জনরোষের শিকার খালেদা জিয়া!!!!!!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
দীর্ঘ তিনমাস খালেদা দেশের অস্থিরতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির কারণে অসংখ্য জান-মাল ক্ষতি হয়। আজ তিনি নির্লজ্জ বেহায়ার মতো সেইসব ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের দ্বারে,দ্বারে ঘুরছেন। এই ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ আজও সেই শোকবিহবল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভিকটিম জনগণ খালেদার প্রতি ক্ষুব্ধ থাকার কারণে সুযোগে সৎ-ব্যবহার করছে। সরকার সেখানে কি বা করার আছে। তাছাড়া তার ব্যক্তিগত সিএসএফ কেনই বা আগে গুলি করতে গেল, এখন সবার কাছে একই প্রশ্ন। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের কথা চিন্তা করে এখন আর কি লাভ? ২০১৯ সাল পর্যন্ত তাকে ধৈয্য ও শান্ত থাকতে হবে। তাহলে হয়তো তার দল অস্থিত্য ফিরে পেতে পারে। নইলে জনগণ রাজপথে উচিত শিক্ষা দিবে।
তারই প্রেক্ষাপটে সোমবার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলার পাশাপাশি ব্যাপক ইট ছোড়া হয় তার গাড়িবহরে। এতে বহরের প্রায় সব গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
খালেদা জিয়া অক্ষত থাকলেও তার গাড়ির কাচ ফেটেছে। আহত হয়েছেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীরাসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক।
সরকারের উসকানিতে এই হামলা হয়েছে দাবি করে এর প্রতিবাদে বুধবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম বাদে সারা দেশে হরতাল ডেকেছে বিএনপি।
হামলাকারী কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনাটিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ‘নাটক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
আগের দুই দিনের মতো সোমবার বিকালেও নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন খালেদা। তবে এদিন পুলিশ ছিল না তার সঙ্গে। সকালে তার নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়, যা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি।
গাড়িবহর নিয়ে কারওয়ান বাজারে গিয়ে কাঁচা বাজারের সামনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে পথসভার সময় হামলার মুখে পড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বিকাল পৌনে ৬টার দিকে তিনি গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি লাগোয়া কাঠের একটি সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডমাইকে বক্তব্য শুরু করেন।
খালেদা বলেন, “আমি আজ এখানে এসেছি, তাবিথ আউয়ালের জন্য ভোট চাইতে। সে আপনাদের লোক। তাকে বাস মার্কায় ভোট দেবেন। পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে তাবিথকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।”
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এই সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এই চোরদের আর ভোট দেবেন না। সরকার যতই কৌশল করুন, ২৮ এপ্রিল ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে জনগণ রায় দেবে।”
৬টার দিকে তার বক্তব্য যখন শেষ প্রায়, তখন সমবায় ভবনের কাছ থেকে এক দল ব্যক্তি ‘ছি ছি খালেদা- খালেদা ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে।
এর মধ্যে শুরু হয় আশপাশের ভবনের ওপর থেকে খালেদা জিয়ার গাড়ি লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইট নিক্ষেপ। তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীদের কয়েকজনের মুখ ও মাথায় ইট এসে পড়ে। আহত হন সেখানে থাকা কয়েকজন সাংবাদিকও।
এই অবস্থায় খালেদা জিয়া গাড়িতে ঢুকে যান, ওই গাড়িতে ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানও। ইটের আঘাতে ওই গাড়ির এক পাশের কাচ ফেটে যায়।
বহরের সব গাড়ি ঘুরে এফডিসির দিকে এগোতে গেলে এক দল লোক তখন লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। খালেদার গাড়ি তার নিরাপত্তা রক্ষীরা ঘিরে সামনের দিকে নিয়ে যায়। তবে অন্য প্রায় সব কটি গাড়ি ভাংচুরের শিকার হয়।
এসময় খালেদার একান্ত ব্যক্তিগত সচিব এবিএম সাত্তার, গাড়িচালক শেখ শাহেদুল শাহেদসহ ‘চেয়ারপারসনস সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ)’ কয়েকজন সদস্যের মাথা থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়।
সিএসএফের আহত সদস্যরা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট ওমর ফারুক ও ফারুক হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার ফজলুর রহমান ও খালেদার কার্যালয়ের কর্মী এনামুল ইসলাম।
খালেদার গাড়িবহর ঘিরে বিএনপির যে সব নেতা-কর্মী ছিলেন, তারাও মারধরের শিকার হন।
হামলার পর খালেদার বহরের আটটি গাড়ি এফডিসির দিকে গেলে কিছু দূর তেড়ে যায় হামলাকারীরা। খালেদার গাড়িবহর এফডিসির ফটকের সামনে কয়েক মিনিটের জন্য থেকে মগবাজারের দিকে রওনা হয়।
খালেদা জিয়ার গাড়ি লক্ষ করে গুলি ছোড়া হয়েছে বলে রাতে দাবি করেন তার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলে এলাহী আকবর।
সরকারবিরোধী আন্দোলন শিথিল করে সিটি নির্বাচনে খালেদা জিয়া নামার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জনগণের প্রতি আহ্বান রেখেছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন যেখানেই যাবেন, সেখানেই যেন তাকে নাশকতার জন্য প্রশ্ন করা হয়।
রোববার খালেদা রাজধানীর উত্তরায় গণসংযোগে গেলে তাকে কালো পতাকা দেখানো হয়। সেখানে লাঠি হাতে হামলার চেষ্টা হলেও তা ঠেকায় পুলিশ।
উত্তরায় বাধার পর খালেদা জিয়া বলেছিলেন, “কোনো বাধায় কাজ হবে না। গণজোয়ারে সব বাধা উড়ে যাবে।”
কারওয়ান বাজারে হামলাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অবরোধ-হরতালের জন্য ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ ছিল।
“তারা (কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী) বিএনপি চেয়ারপারসনকে কালো পতাকা দেখানোর কর্মসূচি নিয়েছিল। এর মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে।”
তবে ওই এলাকায় কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকার সমর্থক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীদের সেখানে তৎপর দেখা গেছে।
কারওয়ান বাজারে হামলার পর শাহজাহানপুরে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের পক্ষে জনসংযোগ করেন খালেদা।
গাড়িবহর নিয়ে ধীরে ধীরে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল সড়ক, শান্তিনগর মোড়, মালিবাগ মোড়, রাজারবাগ সড়ক, শাহজাহানপুর সড়ক, খিলগাঁও রেল ক্রসিং, রামপুরা মেরুল, বাড্ডা সড়ক দিয়ে নতুন বাজার পর্যন্ত যান।
এসময় হ্যান্ড মাইক থেকে মির্জা আব্বাসের পক্ষে ভোট চাওয়া হয়, বিলি করা হয় প্রচারপত্র।
নির্বাচনী প্রচারণার পাশাপাশি গাড়ি ঘিরে চলতে থাকা নেতা-কর্মীদের মুখে ‘খালেদা জিয়ার গাড়িতে হামলা কেন, খুনি হাসিনা জবাব চাই’ স্লোগানও ওঠে।
দিনের প্রচার শেষ করে ইউনাইটেড হাসপাতাল হয়ে বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। হামলায় আহতরা ওই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ
মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!
বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।
ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )
যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন