আপনার কোন ছবি আগে দেখেছি বলে মনে পড়ছেনা। টেলিভিশনে আমাদের দেশের যে সকল সিনেমা সম্প্রচারিত হয়, সাধারণত দু-একটা ব্যতিক্রম ছাড়া সেগুলোর পরিচালকের নাম কেউ তেমন একটা মনে রাখেনা অথবা লক্ষ্য করেনা। আমাদের চলচ্চিত্রকে এই সময়ে আমরা তেমন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারি নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু ভালো ছবি যেমন ‘অন্যরকম ভালোবাসা’, ‘জটিল প্রেম’, ‘পোড়ামন’ নির্মিত হওয়াতে অনেকেই আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। নতুন শিল্পীদের মধ্যে কারো কারো অভিনয়েও যথেষ্ট পরিপক্কতার ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যে বিষয়ে আজকের এই লেখার অবতারণা, তা হচ্ছে আমাদের সোনালী দিনের চলচ্চিত্র জগতকে নতুন রুপে ফিরিয়ে আনা এবং চলচ্চিত্রকে বিশুদ্ধ বিনোদনের অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমে পরিণত করা। আমরা চাইনা আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পে আবার সেই অন্ধকার যুগ ফিরে আসুক। আমরা চাই চলচ্চিত্রের ধ্বংসস্তূপ থেকে আবার নতুন শিল্পধারার জয়যাত্রা সূচীত হোক। একটা কথা দিবালোক, তাহল পোশাকের শালীনতা মার্জিত রুচী ও সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ। সত্যি বলতে ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিই হচ্ছে শালীন পোশাক। এর ব্যত্যয় যেখানে ঘটে সেটা, সেই সংস্কৃতি আমাদের নয় অন্যকোন সভ্যতার। জোর করে তাকে এখানে বসাতে গেলে অনাকাংখিত দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নব্বই ভাগ মুসলমানের এই দেশে প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা শুরু হয় আল্লাহর নাম নিয়ে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে খোলামেলা পোশাককে যতটা সহজে গ্রহণ করেছে আমাদের ক্ষেত্রে সংগত কারণেই সেটা সম্ভব নয়। যদিও খোলামেলা পোশাক নিয়ে ভারতেও বিভিন্ন সময় সমালোচনা হয়েছে, হচ্ছে। ভারতীয় সংস্কৃতির অনেক কিছুই আমাদের সাথে মিলবেনা। বিভিন্ন কারণেই আমি ভারতের সমালোচনা করি, তবে অন্ধভাবে যারা ভারত বিরোধীতায় মত্ত আমি তাদেরকেও সমালোচনার পাত্র মনে করি। আমির খানের ‘লাগান’, ‘রাঙ দে বাসন্তী’, ‘ফানা’, ‘তারে যামীন পার’, ‘থ্রি ইডিয়টস’ অসাধারণ সব ছবি। তেমন কোন অশালীন দৃশ্য ব্যবহার না করেও ছবিগুলো অসাধারণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আর ব্যবসা সফলতার কথা বলাই বাহুল্য। অতএব, পোশাকের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ বিবেচনায় চলচ্চিত্রের সফলতার মাপকাঠি নির্ধারণ করা মস্তবড় অসতর্কতার পরিচয় হবে। সহজ কথা হল, আমরা আমাদের চলচ্চিত্র অভিনেত্রীদেরকে অস্বাভাবিক সংক্ষিপ্ত অথবা অনাকাঙ্ক্ষিত সংকুচিত পোশাকে দেখতে চাইনা। আমরা এমন স্লোগানও শুনতে চাইনা ‘নগ্নতাই অশ্লীলতা নয়’। এই স্লোগান আমাদের জন্য নয়। অতএব, পি এ কাজল আপনি আপনার নতুন ছবি ‘ভালোবাসা আজকাল’ বিষয়ে সতর্ক হোন। চলচ্চিত্রের নির্মানশৈলীর প্রতি বেশি গুরুত্ব আরোপ করুন। অযথা দর্শকের কুৎসিত গালির সামনে নিজেকে উপস্থাপন করবেন না। অভিনেতা অভিনেত্রীদেরকে সম্মানিতভাবে উপস্থাপন করুন। তাদেরকে প্রদর্শনীর বস্তু বানাবেননা। নিজেকেও অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। অপার সম্ভাবনার এই শিল্প যার দর্শক মূলত আট থেকে চল্লিশ বছর বয়সের লোকজন। অতএব সব বয়সীদের কথা বিবেচনায় রেখে চলচ্চিত্র নির্মান করলে সবাই উপকৃত হবে। আর কোন কুচক্রী মহল যেন আমাদের এই শিল্পকে গলা টিপে হত্যা করতে অগ্রসর না হতে পারে, সেজন্য আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।
পি এ কাজল, আপনি ভালো থাকবেন। আপনাদের সকলের জন্য শুভ কামনা রইল।
এই লেখা যারা পড়ছেন, তাদের একজনও যদি পি এ কাজলের কাছে লেখাটা পৌছে দিতে পারেন, তবে তার জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা থাকবে।
ভালোবাসি বাংলাদেশ
বেকার যুবক