চারটে দশক কুয়াশার মতো চলে গেল অবিরাম,
শোষণের বিষ-যাঁতাকল আজও ঘুরছে অবিশ্রাম।
অভাগা এ জাত আওড়েছে শুধু,পায় নি তো পরিচয়—
স্বাধীনতা শুধু ম্যাপের জমিন, শুধু যে পতাকা নয়!
নিপীড়িত যত পীড়িতের ধ্বনি বাতাসে উঠছে ভেসে;
কাপুরুষ-দল এরপরও বলে স্বাধীনতা আছে দেশে!
বিরুদ্ধ মত নিরুদ্ধ করা স্বাধীনতা যদি হয়,
কেয়ামত তবে নামুক সহসা,লোকালয় হবে লয়।
লক্ষ-কোটি নিষ্পেষিতের হায় রে, অভাগা দেশ,
গর্জাস শুধু বাঘের মতোই—দিল আজও তোর মেষ!
যেই বোন আজ ধর্ষিতা হলো সেই মরে লজ্জায়,
ধর্ষক যত শকুনের দলে হুঙ্কার দিয়ে যায়!
এরপরও তোর স্বাধীনতা হায়! হয় না কখনো ম্লান!
কত নীরিহের রক্ত ঝরাবি—আর কতো তোর প্লান?
যে হাতে তোকে আনল বাঁচিয়ে,যে হাতে চালাল গুলি,
আহা! সেই মহা-যোদ্ধার হাতে দোলে ভিক্ষের ঝুলি!
ভাগাড়ে লুটানো গরিবের লাশ শকুনেরা লুটে খায়,
রাজনীতিকেরা ‘স্বাধীনতা’ বুলি আজও তবু কপচায়!
স্বাধীনতা মানে কোন স্বাধীনতা—দেশ, তোর নাই সেন্স,
শোষকের হাতে দিয়ে গেলি তাই শোষণের লাইসেন্স!
ক্ষমতায় যারা, মমতাই শুধু দিয়ে গেলি তারে তুই,
দেখলিনা তোর উপচানো পাপে হাবিয়াও ছুঁইছুঁই!
আজকে যখন চারদিকে দেখি রক্তের ঝিলিমিলি—
স্বাধীনতা মানে কোন স্বাধীনতা—তুই তা বুঝিয়ে দিলি।
স্বাধীনতা আজ টাকার বাজারে বিবেকের বিকিকিনি,
স্বাধীনতা আজ ক্ষমতার জোরে অকারণ ছিনিমিনি!
স্বাধীনতা আছে নেতা-নেত্রীর অকারণ তোষামোদে,
স্বাধীনতা আজ—চিরকাল থাকা ক্ষমতার মসনদে।
স্বাধীনতা আছে চুরি-চামারির,পুলিশি হয়রানির,
স্বাধীনতা আছে আইনের নামে খামোখা শয়তানির।
তিলতিল করে বুঝতে শিখেছি বাঙালি কেঁচোর জাত,
কোনও শালা তাই একবারও ফুঁসে ওঠে না অকস্মাৎ!
তবু কেন আজ মনে হয় যেন ঐ এল মহাঝড়—
আর কতো কাল চুপ করে থেকে বেদনায় জরজর!
হৃদয়ের যত ধিক্কার-ক্ষোভ আজ তোকে জানালাম,
সেই দিন আর নয় বেশি দূর—চুকেবুকে নেব দাম।
—স্বাধীনতার মানে
আহমদ মুসা।
২৭ অক্টোবর, ২০১৭।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪৬