somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

১৮১২ সালের যুদ্ধ

১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমেরিকার স্বাধীনতার পর ১৮১২ সালে ব্রিটেনের সাথে আমিরিকার আরেক দফা যুদ্ধ নয়, যা ১৮১২ সালের যুদ্ধ (War of 1812) নামে ইতিহাস খ্যাত। এই যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওই সময়ের সবচাইতে দুর্ধর্ষ ব্রিটিশ নৌ-শক্তিকে মোকাবেলা করে। এই যুদ্ধের অপরিমেয় প্রভাব নবীন রাষ্ট্রের ভবিষৎ ঘটনা প্রবাহকে প্রভাবিত করে। এই যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশ, কানাডিয়ান এবং নেটিভ আমেরিকানদের কাছে অনেক বড় বড় পরাজয়ের সম্মুখীন হয়, যার ক্ষতির পরিমান বিপুল। এর মধ্যে কয়েকটি উল্ল্যেখযোগ্য ঘটনা হলো, ১৮১৪ সালে ব্রিটিশ বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াসিংটন ডি. সি. দখল করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এমনকি হোয়াইট হাউস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এত কিছু স্বত্তেও আমেরিকানরা যুদ্ধে ব্রিটিশ কর্তৃক দখলকৃত নিউ ইয়র্ক, বাল্টিমোর এবং নিউ অরলিন্স মুক্ত করতে সক্ষম হয়। এই যুদ্ধের মাধ্যমে আমেরিকানদের জাতি হিসাবে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং দেশপ্রেমের চেতনা বলীয়ান হয়। ১৮১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী জেন্ট চুক্তির (Treaty of Ghent) মাধ্যমে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। অনেক আমেরিকান এই যুদ্ধকে আমেরিকার দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ হিসাবে স্বরণ করে।

১৮১২ সালের যুদ্ধের কারণসমূহঃ
১৮১২ সালের যুদ্ধের প্রধান কারণ হলো, (১) ব্রিটিশ কর্তৃক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক বাণিজ্যে বাধা প্রদান, (২) ব্রিটিশ কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রের নাবিকদেরকে কারারুদ্ধ করা, (৩) পলাতক ব্যক্তিদের খোঁজে ব্রিটিশরা আমেরিকান জাহাজে তল্লাশি করতো। এমনকি এমন সব লোককে গ্রেফতার করে নিয়ে যেত যারা আদো পলাতক নয়, এবং (৪) আমেরিকার নিজস্ব সীমানা বৃদ্ধির আকাঙ্খা।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে নেপোলিয়ান বোনাপার্টের নেতৃত্বাধীন ফ্রান্স এবং ব্রিটেন এক দ্বীর্ঘ ও তিক্ত যুদ্ধে জড়িয়ে পরে। শত্রুপক্ষের কাছে যাতে রসদ পৌঁছাতে না পারে, তার জন্য ফ্রান্স এবং ব্রিটেন উভয় রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক বাণিজ্যে বার বার বাধা প্রদান করে। ১৮০৭ সালে ব্রিটেন এই মর্মে একটা প্রজ্ঞাপন জারি করে যে, কোনো নিরপেক্ষ রাষ্ট্র ফ্রান্স অথবা ফ্রান্সের কোনো উপনিবেশের সাথে ব্যবসা করতে হলে, ব্রিটেনের কাছ থেকে অনুমতি পত্র নিতে হবে। তা ছাড়াও ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনী কর্তৃক নিয়মিত ভাবে মার্কিন নাবিকদেরকে কারারুদ্ধ করা, এবং বিণিজ্য জাহাজ থেকে নাবিক ধরে নিয়ে যেয়ে জোর করে কাজ করানো, আমেরিকানদের সংক্ষোদ্ধ করে তুলে।

১৮০৯ সালে প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসন এম্বারগো এক্ট বাতিল করে দেন। এই আইনের মাধ্যমে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সাথে বাণিজ্য সীমিত করা হয়েছিল। এই আইন আমেরিকানদের কাছে খুব অজনপ্রিয় ছিল। কারণ এই আইনের ফলে ব্রিটেন বা ফ্রান্সের তুলনায় আমেরিকানদেরই বেশি অসুবিধা হচ্ছিলো। নন-ইন্টারকোর্স এক্ট নামে নতুন আরেকটা আইন পাস করা হয়, এতে ফ্রান্স এবং ব্রিটেন উভয় দেশের সাথেই বাণিজ্য পুরাপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়। এই আইনও অকার্যকর প্রতীয়মান হয়। ১৮১০ সালে নতুন একটা আইন পাস হয়। এতে বিধান রাখা হয়, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মধ্যে যে দেশ আমেরিকার বাণিজ্য অবরোধ তুলে নিবে, তার বিপরীত দেশের সাথে আমেরিকার বাণিজ্য নিষিদ্ধ থাকবে। এই আইনের পর ফ্রান্স আমেরিকার উপর থেকে অবরোধ তুলে নিলে, প্রেসিডেন্ট জেমস ম্যাডিসন ১৮১০ সালের নভেম্বর মাসে ব্রিটেনের সাথে বাণিজ্য পুরাপুরি বন্ধ ঘোষণা করেন। এদিকে হেনরি ক্লে ও জন ক্যালাহউনের নেতৃত্বাধীন নবনির্বাচিত কংগ্রেস সদস্যরাও দাবি করতে থাকে ব্রিটেনের সাথে যুদ্ধ শুরু করতে। তাদের যুক্তি ছিল, ব্রিটেন নিয়মিত ভাবে আমেরিকার সমুদ্রের উপর অধিকারকে লঙ্ঘন করছে। তাদের আরেকটা যুক্তি ছিল, আমেরিকার পশ্চিম দিকে সীমানা বৃদ্ধিকে ব্যাহত করার জন্য ব্রিটেন নেটিভ আমেরিকানদেরকে উৎসাহিত করছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৫৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×