নাগরিক অধিকার আন্দোলন -১
বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার আন্দোলন শুরু হয়। এইসময়ে দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে সাদা ও কালোদের জন্য পৃথক পৃথক স্কুল ছিল। ১৮৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে ঘোষণা করে সাদা-কালোদের পৃথক স্কুল ব্যবস্থা সংবিধান সম্মত যদি উভয় ধরনের স্কুলে সুযোগ সুবিধা সমান থাকে। তবে বাস্তবে কালোদের স্কুলের সুযোগ সুবিধা সবসময়ই সাদাদের স্কুলের থেকে নিচুস্তরের ছিল। ১৯৫৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট আগের রায় পরিবর্তন করে সাদা-কালো পৃথক স্কুল ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। কিন্তু দক্ষিণের রাজ্যগুলির সাদারা এই রায় মেনে নিতে পারেনি, তারা সাদা-কালো এক স্কুল ব্যবস্থার বিরোধিতা করতে থাকে। ১৯৫৭ সালে আরকানসাস রাজ্যের লিটল রক সেন্ট্রাল হাই স্কুলে ৯ জন কালো ছাত্র ভর্তি হলে প্রথমে আরকানসাস ন্যাশনাল গার্ড এবং পরে স্থানীয় জনগণ তাদেরকে স্কুলে ঢুকতে বাধা দেয়। তখন যুক্তরাষ্ট্রে ৩৪ তম প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার ক্ষমতায়। তিনি কালো ছাত্ররা যাতে ওই স্কুলে প্রবেশ করতে পারে তার নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন।
তখনো দক্ষিণের রাজ্যগুলির অধিকাংশ কালোই ভোটার হতে পারেনি। কালোদের ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা ও অসুবিধা দূর করার জন্য ১৯৫৭ সালে ও ১৯৬০ সালে সিভিল রাইটস এক্ট নামে দুইটা আইন পাস হয়। এই দুইটা আইন পাস হওয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ কালোই ভোটার হতে পারেনি।
কালো আমেরিকান বা আফ্রিকান আমেরিকানরা সমান অধিকারের দাবিতে তাদের অহিংস প্রতিবাদ অব্যাহত রাখে। ওই সময়ে কালোরা সাদাদের বাসে চড়তে পারতো না। ১৯৫৫ সালে আলাবামা রাজ্যে আইন পাস হয়, কালোরা সাদাদের বাসে উঠতে পারবে, তবে পিছনের সিটে বসতে হবে। ১৯৫৫ সালে রোসা পার্কস নামের একজন কালো মহিলা বাসের সামনের সিটে বসলে তাকে সেখান থেকে উঠে যেতে বলা হয়, তিনি প্রতিবাদ করেন এবং সামনের সিট থেকে উঠে যেতে অস্বীকার করেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ রোসা পার্কসকে গ্রেফতার করে। এর প্রতিবাদে কালোরা বাস বর্জন করার আন্দোলন শুরু করে। অবশেষে আন্দোলন সফল হয়। সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করে পৃথক বাস ব্যবস্থা অসাংবিধানিক। এই নাগরিক আন্দোলনের সফল নেতৃত্ব দেন খ্রিস্টান ধর্মযাজক মার্টিন লুথার কিং। এতে তার নাম চারিদিকে ছড়িয়ে পরে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১৭ রাত ৯:৫৪