অনুচ্ছেদ ২
ধারা ৩।
দফা ১। তিনি সময়ে সময়ে কংগ্রেসকে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তথ্য দিবেন, এবং তিনি যে রকম প্রয়োজনীয় এবং সমীচীন মনে করবেন তাদের বিবেচনার জন্য সেরকম সুপারিশ করবেন; এবং তিনি বিশেষ ক্ষেত্রে উভয় পরিষদের অথবা যে কোনো একটি পরিষদের অধিবেশন ডাকতে পারেন, এবং অধিবেশন কখন মুলতবি হবে এটা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে তিনি যে রকম উপযুক্ত মনেকরেন সেই সময়ে মুলতবি করে দিতে পারেন; তিনি রাষ্ট্রদূতদেরকে এবং অন্যান্য সরকারি মন্ত্রীদেরকে অভ্যর্থনা জানাবেন; আইনসমূহ বিশ্বস্থতার সাথে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তা তিনি তত্ত্বাবধান করবেন, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সব কর্মকর্তাকে কর্মভার প্রদান করবেন।
ভাষ্য
প্রেসিডেন্টের আরো কিছু কাজের কথা এখানে বর্ণনা করা হয়েছে --
(১) শাসন বা নির্বাহী বিভাগের প্রধান হিসাবে প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে যে সমস্ত তথ্য জানতে পারবেন তা মাঝেমাঝে কংগ্রেসকে জানাবেন। বর্তমানে প্রতিবছর জানুয়ারী মাসে প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসের উভয় পরিষদের যৌথ অধিবেশনে এক ভাষণের মাধ্যমে সংবিধানের এই বাধ্যবাধকতা পালন করেন। প্রেসিডেন্টের এই ভাষণকে "দ্যা স্টেট অফ ইউনিয়ন" ভাষণ বলে।
(২) অর্থ ছাড়া কোনো কাজ করা যায় না। আর অর্থ বরাদ্দ করে বা বাজেট প্রণয়ন করে কংগ্রেস। তাই প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে তার ইচ্ছা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কথা কংগ্রেসকে বলেন। তিনি কি কাজ করতে চান, এই কাজের জন্য কত টাকা লাগবে তা তিনি কংগ্রেসের কাছে সুপারিশ করেন।
(৩) কংগ্রেসের অধিবেশন নিদৃষ্ট সময়ের জন্য মুলতবি হয়। কিন্তু যদি কোনো বিশেষ প্রয়োজন দেখা দেয় অথচ কংগ্রেস অধিবেশনে নাই, সেই ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসের উভয় পরিষদ বা যে কোনো একটা পরিষদের অধিবেশন ডাকতে পারেন।
(৪) আবার যদি অধিবেশন কখন মুলতবি করতে হবে তা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়, সেই ক্ষেত্রেও প্রেসিডেন্ট যে সময়কে উপযুক্ত মনে করবেন সেই সময়ে অধিবেশন মুলতবি করে দিতে পারবেন।
(৫) রাষ্ট্রদূত, বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধান বা বিদেশী কোনো মন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্রে আসলে প্রেসিডেন্ট তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
(৬) প্রেসিডেন্ট যেহেতু শাসনবিভাগ বা নির্বাহীবিভাগের প্রধান, তিনি সরকারি বিভাগগুলির মাধ্যমে খোঁজখবর রাখবেন যে আইনগুলি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
(৭) সরকারি কর্মকর্তাদের কার কি কাজ তা প্রেসিডেন্ট বন্টন করে দিবেন। সরকারি কর্মকর্তারা আইনের দ্বারা আরোপিত দায়িত্ব পালন করেন। এই বিধানের দ্বারা সমগ্র নির্বাহীবিভাগকে প্রেসিডেন্টের কর্তৃত্বের অধীন করা হয়েছে।
ধারা ৪।
রাষ্ট্রদ্রোহ, উৎকোচ গ্রহণ, বা অন্য গুরুতর অপরাধ এবং বেআইনি কাজের জন্য প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাষ্ট্রের সকল বেসামরিক কর্মকরতাদেরকে তাদের পদ থেকে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণ করা যাবে এবং সাজা দেয়া যাবে।
ভাষ্য
"অন্য গুরুতর অপরাধ এবং বেআইনি কাজ" এই বাক্যাংশটি একটি আইনি পরিভাষা। এই আওতা অনেক ব্যাপক। অভিশংসন বা অভিযুক্ত করার ক্ষমতা একমাত্র হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভের। হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভ শুধুমাত্র অভিযুক্ত করতে পারবে। কিন্তু কোনো সাজা দিতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট বা কোনো বেসামরিক কর্মকরতাকে হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভ রাষ্ট্রদ্রোহ, উৎকোচ গ্রহণ, বা অন্য গুরুতর অপরাধ এবং বেআইনি কাজের জন্য অভিযুক্ত বা অভিশংসন করতে পারবে। উক্ত ব্যক্তি হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভ কর্তৃক অভিশংসন হওয়ার পর, তাকে সাজা দেয়া হবে না মাফ করে দেয়া হবে তার সিদ্ধান্ত নিবে সিনেট। সিনেট অভিযোগের ভিত্তেতে উক্ত ব্যক্তিকে সাজা দিতে পারে আবার মাফ করে দিতে পারে। সিনেট সাজা হিসাবে ওই ব্যক্তিকে কোনো জেল জরিমানা করতে পারবে না। সিনেট সাজা হিসাবে ওই ব্যক্তিকে তার পদ থেকে অপসারণ করতে পারবে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনকে হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভ অভিশংসন করেছিল। কিন্তু সিনেট তাকে ক্ষমা করে দেয়। ফলে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে তার মেয়াদ কালে বহাল থাকেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৯