somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অভিধান দেখা(খোকা এবং বুড়ো-খোকাদের জন্য লিখিত)

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজকে আমি তোমাদের অভিধান বা ডিকশনারি দেখা শেখাব।



উপকরণ:

১.জুতো। স্পঞ্জের স্যান্ডেল হলে ভালো হয়।অন্য কোনও জুতো হলেও চলবে।

২.পরিষ্কার তোয়ালে বা গামছা: ১টা।

৩.এক বাটি পানি।অভাবে গামলা হলেও চলবে। তবে সেক্ষেত্রে সামলানো একটু কষ্ট হবে।

৪.ধৈর্য।

৫.সময়।

৬.পুরনো ন্যাকড়া: ১টা।

৭.চশমা(পরিমাণ মতো)। অভাবে, খালি চোখেও কাজ চালানো যাবে।

৮.অভিধান একটা।যে-কোনও অভিধান হলেই চলবে।পোকায় কাটা হলেও সমস্যা নেই।


কার্যপ্রণালি:


১. প্রথমে ন্যাকড়াটা দিয়ে অভিধানটা ভালো করে ঝেড়েঝুড়ে সাফ-সুতরো করে নাও।কারণ, ওটাতে নিশ্চয়ই এতদিনে ধুলোটুলো পড়ে অবস্থা খারাপ!আসলে পড়া জিনিসটা কেমন যেন একপেশে।একবারে খালি একজনই পড়তে পারে।তাই মানুষ পড়লে ধুলো পড়বে না।আবার ধুলো পড়লে মানুষ পড়বে না।এইজন্য ধুলো ঝেড়ে নিতে বলছি। আর তাছাড়া, অভিধানে ধুলো পড়েছে বলে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। ও সবার অভিধানেই পড়ে। আমার বাড়ির অভিধানগুলোও ঐরকম।


২. এবার ঝুলকালি মাখা ন্যাকড়াটা দূরে সরিয়ে রাখো। নইলে অভিধান দেখার সময় বারবার খালি ঐদিকে চোখ যাবে।


৩. ধুলোবালি ঝাড়ার পর নিশ্চয় চোখমুখের অবস্থা করুণ হয়ে গেছে! তাহলে এবার আমাদেরকে হাত-মুখ ধুয়ে নিতে হবে। না, ঐ বাটির পানি দিয়ে না। ওটা অন্য কাজে লাগবে। হাত-মুখ ধোওয়ার জন্য তোমাকে বাইরে যেতে হবে।


৪. উপরে উপকরণ হিসেবে যে জুতোজোড়ার কথা লেখা আছে ওগুলো পরে বাইরে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে আসো। যারা শহরে থাকো, হাত-মুখ ধোয়ার সময় যদি দেখ পানি নেই, তবে তোমাকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। এইজন্য উপরে উপকরণ হিসেবে ‘ধৈর্য’ লেখা আছে।


৫. যাক বাবা! অনেক হাঙ্গামা করে হাত-মুখ ধোয়া গেল। এখন পরিষ্কার তোয়ালে বা গামছাটা দিয়ে ভালো করে হাত-মুখ মুছে ফেলো।


৬. এবার যাদের চোখে সমস্যা আছে তারা চশমা পরে নাও।


৭. চশমা পরার পর যদি দেখ, এতক্ষণ অভিধান মনে করে অন্য কোনও পুরনো-ধুরনো বই সাফ করে ফেলেছ তবে তোমাকে ওই চশমা দিয়েই অভিধানটা খুঁজে বের করে আবার গোড়া থেকে শুরু করতে হবে!


৮. অভিধানটা হাতে নিয়ে মলাট উল্টাও। মলাট না থাকলে উল্টানোর দরকার নেই। এবার প্রথম কয়েক পৃষ্ঠা উল্টানোর চেষ্টা করো। কী? উল্টানো যাচ্ছে না তো? পৃষ্ঠাগুলো একটার সাথে আরেকটা সেঁটে আছে? জানতাম। এইজন্যই ঐ বাটির পানির ব্যবস্থা। কাজেই এখন বাটির পানিতে আঙুলের ডগাগুলো ডুবিয়ে নাও। এবার পৃষ্ঠা উল্টাও। দেখবে পৃষ্ঠাগুলো বেশ খোলা যাচ্ছে।


৯. এতক্ষণে নিশ্চয় ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে ভাবছ—‘ধুর! অভিধান পড়ার এত ঝক্কি!’ এবং অভিধানটাকে ধড়াম করে সামনে আছড়ে ফেলে দিয়েছ! ঐরকমই হয়। সবার ক্ষেত্রে একই নিয়ম।



১০. হাঙ্গামায় অতিষ্ঠ হয়ে নিশ্চয় ‘আর কখনও অভিধান পড়ব না’ বলে ঠিক করে ফেলেছ? খবরদার! ওরকম কোরো না। তাহলে অভিধান যারা লেখে তারা কিন্তু রেগেমেগে অভিধান লেখা ছেড়ে দেবে। আর তারা অভিধান না লিখলে আমি অভিধান নিয়ে লিখব কী করে? আর তুমিই বা আমার লেখাগুলো পড়বে কী করে?


১১. অনেক দিন পর, অভিধান দেখার রাগটাগ মিটে গেলে, আবার প্রথম থেকে শুরু করতে পারো।


১২. তো, আমরা অভিধান দেখা মোটামুটি শিখেই গিয়েছি ধরা যায়। যেটুকু বাকি আছে সেটা অভিধান খুললে এমনিতেই শিখে যাবে (যদি কখনও খুলতে পারো)।


—অভিধান দেখা
স্নিগ্ধ মুগ্ধতা।
৬ নভেম্বর, ২০১৭।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৫
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×