বাঙ্গালী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী শেখ মুজিবর রহমানকে ঘাতকরা সপরিবারে হত্যা করেছিলো ১৫'ই অগাস্ট। আর বাঙ্গালী জাতির সেই কলঙ্কিত দিনটিতে আমাদের বিরোধী দলীয় নেত্রী উনি উনার বিতর্কিত জন্মদিনটিকে খুব উৎসব আমাজের সাথে পালন করে থাকেন। সবচেয়ে অভাক লাগে যখন এদেশের কিছু যুব সমাজ শ্লোগান দেয় শুভ শুভ শুভ দিন, আজকে ম্যাডাম খালেদার জন্মদিন!! আর কত রক্তাত করবেন এই মহান নেতাকে? শহীদ জিয়া বেঁচে থাকলে তিনি নিজেও এতো বড় সাহস দেখাতেন কিনা সন্দেহ ছিল।
আপনি নিজেও ভুলে গেলেন এই মহান নেতার মহানুভবতা যার হাত ধরে ফিরে পেয়েছিলেন আপনার ভেঙ্গে যাওয়া সংসারটা! কারো পারিবারিক কথা এভাবে পাবলিক প্লেসে যদিও বলা উচিত না কিন্তু যেখানে আপনি নিজেই নিজের মনুষ্যত্ত হারিয়ে ফেলেছেন, ভুলে গেছেন আপনার বেদনা বিধুর অতীতের কথা তাই আপনাকে মনে করিয়ে দেয়াটা আমাদের দায়িত্তের মধ্যে পড়ে। ৩০লক্ষ শহীদের পরিবার যদি বঙ্গবন্ধুর কথা ভুলেও যায় আপনারতো এই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের অবদানের কথা ভুলে যাওয়ার কথা নয়। ক্ষমতার মোহে সব কিছু ভুলে গেলেন যেদিন উপর থেকে ছিটকে পরবেন, ক্ষমতার মোহ কেটে যাবে সেদিন সেদিন বিলাপ করলেও কাজ হবে না।
এটা কোন রাজনৈতিক লেখা বা কোন ব্যাক্তি বিশেষকে তাক করে লেখা নয়। সভ্য মানুষ, মানুষের নীতি এবং নৈতিকতা বোধ বিষয়ক লেখার প্রচেষ্টা মাত্র। আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি'র নেত্রী খালেদা জিয়ার জন্মদিন বিষয়ক তারিখ গুলো। নানা সময়ে নানা ভাবে ভিন্ন ভিন্ন তারিখকে সঠিক জন্মদিনের তারিখ বলে বলা হয়েছে। অবাক হবার কিছু নেই। আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে সবই সম্ভব!
আমাদের কারো অজানা নয় খালেদা জিয়া'র কয়েকটি জন্মদিন রয়েছে - চলুন আরেকবার দেখি বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন ডকিউমেন্টস অনুসারে!!
■ ১৯৯১ সালের ২০শে মার্চ তারিখে দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সরকারী সংবাদ সংস্থা বাসস থেকে পাঠানো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জীবনী ছাপা হয়। এতে উল্লেখ করা হয় যে ওনার জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯শে আগষ্ট।
■ ম্যাট্রিক পরীক্ষার মার্কশীট অনুসারে খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর
■ বিয়ের কাবিননামা অনুসারে ওনার জন্মদিন ১৯৪৪ সালের ৯ই আগষ্ট।
২০০০ সালের ভোটারের তথ্য বিবরনী ফরমে খালেদা জিয়া উল্লেখ করেন যে তার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ১৫ই আগষ্ট! এছাড়া তিনি নিজেকে এইচএসসি পাস দাবি করেন যদিও শিক্ষাবোর্ডের ডকিউমেন্ট (মার্কশীট) অনুসারে তিনি ম্যাট্রিকে ফেল করেছিলেন।
১৫ই আগষ্ট, ২০১০ তারিখের দৈনিক যুগান্তরের রিপোর্ট: সাবেক হুইপ জামালের পরামর্শে শুরু ১৫ আগষ্ট জন্মদিন পালন শুরু করেন।
একবার ভেবে দেখুন আমাদের সেরা সেরা প্রথম সারির নেতাদের আপোষহীনতা কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে! এরপরেও তর্কের খাতিরে যদি মেনে নেওয়াও হয় অথবা যদি সত্যিই ১৫ই আগষ্ট দেশ নেত্রী খালেদা জিয়ার জন্মদিন হয়েও থাকে তবুও জাতির জনকের নির্মম হত্যার এই শোকাহত দিনে রাজকীয় বার্নাঢ্য জন্মদিনের উৎসব এভাবে পালন না করলেই তিনি অনেক গৌরবের অধিকারী হতেন।
সমমর্মিতা মানুষের সহজাত ধর্ম। পাশের বাড়ীতে কোন শোক সংবাদে প্রতিবেশী তার আনন্দ উৎসব গুলি সে ভাবে প্রকাশ করেনা বরং সমমর্মী হয়ে তাদের পাশে দাঁড়ায়। এটাই আমাদের সামাজিক রীতি। আমাদের রাজনীতিবিদদের কাছেও এটাই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে। আমাদের নেতা নেত্রীদের কাছে সেই শুভক্ষনের প্রত্যাশায় রইলাম।
একটা কবিতা দিয়ে শেষ করছি...
বেগম খালেদা জিয়ার আরোপিত জন্মদিন।।
শুভ জন্মদিন, শুভ জন্মদিন
শুভ জন্মদিন এলো আজ
এসো শোক ভুলি, এসো কোক খুলি
ফুল ভলিয়ামে এসো সুর তুলি
গানে মুর্ছনায়, দেহ ভঙ্গিমায়
দেহে ঢেউ তুলে, করি ইতরামী
পড়ে স্বল্প বেস, প্রিয় বাংলাদেশ
মজিব বাদ দিয়ে খালেদা বুলবুলি।
হাসিবু কাদবে আজ
কাদুক সমস্ত রাজ,
আজ ফালতু দিন, ভুয়া জন্মদিন
ভুয়া জন্মদিন, নাও সাজ
ঠোটে রং মাখ, সাথে লাং রাখ
ফ্রী স্টাইলে, দেহে ডেউ তোল।
তারিখ জমকালো, মুজিব চমকালো
পুতুল জন্মেছিল, বুঝি আজ।
ভুয়া জন্মদিন, নাচি ধিন তা ধিন
নাচে বাংলাদেশ, আজ সব রংগিন।।
১৫ আগষ্ট বেগম খালেদা জিয়ার আরোপিত জন্মদিন। আমি বলি না আম্বারা বলে। যে দিন চলে গেছে সে দিন তো আর ফিরে ফিরে আসে না। এই জন্মদিন পালন মানে আনন্দ উৎসব করার উছিলা। মানুষ যেহেতু সময় এর শুরু আর শেষটা জানে না তাই গনিতের নিয়মে সেকেন্ড, মিনিট ঘন্টা দিন রাত্রির আশা ও যাওয়াকে ভাগ করে নিয়েছে। তাইতো বছর ঘুড়তেই সেই নিদৃষ্ট দিনটি আবার ঘুড়ে আসে।বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের সোয়া দুইবারের প্রধানমন্ত্রী। তিনি তো আর মিথ্যা মিথ্যা জন্মদিন পালন করতে পারেন না। তার স্বশরীর উপস্থিতিই প্রমান করে তিনি কোন না কোন একদিন জন্মেছিলেন। স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত তার চাইতে ভাগ্যবান মহিলা বাংলাদেশে আর জন্মায়নি।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:১৯