এই নারীবাদ, পুঁজিবাদ, অমুকবাদ,তমুকবাদ... প্রতিটা "বাদ"ই যথেষ্ঠ ঘৃণিত!!! প্রতিটা 'বাদ'-ই মূলত আরেকটা 'বাদ' কে বাদ করে দেওয়ার স্বার্থ নিয়ে চলে, বড়ই সাংঘর্ষিক বিষয়। মানুষ হিসাবে আপাত বিল্ট-ইন 'বিবেক' নামক বিষয়টাকে বুঝতে পারলেই বোধহয় ঠিক-ভুল বিভেদ করার সহজাত বোধ তৈরী হয়ে যায়। যাই হোক অত কিছু বলতে আসি নাই।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে দাঁড়িয়ে নারীদের নিয়ে কিছু বলতে হলে তসলিমা নাসরিন হওয়া লাগেনা। তার লিখা খুব একটা পড়িনাই বলা যাবেনা, তার যত লিখা পড়েছি সবগুলাকে জোড়া দিয়েও পিছিয়ে পড়া অর্ধাঙ্গীদের জন্য এ মনে যতটুকু অনুভূতির আনাগোনা হয়নি তার থকে ঢের বেশি কিছু বোধ একেবারে শিকড়ে গিয়ে ধাক্কা মেরে গিয়েছিল জেমস এর একটি মাত্র গানে...
চেয়ে দেখ উঠেছে নতুন সূর্য
পথে পথে রাজপথে চেয়ে দেখ
রংয়ের খেলা
ঘরে বসে থেকে লাভ কী বলো
এসো চুল খুলে পথে নামি,
এসো উল্লাস করি
দুঃখিনী দুঃখ করো না,
দুঃখিনী দুঃখিনী
আঁধারের সিঁধ কেটে আলোতে এসো
চোখের বোরখা নামিয়ে দেখো জোছনার গালিচা
ঘর ছেড়ে তুমি বাইরে এসো
চেয়ে দেখো রংধনু,
চেয়ে দেখো সাতরং
দুঃখিনী দুঃখ করো না,
দুঃখিনী দুঃখিনী
মিছিলের ভিড় ঠেলে সামনে এসো
দুঃখের পৃষ্ঠা উল্টে দেখো স্বপ্নের বাগিচা
ঘরে বসে থেকে লাভ কী বলো
এসো হাতে হাত রাখি এসো গান করি
দুঃখিনী দুঃখ করো না,
দুঃখিনী দুঃখিনী .........
রবি ঠাকুরের গানে...
"প্রতিদিন যদি কাঁদিবি কেবল একদিন নয় হাসিবি তোরা—
একদিন নয় বিষাদ ভুলিয়া সকলে মিলিয়া গাহিব মোরা।।"- কথাগুলার আবেদনও হয়ত অনেকটা ম্লান হয়ে যায় "আঁধারের সিঁধ কেটে আলোতে এসো...চোখের বোরখা নামিয়ে দেখো জোছনার গালিচা। ঘর ছেড়ে তুমি বাইরে এসো, চেয়ে দেখ রংধনু...চেয়ে দেখ সাতরং..." কথাগুলার ধাক্কায়।
এ লিখাটা বিশেষ একটা দুঃখ নিয়ে লিখতে বসা- দুঃখটা আসলে অন্য জায়গায়। আমরা তসলিমা নাসরিন এর নাম জানি, রবি ঠাকুরের নাম জপি, জেমস নামে মাতাল হয়ে যাই...অথচ ঐ হতভাগা গীতিকারটার নাম জানিনা যার অনবদ্য লেখনীর আহবান জেমসের উদাত্ত কণ্ঠ বসে গিয়ে নববিপ্লবে ভেসে গিয়েছিল হৃদয়-কুঠুরী। কিশোর হৃদয়ের সম্মানপৃষ্ঠে নতুন এক রাজ-সিংহাসনে বসিয়েছিলাম এ সমাজের চিরায়ত দুঃখিনীদের।
**যদ্দুর মনে হয় এই গানের গীতিকার 'আসাদ দেহলভী'। কেউ যদি নিশ্চিত হয়ে জানাতে পারেন কৃতজ্ঞ থাকব।