somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেসবুকার, ব্লগার ও সাংবাদিকের অধিকার বনাম চাপাতি ও ৫৭ ধারা

০৪ ঠা মে, ২০১৬ রাত ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রতিবছরের মতো এবারও ৩ মে পালিত হলো 'মুক্ত গণমাধ্যম দিবস' বা 'ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে'। বাংলাদেশে এমন প্রেক্ষাপটে মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উদযাপন করা হলো যখন, দেশের অন্যতম প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডেইলি স্টার থেকে শুরু করে সাধারণ ফেসবুকার ও ব্লগার সবাই নিপীড়নের শিকার। কেউ চাপাতির হুমকিতে, কেউ রাষ্ট্রের রোষানলে।

সাংবাদিক, ফেসবুকার বা ব্লগার- কেউই এখন বাংলাদেশে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারছে না। গত কিছুদিন ধরে হঠাৎ করে এই পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

চাপাতির কোপের হুমকি ছাড়াও রয়েছে রাষ্ট্রযন্ত্রের ৫৭ ধারার খড়গ।

৫৭-এর ১ উপধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।’

কি বাকি আছে এই ৫৭ ধারার বাইরে!

৫৭ ধারার ২ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১)-এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক চৌদ্দ বছর এবং ন্যূনতম সাত বৎসর কারাদন্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদন্ডে দণ্ডিত হইবেন।’

তথ্যপ্রযুক্তি আইনটি সংশোধন করে ২০১৩ সালে জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার পর থেকে সমোলাচনা শুরু হয়। কেননা, এ আইনে পুলিশকে সরাসরি মামলা করার ও পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

মানবাধিকারকর্মী ও সংবাদকর্মী ছাড়াও অনলাইন ব্যবহারকারীদের অনেকেই মনে করছেন, এ আইনের অপব্যবহার হতে পারে। তাদের শঙ্কার কথা অবশ্য এরই মধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।

সকলেই বলছেন ৫৭ ধারা আর মুক্ত গণমাধ্যমের চিন্তা দু'টি আসলে যোজন-যোজন দুরত্ববহ চিন্তা-চেতনা। এই ৫৭ ধারায় বারবার আটকানো হয়েছে বিরোধী মতকে। বিরোধী মত চিন্তা যারা আটকায় নিঃসন্দেহে তারা গণতন্ত্রের বৈপরিত্বে স্বৈরতন্ত্র চালিয়ে যাবারই নামান্তর কাজ করে যাচ্ছে।

মনে রাখতে হবে গণমাধ্যম সরকারকে পরাজিত করতে চায় না। ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষতিকর ত্রুটি খুঁজতে সাহায্য করে। তাতে সুবিধাবাদি শ্রেণি পরিবেষ্টিত সরকারকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সঠিক তথ্য দিয়ে সাহায্য করে থাকে। যা বুঝতে অনেকেরই দেরি হয় বিধায় আজ আমাদের অনেক কিছু থেকেও চারিদিকে নেই নেই একটা আবহাওয়া তৈরি হচ্ছে।

আশা করি সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ স্বাধীন গণমাধ্যম উন্নয়নে যে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে, বিশেষ করে আমাদের জাতীয় অর্জনের দিকে তাকালে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবেন। মুক্ত সাংবাদিকতার উৎকর্ষ সাধন করতে এমন পরিবেশ প্রয়োজন যেখানে সকল প্রতিবন্ধকতা দূরে ফেলে গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে নিরাপদে নিয়ে কাজ করবে। এমন পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হোক দেশে ও সমাজে।

আজকের চলমান ভীতিকর অবস্থায় মুক্ত মতপ্রকাশে ৫৭ ধারা ও চাপাতি যেভাবে তাক করে- সেই শঙ্কা দূর করতে হবেই।

নিশ্চিত হোক গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। যা একটি সুন্দর-সুখী মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী বাংলাদেশ গড়তে সাহায্য করবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১৬ রাত ১১:৫৫
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×