somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

প্লেইনস ইন্ডিয়ান

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অবস্থিত বিস্তীর্ণ সমভূমিকে গ্রেট প্লেইনস বলে। এটা দৈর্ঘ্যে ৩,২০০ কিলোমিটার, প্রস্থে ৮০০ কিলোমিটার এবং আয়তন ১৩ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার। মিসিসিপি নদীর পশ্চিম দিক থেকে শুরু করে রকী পর্বতমালার পূর্ব দিক পর্যন্ত বিস্তৃত এই সমভূমি অঞ্চল। এই সমভূমি অঞ্চলে যেসমস্ত ইন্ডিয়ান বসবাস করতো তাদেরকে বলা হয় প্লেইনস ইন্ডিয়ান। প্লেইনস ইন্ডিয়ানদেরকে প্রধানত দুই শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। একটা শ্রেণী হচ্ছে শিকারী-যাযাবর (nomadic), এরা অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতেও ঘোড়ায় চড়ে মহিষ শিকার করে জীবন ধারণ করতো।অবশ্য এদের মধ্যে কিছু কিছু গোত্র মাঝে মধ্যে কৃষি কাজও করতো। এর কয়েকটি প্রধান গোত্র হলো, ব্লাকফুট (Blackfoot), আরাপাহো (Arapaho), আসিনিবোইনি (Assiniboine), শাইয়েন (Cheyenne), কমঞ্চে (Comanche), ক্রোও (Crow), গ্রাস ভেন্টরে (Gros Ventre), কিওয়া (Kiowa), লাকোটা (Lakota), লিপ্যান (Lipan), প্লেইন্স অ্যাপাচি (Plains Apache) বা কিওয়া অ্যাপাচি (Kiowa Apache), প্লেইন্স ক্রি (Plains Cree), প্লেইন্স ওজিবউই (Plains Ojibwe), সার্সি (Sarsi), নাকডা (Nakoda), এবং টনকাউয়া (Tonkawa)। অপর শ্রেণীটা হচ্ছে গ্রাম কেন্দ্রিক কৃষি নির্ভর (semi-sedentary), এরা একটা নিদৃষ্ট এলাকাতে কৃষি নির্ভর জীবন যাপন করতো। তবে এরাও মহিষ শিকার করতো এবং অন্য গোত্রের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করতো। এর কয়েকটি প্রধান গোত্র হলো, আরিকারা (Arikara), হিড্যাটসা (Hidatsa), আইউয়া (Iowa), কউ (Kaw) বা কানসা (Kansa), মান্দান (Mandan), মিসৌরিয়া (Missouria), ওমাহা (Omaha), অস্যাগে ( Osage), অটোই (Otoe), পাওনী (Pawnee), পোনকা (Ponca), কুয়াপাও (Quapaw), উইচিটা (Wichita), সান্তে ডাকোটা (Santee Dakota) এবং ইয়াঙ্কটোনাই (Yanktonai)।

যুক্তরাষ্ট্র যখন পশ্চিম দিকে রাজ্য বিস্তার করছিলো, তখন এই প্লেইনস ইন্ডিয়ান গোত্রদের সাথে যুদ্ধ বেঁধে যায়। ১৮৬০ সাল থেকে ১৮৮০ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে অনেকগুলি যুদ্ধ সংগঠিত হয়।

উন্নত ধরণের যুদ্ধ-সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির কারণে ইন্ডিয়ানদের সাথে যুদ্ধে বসতি স্থাপনকারীরা বিজয়ী হয়। যেহেতু ইন্ডিয়ানদের অর্থনীতি ও জীবনযাপন মহিষ শিকারের উপর নির্ভরশীল ছিল, তাই যুদ্ধের কৌশল হিসাবে ইন্ডিয়ানদের খাদ্য সরবরাহ বিঘ্নিত করার লক্ষ্যে বসতি স্থাপনকারীরা নির্বিচারে মহিষ হত্যা করে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দেয়। শাইয়েন (Cheyenne), আরাপাহো (Arapaho) এবং সাইওয়াক্স (Sioux) গোত্রগুলিকে তাদের জন্য সংরক্ষিত এলাকায় যেতে বলপূর্বক বাধ্য করা হয়।

সংরক্ষিত এলাকাগুলির অবস্থা ছিল আতঙ্কজনক। খাদ্য সরবরাহ ছিল অপর্যাপ্ত। সংরক্ষিত এলাকাতে ইন্ডিয়ানদেরকে অর্ধাহারে বা অনাহারে থাকতে হতো। ১৮৮৮ সালে উভক (Wovok) নামের একজন ইন্ডিয়ান নিজেকে যীশুখ্রীষ্ট দাবি করে এক নতুন ধর্মের প্রবর্তন করে। সে প্রচার করতে থাকে নেটিভ ইন্ডিয়ানরা আবার উত্তর আমেরিকা পুনরুদ্ধার করবে। আবার প্রচুর মহিষ দেখা যাবে। তারা মহিষ শিকার করে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করবে। এই নতুন ধর্মমত বসতি স্থাপনকারীদেরকে আবারো উদ্বিগ্ন করে তোলে। ১৮৯০ সালের ২৯ ডিসেম্বর এক ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে এই ধর্মীয় আন্দোলনকে নিশ্চিন্ন করা হয়। এই ঘটনাকে ইতিহাসে ওন্ডেড নী হত্যাকাণ্ড (Wounded Knee Massacre) বলে অভিহিত করা হয়। এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল সাউথ ডাকোটার ওন্ডেড নী ক্রিক নামক স্থানে। এটাই ছিল নেটিভ ইন্ডিয়ানদের সাথে বসতি স্থাপনকারীদের সর্বশেষ যুদ্ধ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৩৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×