বাংলাদেশের একজন বাজাইরা মন্ত্রীর কাল্পনিক সাক্ষাতকার ছাপানো হল।
এই মন্ত্রীকে সবাই চেনেন। নাম তার কান-নেই ফারাক্কা বান (কর্ণেল ফারুক খান)
সাংবাদিক এবং ফারাক্কা বান
সাংবাদিক: ষাড় কেমন আছেন?!!
ফারাক্কা বান: খুবই ভাল আছি। এতো ভাল আগে কখনো থাকি নাই।
সাংবাদিক: কেমন ভাল ষাড়?
ফারাক্কা বান: এই যে কোন টেনশন নেই। খাই দাই আর তোমাদের মতো সাংবাদিকদের সাক্ষাতকার দিই।
সাংবাদিক: ষাড় আপনার কোন কাজ নেই? আপনি বাংলাদেশের একমাত্র বাজাইরা মন্ত্রী (বানিজ্য)। তার পরও কি বলবেন আপনি কাজ করেন না।
ফারাক্কা বান: আমার কাজতো বিএনপি করে। কেন প্রধানমন্ত্রী সে দিন বললেন না? দেশের দ্রব্যমূল্য বিরোধীদল নিয়ন্ত্রণ করছে।
সাংবাদিক: ও আচ্ছা ষাড়। তো মন্ত্রী হিসাবে সর্বনিম্ন কাজটা আপনার কি?
ফারাক্কা বান: বসে বসে বিভিন্ন কোম্পানীকে বিনা টেন্ডারে কাজ পাইয়ে দেওয়া। আর তাদের কাছ থেকে বকশিস নেওয়া। যেমন সামিটকে কোটি কোটি টাকার কাজ দিয়েছি।
সাংবাদিক: ষাড় বর্তমান বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু বলেন।
ফারাক্কা বান: কোন বাজার শেয়ার না চাল ডালের বাজার?
সাংবাদিক: ষাড় আগে চাল ডালের বাজার সম্পর্কে বলুন।
ফারাক্কা বান: নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যের মূল্য মানুষের হাতে নাগালে আছে। ঢাকার যেকোন বহুতল ভবনের ছাদে দাড়াঁলে অনায়াসে পায়ের নিচে চেয়ার দিয়ে দ্রব্যমূল্য ছুঁতে পারবে। আমি বলব দেশে বর্তমান চাল ডালের মূল্য শায়েস্তা খাঁর আমলের চাইতে অনেক ভাল।
সাংবাদিক: ষাড় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে আপনারা বলেছিলেন ১০ টাকা করে চাল খাওয়াবেন। বিনা মূল্যে সার দিবেন। ঘরে ঘরে চাকরি দিবেন। তা পেরেছেন?
ফারাক্কা বান: চালের মূল্য ২-৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাংবাদিক: কেমন?
ফারাক্কা বান: আমরা বলেছিলাম ১০ টাকা করে চাল খাওয়াবো। কিন্তু এটাতো বলিনাই ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবো। আমরা মনে মনে ভাবছি জনগনকে ১০ পোয়া চাল খাওয়াবো।
সাংবাদিক: বিনা মূল্যে সার? ঘরে ঘরে চাকরি?
ফারাক্কা বান: তাও তো পাচ্ছে। কেন যুবলীগ ছাত্রলীগ সরকারের সার বিনামূল্যে নিচ্ছে না। পরে তারা একটু চড়া দামে বিক্রি করছে। ওদেরও তো হাত খরচ আছে। গুলির যে দাম বাড়ছে, তারপর আবার থানা পুলিশকে একটু দিতে হয়ন।
আর চাকরি না কাজতো ঘরে ঘরেই আছে। যাদের এই সরকারের আমলে চাকরি চলে গেছে। তারাতো নতুন করে চাকরি খুজছে। এটা কাজনা?
সাংবাদিক: ষাড় এবার শেয়ার বাজার নিয়ে কিছু বলেন।
ফারাক্কা বান: শেয়ার বাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত ভাল। এই সরকার দক্ষতার সাথে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
সাংবাদিক: কেমন ষাড়?
