিকল্প তিনি দেখিলেন না।
বেশুমার মানুষ মরতে লাগল। তবু প্রভুর প্রতি মানুষের আস্থার কোন উন্নতি হইতেছেনা দেখিয়া প্রভু তার স্বর্গীয় উদ্যানে দেবতাদের একটা মিটিং ডাকিলেন। তাহাদিগকে বলিলেন, এখানে একটা জরীপ চালানো হইবে। আমি দেখিতে চাই আমার প্রতি তোমাদের আস্থা কতটুকু আছে। জরীপে দেখা গেল ৮০% দেবতাই ভগবানের উপর আস্থা রাখিয়া চলিয়াছে।
ইহাতে ধূর্ত চিত্রগুপ্তের মাথায় একটি বুদ্ধি ঝিলিক খেলিয়া গেল। সে প্রভুকে বলিল, ইউরেকা। প্রভু আপনার বিপদ আসান হইয়াছে। আর আপনাকে চিন্তা করিতে হইবেনা। এই জরীপের ফলই পৃথিবীর মানুষের মইধ্যে প্রচার করার ব্যবস্থা করুন যে, আপনার প্রতি ১০০% মানুষেরই আস্থা রহিয়াছে। ৫১% সমর্থন নিয়া যদি দেশে দেশে সরকার গঠন সম্ভব হয় তাইলে আপনার প্রতি ৮০% সমর্থনকে ১০০% বলতে তো দোষ হইবে কেন ?
প্রভু বলিলেন কিন্তু উহারা তো আর মানুষ না। সবাই দেবতা।' চিত্রগুপ্ত বলিল, আপনাকে কে বলিতে বলিয়াছে যে জরীপে অংশগ্রহণ কারী কারা ছিল। শুধু বলিয়া দিলেই চলিবে যে,পৃথিবী থেকে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে কিছু মানুষ বাছাই করে এই জরীপ চালানো হইয়াছে। প্রভু খুশীতে নাকে তেল দিয়া ঘুমাইতে চলিয়া গেল।
বি.দ্র. প্রভুর নাকে দেয়া তেলে কোন কোন বদমাইশ কিভাবে যেন ভেজাল মিশাইয়া দিয়াছিল।