ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলায় সবার আগে জঙ্গিবাদ মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জনের ওপর জোর দিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর স্প্রেক্টা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত জলবায়ু পরিবর্তনে সমাজভিত্তিক পরিকল্পনা বিষয়ক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। এটি ছিলো জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত দ্বিতীয় জাতীয় সেমিনার।
ইনু বলেন, দেশের প্রশাসনিক দুর্বলতা ও রাজনৈতিক দলবাজির বাইরেও বর্তমানে আমরা জলবায়ু পরিবর্তন এবং জঙ্গিবাদের হুমকির মোকাবেলা করছি। জলবাযু পরিবর্তনের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের একনিষ্ঠ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আর এই মনোযোগ দিতে হলে সবার আগে দেশকে জঙ্গিবাদের হুমকি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করতে হবে।
তিনি বলন, আমরা যখন এই সেমিনারে অংশ নিচ্ছি ঠিক তখনই দেশের উত্তরাঞ্চল মরুকরণের হুমকিতে পুড়ছে। দক্ষিণাঞ্চল পুড়ছে লবণে। মধ্যাঞ্চলসহ সারাদেশে আর্সেনিক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সমুদ্র ফুলে উঠে ৩ কোটি উপকূলবাসী হুমকির মুখে পড়েছে। ৭০০টি নদীর ৩০টি একেবারেই শুকিয়ে গেছে। হিমালয়ের পাদদেশে বন নিধনের প্রভাবও পড়ছে বাংলাদেশের ওপর।
তিনি জানান, সমাজভিত্তিক জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলার কৌশল নির্ধারণের এই সেমিনারে আমি বলতে চাই এই ইস্যুতে আমরা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এর জন্য আমরা একটুও দায়ি নই।
তিনি বলেন, এটা কেবল আমাদের দেশীয় সমস্যাও নয়। এই সমস্যা প্রথমে আঞ্চলিক এবং বৃহত্তাকারে একটি বৈশ্বিক সমস্যা।
ইনু জানান, আমাদের প্রেক্ষাপটে এই সমস্যা সমাধানে কেবল নিজেরা আলোচনা করলেই হবে না। গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা বেসিনের সমন্বিত নদী ব্যবস্থাপনা নীতি গ্রহণ করতে হবে।
এখানে কেবল উজান আর ভাটির দেশ পানি ভাগ করলেই হবে না। নদীও ভাগ দিতে হবে। এছাড়া ডেল্টা হিমালয়ান কান্ট্রি বেজড মেনেজমেন্ট তহবিলও গঠন করতে হবে। এর মালিকানা বা ব্যবস্থাপনায় থাকবে বাংলাদেশ। তহবিলের বেশির ভাগ টাকা দিতে হবে ভোগের শাস্তি স্বরূপ উন্নত বিশ্বকে।
তিনি আরো বলেন, কেবল ক্ষতিপূরণের জন্যই এই তহবিল ব্যয় করলে হবে না। সমস্য মোকাবেলায় প্রযুক্তি উদ্ভাবনে এর বিনিয়োগ গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যদিকে সকলের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ও সচেতন করে তুলতে হবে।
দুই দিনব্যাপী এ সেমিনার শুরু হয় সকাল ৯টায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিস’র নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ভেলপমেন্টের পরিচালক ড. সেলিমুল হক, ত্রান ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহউল আলম ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম।