somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

ঊনবিংশ শতাব্দীতে আমেরিকার জীবন ব্যবস্থা -- দ্বিতীয় পর্ব

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে বসতি স্থাপনকে উৎসাহিত করার জন্য ১৮৬২ সালে হোমস্টেডার এক্ট (Homesteader Act) পাস করা হয়। এই আইনে বিধান রাখা হয়, কেউ যদি এই রাজ্যগুলিতে বসতি স্থাপন করে এবং কম পক্ষে ৫ বছর ওই স্থানে বসবাস করে তা হলে সরকার প্রত্যেক বসতি স্থাপনকারীকে বিনামূল্যে ১৬০ একর জমি প্রদান করবে। এই আইন দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে এবং উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপ থেকে অনেক লোক যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে বসতি স্থাপন করে। এদেরকে বলা হতো হোমস্টেডার। ফলে ঊনবিংশ শতাব্দীতে যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। ১৮৬০ সালে যেখানে জনসংখ্যা ছিল ৩ কোটি ১০ লক্ষ, ১৯০০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭ কোটি ৬০ লক্ষে।

ঊনবিংশ শতাব্দীতে নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি আবিষ্কার হওয়ায় পশ্চিমাঞ্চলে বসতি স্থাপনকারীরা ফসল উৎপাদনে অনেক সাফল্য লাভ করে। কিন্তু পশ্চিমাঞ্চলে হোমস্টেডারদের জীবনযাপন অনেক কঠিন ছিল। গৃহ নির্মাণের উপকরণ সহজলভ্য ছিলো না। প্রথম দিকে তারা এক রুমের বাড়ি বানাত। কাঠের ফ্রেমের ছাদ দিয়ে ছাপড়ার ওয়াল করে বাড়ি বানানো হত। আবার কেনো কোনো ঘর কাঠের খাম দিয়ে কাঠামো বানিয়ে মাঝখানে মাটির ওয়ালের মত বানানো হত যাতে বাতাস ঢুকতে না পারে। ছাদে বিছানো হতো কাঠের টাইলস। প্রথম দিকে ফ্লোর ছিল মাটির তৈরি পরে অবশ্য কাঠ দিয়ে ফ্লোর বানান হতো। রান্নাবান্না করা হতো লোহার চুলায় এবং ঘর আলোকিত করার জন্য হারিকেন জাতীয় বাতি ব্যবহার করা হতো। নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কারের ফলে এবং অন্যান উপকরণ সহজ লভ্য হওয়ার ফলে ধীরে ধীরে জীবনযাপন আরামদায়ক হতে থাকে।

কাউবয়
ঘোড়ায় চড়ে যারা পশুচারণ করতো তাদেরকে কাউবয় বলা হতো। আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে অনেক পশু খামার ছিল। কাউবয়রা এই সমস্ত খামারে পশুচারণ করতো। তাদের বেতন ছিল খুব কম এবং সারা দিন অনেক ঘন্টা কাজ করতে হতো। তারা বিশেষ ধরণের পোশাক পড়তো। ঝোপঝাড়ের আঘাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পায়ে চেপ নামের চামড়ার আবরণ পড়তো। এবং সূর্য তাপ ও বৃষ্টি থেকে মাথা রক্ষা করার জন্য স্টেটসন্স নামের চওড়া কিনার যুক্ত এক ধরণের টুপি মাথায় দিতো। তাদের ঘোড়াকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য লোহার পাত যুক্ত এক ধরনের জুতা পায়ে দিতো। প্রথম দিকে কাউবয়রা স্বাধীন ভাবে তাদের পশুপালকে যে কোনো জমিতে নিয়ে ঘাস খাওয়াতো। কিন্তু ১৮৭৪ সালে কাঁটাতার আবিষ্কার হলে, ভূমির মালিকরা নিজ নিজ জমিতে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দিলে, কাউবয়দের যথেচ্ছা বিচরণ সীমিত হয়ে আসে। প্রতিবছর কাউবয়রা তাদের পশুগুলিকে বিক্রি করার জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে যে সমস্ত রেল স্টেশনে পশু পরিবহনের সুবিধা আছে সেই সব জায়গায় যেতো। ১৮৮৬-৮৭ সালে প্রচন্ড শীতে প্রচুর গবাদি পশুর মৃত্যু হয়, তাছাড়া কাঁটাতারের বেড়া দেয়াতে পশুর চারণভূমি সমিতি হয়ে আসে। তার উপর রেললাইনের ব্যাপক সম্প্রসারণের কারণে কাউবয়দের পেশা অ-লাভজনক হয়ে উঠে, ফলে ধীরে ধীরে কাউবয়ের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:০৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×