somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ মেঘ বালিকার বিয়ে..........

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রায় ৪ মাস যোগাযোগহীন অবস্থার পর অবশেষে ছোট্ট একটা টেক্সট আসল, যেটায় লেখা:
আজ আমার বিয়ে। এখন নিশ্চয়ই আমার এগেইনস্টে কোন অভিযোগ নাই কারো....
ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না, এমন টেক্সটের বিপরীতে কি করা উচিত আমার। খুশি আমি কখনোই হতে পারবনা, দুঃখী হওয়া আমার সাজে না। আর বাকী থাকে অভিযোগ, সেটা কার কাছে করব? কেনই বা করব?

মেঘ বালিকার সাথে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল বছর দশেক আগে হবে হয়তোবা। সেই প্রথম, সেখানেই শেষ। এরপর আর কখনোই দেখা হয় নাই। আমরা দেখা আর করি নাই। নিজেদের চাওয়া পাওয়া গুলোর সাথে একরকম আপোষ করে ফেলেছিলাম। আমি ছিলাম পাগল আর সে আরেকজনের বাগদত্ত্বা। দেখা না হলেও কথা হত আমাদের। সে অনেক অনেক কথা। এরপর একদিন তার সে, তার কথা বলাও বন্ধ করে দিল। জীবন থেকে হারিয়ে গেল 'মেঘ বালিকা'। আর কোন কথা নেই, ছিল না যোগাযোগও।

তারপর একদিন, বন্ধু মতিয়ুর ও তার ভাগ্নী রুমানা। রুমানার সাথে কয়েকদিনের কথোপকথনে, তার নিবেদিত ভালবাসাকে অগ্রাহ্য করার হিম্মত আমার মাঝে ছিল না। মেঘ বালিকাকে ভোলার ব্যার্থ প্রয়াস নিয়ে শুরু হল আমাদের অমর প্রেমগাঁথা। সময় নিয়েছিল পুরো সাত বছর। মেঘ বালকাকে ভূলে আমি গিয়েছিলাম ও। আমার সর্বস্বঃ বিসর্জন দিয়ে পাগলের মত ভালবাসা শুরু করেছিলাম রুমানাকে। যেন সে-ই শুরু, সে-ই শেষ। মাঝ খানে আর কিছু নেই। বিবাহের বন্ধন দ্বারা আইনসিদ্ধি ছিল শুধু সময়ের ব্যাপার। আর একদিন! হঠাত করেই রুমানার পুরান প্রেমিকের আবির্ভাবে লন্ড-ভন্ড, ওলট-পালট হয়ে গেল জীবন-জগতের সব কিছুই।
৬ মাসের শত কান্না চেষ্টা করেও রুমানাকে আমি ধরে রাখতে পারি নাই। তার পুরান প্রেমিকটির পায়ে পর্যন্ত ধরেছিলাম পথের কুকুরের মত। সে শোনে নাই, রুমানাও না। শুধু একটা দীর্ঘশ্বাসকে সঙ্গী করে তাদের সুন্দর ভবিষ্যত হতে বের হয়ে আসি। যেন বিষ পান করে ফেলেছিলাম। কোথাও কোন শান্তি নেই। মনের কথা গুলো যেন কত্তদিন কাউকে বলা হয় না। একটাবার দেখবার জন্য পাগল হয়ে উঠতাম। আমি ডুকরে ডুকরে কাঁদি। আমি দেয়ালে মাথা ঠুকে মরি। কান্না শোনবার কেউ নেই।

খুব কষ্ট করে দুটো খুন করবার ইচ্ছাটাকে চাপিয়ে বিবাহের দিকে মনযোগী হই। এটাই হয়তোবা সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিশোধ যার উপর কিছু নাই। আমার ও একজন সঙ্গী চাই।

সাত বছর পর আবারো মেঘ বালিকার সাথে কথা হয়। কুশলাদি বিনিময় হয়। আর কিছুই নয়।

বিবাহ পূর্ব সময়গুলো বাগদত্ত্বা শারমিনের সাথে বেশ ভালই কাটছিল। পুরো তিন মাস। ঢাকা শহরের এই গলি সেই গলি, এক জোড়া কপোত কপোতি আর একটা মোটর সাইকেল। আমি যেন নতুন প্রেমিক।

বিয়ের ঠিক তিন দিন আগে কি এক অজানা কারনে শারমিন রা বিয়েটা ভেঙ্গে দিয়েছিল। তাকে আর মানাতে পারি নাই, বোঝাতে পারি নাই তার পরিবারকেও। হতভাগ্য আমি ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম শারমিনদের বাড়ির গেটের বাইরে। তারা ঢুকতে দেয়নি। কথাও বলতে দেয়নি শারমিনের সাথে। ভাগ্য মেনে নিয়ে সেদিনই শারমিনকে আমি ভূলেছিলাম এবং পরদিনের শারমিনের তুমুল আকুতিও আমার কানে পৌছায় নাই।

রীতিমত না দেখে তড়িঘরি করে আমার স্ত্রীর সাথে নির্ধারিত দিনেই আমি বিবাহে আবদ্ধ হই। গ্রাম দেশের মাথায় ছিল, মান ইজ্জ্বতের বারতা, বিয়ের থেকে বেশি ছিল সমঝোতা এক্সপ্রেসে টিকেট কাটা, যার নেপথ্যে ছিল শুধুই প্রতিশোধ পরায়নতা।

আমার বিয়ের পর, আবারো মেঘ বালিকার সাথে কথা শুরু হল। সে যার বাগদত্ত্বা ছিল সে তাকে অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছিল খবরটি শুনে আফসোসের সীমা ছিল না। একে অপরকে দোষ দিয়ে শুরু হয়েছিল আবারো আমাদের কথা বলা। মোবাইলে, ভাইবারে, হোয়াটসএপে। শত চেষ্ঠা করেও আমরা দুজন আমাদের কথা আর ঠেকাতে পারছিলাম না। পাগল হয়ে গিয়েছিলাম আমরা যার কোন সীমা ছিল না। আমরা আমাদের পুরাতন সময় গুলোকে ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম। এবার আমি ছিলাম বিবাহিত আর সে পাগল। কিন্তু আমাদের দেখা হল না কখনোই। এভাবে ৬ মাস। সে আমাকে সংসারী আর আমি তাকে বিয়ে করতে উপদেশ শুধু দিয়েই যেতাম কিন্তু কেউই তা চাইতাম না। এরপর একদিন শত চেষ্ঠাতে সকল যোগাযোগ বন্ধ।

তারপর আজ, হঠাত করেই তার টেক্সট মেসেজটি। ছোট্ট করে ইংরেজীতে উত্তর দিলামঃ Congrates. Wishing a very very happy married life.......

ইংরেজী ভাষাটাও কি অদ্ভূত তাই না! জীবনের কত্ত কত্ত জটিল সমীকরনগুলোকে খুব সহজেই হালকা করে দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩০
৩৮টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×