somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জানাযা প্লাস ককটেল বিজয়ী গোলাম আযম

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সদ্য প্রয়াত জামায়াতে ইসলামীর প্রাক্তন আমির গোলাম আযমের ছয় ছেলের সবাই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তার কোনো কন্যাসন্তান নেই। গোলাম আযম ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিলেও তিনি ছিলেন আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গোলাম আযমের সন্তানদেরও তিনি ইংরেজি ও আধুনিক শিক্ষা দিয়েছেন। তার একটি ছেলেকেও মাদ্রাসায় পড়াননি।

গোলাম আযমের বড় ছেলের নাম মামুন আল আযমী। ঢাকায় থাকাকালীন পড়াশোনা করেছেন খিলগাঁও গভর্মেন্ট হাইস্কুলে। এরপর ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের জেদ্দায় স্ত্রী-সন্তানসহ বসবাস করছেন।

দ্বিতীয় ছেলে আমিন আল আযমী লন্ডনে পড়ালেখা শেষ করে সেখানেই ব্যবসা ও বসবাস করছেন।

তৃতীয় ছেলে আবদুল্লাহিল মোমেন আযমী। মোমেন ঢাকায় থাকাকালীন পড়াশোনা করেছেন ধানমন্ডি বয়েজ স্কুল ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। এরপর লন্ডনে গিয়ে তিনি উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন। বর্তমানে ম্যানচেস্টার সিটিতে পরিবারসহ বাস করছেন।

চতুর্থ ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমী। নটর ডেম কলেজে পড়ালেখা শেষ করে এরশাদ সরকারের প্রথম দিকে সেনাবাহিনীতে কর্মজীবন শুরু করেন। সর্বশেষ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি বরখাস্ত হন। ভাইদের মধ্যে একমাত্র তিনিই বাংলাদেশে বাস করছেন।

পঞ্চম ছেলে নোমান আল আযমী। লন্ডনে পড়ালেখা শেষ করে সেখানেই ব্যবসা ও বসবাস করছেন।

ছোট ছেলে সালমান আল আযমী ভারতের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি লিভারপুল হোপ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন।

গোলাম আযমের এই ছয় ছেলের ঘরে ২০ জন নাতি-নাতনি রয়েছে। তাদের প্রায় সবাই লন্ডনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছে। গোলাম আযমের স্ত্রী আফিফা আযম জীবিত রয়েছেন।

২১ পদের খাবার খেতেন গোলাম আযম।

দিনের বিভিন্ন সময়ে মোট ২১ পদের খাবার খেতেন গোলাম আযম। তার স্ত্রী আফিফা আযমের ২০১২ সালের ৪ মার্চ দেওয়া আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ খাদ্য তালিকার অনুমোদন দেওয়া হয়। খাদ্য তালিকার অনুলিপি কারা কর্তৃপক্ষ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট ডাক্তারসহ সরকারের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল মজিদ ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তিনি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করতেন। খাদ্য তালিকা ও খাওয়ার সময়ের হেরফের হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। এক দিন রাতের খাবার নির্ধারিত সময় ৮টার পরিবর্তে সাড়ে ৮টায় দেওয়ার কারণে সেদিন তিনি রাগ করে খাবারই খাননি।

অন্যদিকে গোলাম আযমের পছন্দের টক-ঝাল-মিষ্টি আচার সরবরাহ করতে দেরি হওয়ায় তিনি ‘হাঙ্গার স্ট্রাইক’ পর্যন্ত করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে আচার সরবরাহ করলে তিনি স্ট্রাইক ভঙ্গ করেন।

গোলাম আযম দিনে পাঁচ-ছয় বার খাবার খেতেন। তার খাদ্য তালিকায় ছিল- সকাল ৮টায় সকালের নাশতা, লাল আটার পাতলা পাউরুটি চার-পাঁচ পিস, ডিম ভাজি, সবজি ভাজি (আলু ছাড়া), মুরগি (কারি বা ভুনা), মিষ্টি (এনসিওর ব্র্যান্ড), দুধ ও কলা।

বেলা ১১টায় খেতেন লাড্ডু, নিমকি-বিস্কুট ও হরলিকস বা স্যুপ। দুপুরে খেতেন চিকন চালের ভাত, করলা ভাজি, টাকি বা চিংড়ি মাছ ভর্তা, বেগুন ভাজি বা ভর্তা, ছোট মাছ বা চিংড়ি মাছ ভুনা, সালাদ ও লেবু, মাল্টা বা বরই বা নাশপাতি। বিকালে তিন-চার প্রকার দেশি-বিদেশি ফল দিয়ে হালকা নাশতা করতেন।

রাতের খাবারের তালিকায় ছিল চিকন চালের ভাত, করলা ভাজি, বেগুন ভাজি বা ভর্তা, ঢেঁঁড়স বা মিষ্টিকুমড়া বা পেঁপে ভাজি, গরু বা খাসির মাংস ভুনা, সালাদ ও লেবু এবং কমলা, মাল্টা, নাশপাতি, আঙুর বা বরই। এ ছাড়া সকাল ৯টায় এক চামচ মধু, এক চামচ অলিভ অয়েল, দুটি বিস্কুট, চিঁড়া ভাজা বা মুড়ির মোয়া, দুধ, হরলিকস ও দুটি ডিম।

বেলা ১১টায় খিচুরি সবজি, স্যুপ, আচার ও ফল। বেলা ২টায় দুই টুকরা মাছ, সবজি, ডাল ও আচার। বিকালে নাশতায় স্যুপ ও ফল। রাত ৮টায় ভাত, মুরগির মাংস, সবজি, ডাল, আচার ও ফল।

মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান:

মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান ছিল অসম বা অনস্বীকার্য। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি যদি স্বাধিনতার বিপক্ষ অপশক্তি গঠন না করতেন তাহলে হয়তো আমরা স্বাধিনতার মর্মকথা বুঝতাম না। অসংখ্য মানুষ হত্যার মাধ্যমে তিনি আজ বাংলার মানুষের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তার জন্যই আজ যত স্মৃতি স্তম্ভ। দীর্ঘ নয় মাস সংগ্রাম করে তিনি বাঙালী জাতিকে শিখিয়ে দিয়েছেন যে, কীভাবে স্বাধিনতা অর্জন করতে হয়। ইতিহাসে এই নরপিচাস যেভাবে জাতিকে বৃদ্ধাঙ্গলি দিয়ে দেখিয়েছেন তা জাতির জাছে স্মরণিয় হয়ে থাকবে। তার জানাযায় অসংখ্য লোক নিয়ে যে রাজনীতির খেলা খেলল এ থেকে বোঝা যায় জামায়াত সফল, আমরা পরাস্ত। ইতিহাসে বর্বোরিচিত সেই গণহত্যাকে আবার মনে পড়ে গেল যখন জানাজায় আবার ককটেলের শব্দ শুনতে পেলাম। হে মহান গুরুজি তুমি চলে গেলে তবে তোমার পদচিহ্ন ও অনেক অনুসারী রেখে গেলে। তুমি ভাল থেক।

৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×