ফারাক্কা বান: যেমন আগে যে শেয়ারের মূল্য ছিল ১০০০০ টাকা সেই শেয়ার এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। বলো এর আগে কোন সরকার কি এতো কমদামে মানুষকে শেয়ার খাওয়াতে পেরেছে। শেয়ার এখন সার্বজনীন করা হয়েছে। রাস্তার ভিখারিও এখন শেয়ার কিনতে পারবে। আর যারা আগে কিনেছে তারাতো ভিখারি অলরেডি হয়ে গেছে তাই না?
সাংবাদিক: জ্বী ষাড়। ষাড় এবার একটা প্রশ্ন করি। বিডিআর হত্যাকান্ডের তদন্ত কমিটির সমন্বয়কারী ছিলেন আপনি। তদন্তের সময় আপনি বিভিন্ন সময় সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন বিডিআর হত্যাকান্ডে জঙ্গী সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে প্রকাশ করা হবে। কিন্তু তদন্ত শেষে তদন্ত রিপোর্টে এরকম কিছু পাওয়া যায়নি। তখন আপনি কিসের ভিত্তিতে এসব কথা বলেছেন?
ফারাক্কা বান: আন্দাজে বলেছি। এতে তো তোমাদের লাভই বেশি হয়েছে। গরম গরম খবর ছাপছো। টিভি চ্যানেলগুলো ভালই চলছে তাইনা।
সাংবাদিক: ষাড় আপনার ঐ সময়কার কথাগুলোকি বহির্বিশ্বে দেশের ভাব-মূর্তি নষ্ট করেনি?
ফারাক্কা বান: বর্তমান সরকার এতো ছোট-খাটো ভাব নিয়ে চলেনা। পল্টনে লগি-বৈঠা দিয়ে টিভি ক্যামেরার সামনে মানুষ পিটিয়ে মারছি কৈ তার পরও তো আমরা ক্ষমতায় আসছি। ভাব-মূর্তি নষ্ট হয়েছে?
সাংবাদিক: ষাড় মাঝে মাঝে সাংবাদিকদের সামনে আপনি খুব উল্টা-পাল্টা তথ্য দেন। কেন দেন? এতে আপনার লজ্জা লাগে না?
ফারাক্কা বান: উল্টা-পাল্টা যা বলি মিডিয়া ভাল খায়। আমারও ভাল লাগে চ্যানেলেতো খুমাটা দেখা যায়। আর লজ্জা ওটা তো নারীর ভূষণ। যেখানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নারী হয়ে মিথ্যাকথা উল্টা-পাল্টা কথা বলে লজ্জা পাননা সেখানে আমার লজ্জা পাওয়াটা অযৌক্তিক।
সাংবাদিক: ষাড় প্রধানমন্ত্রী উল্টা-পাল্টা মিথ্যা বলেন। কেমন?
ফারাক্কা বান: কেন কিছু দিন আগে উনি বললেন, আমরা ক্ষমতায় আসলে জিনিস-পত্রের দাম কমে। আবার সাথে সাথে বললেন, একবার জিনিস-পত্রের দাম বৃদ্ধি পেলে তা আর কমে না। দেখ কেমন উল্টা-পাল্টা কথা।
আবার দেখ সংসদে বললেন, ১০ টাকা চাল খাওয়ানো কথা উনি ৯৬ সালে বলেছেন। আর সেই ভিডিও বিএনপি প্রচার করছে। কি ডাহা মিথ্যা কথা। উনার ঐ ভিডিওতে সব বেসরকারী চ্যানেলের মাইক্রোফোন দেখা যাচ্ছে যা ২০০১ সালের পরে সম্প্রচারে আসছে।
সাংবাদিক: ষাড় আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় দেবার জন্য।
ফারাক্কা বান: তোমাকেও ধন্যবাদ। ও শোনো ঐটা কিন্তু হেড লাইন দিও। দেশে দ্রব্যমূল্য শায়েস্তা খাঁর আমলের চাইতে ভাল। পাবলিক ভাল খায়।
ব্লগার ভাইয়েরা কেউ কষ্ট পাবেননা। কাউকে কষ্ট দিতে এটি লিখি নাই। তবে হেড লাইনের বক্তব্য সত্য হয়ে যেতে পারে।