somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা-১৭

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনুচ্ছেদ ৩
ধারা ১।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার কার্যের ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের উপর ন্যস্ত হবে, এবং কংগ্রেস সময়ে সময়ে নিম্ন আদালতসমূহ গঠন ও প্রতিষ্ঠা করবে। সুপ্রিম কোর্ট এবং নিম্ন আদালত, উভয় আদালতের বিচারকগণ যতদিন সদাচরণ করবেন ততদিন পদে বহাল থাকবেন এবং ওই সময়কালে কাজের জন্য প্রতিদান গ্রহণ করবেন, যা তার চাকরির মেয়াদে কমানো যাবে না।
ভাষ্য
সংবিধানের এই ধারার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অধীন নিম্ন আদালতসমূহ যেমন, ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট, আপিল কোর্ট বা সার্কিট কোর্ট ইত্যাদি কোর্টগুলি প্রতিষ্ঠা করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে কংগ্রেসকে। শারীরিক ভাবে অক্ষম না হয়ে পরলে এবং কোন অসদাচরণ না করলে সুপ্রিম কোর্ট এবং নিম্ন আদালত, উভয় আদালতের বিচারকগণ সারা জীবন বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। উভয় আদালতের বিচারকগণ তাদের কাজের জন্য বেতন-ভাতা নিতে পারবেন। তাদের বেতনের পরিমাণ কমানো যাবে না।

ধারা ২।
দফা ১।বিচারকার্যের ক্ষমতা সংবিধান, যুক্তরাষ্ট্রের আইন, এবং চুক্তির অধীন সব আইন এবং ন্যায়নীতির দ্বারা মামলাসমূহের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হবে। রাষ্ট্রদূত, সরকারী মন্ত্রী এবং কনসোলদের ক্ষেতরেও প্রযোজ্য হবে। এডমিরালটি এবং সমুদ্র অধিক্ষেত্রের প্রতিও প্রযোজ্য হবে। কোনও বিরোধ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র একটি পক্ষ; দুই বা ততোধিক রাজ্যের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে; একটি রাজ্য এবং অপর রাজ্যের কোনও নাগরিক মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে; ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের নাগরিকদের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে; ভিন্ন রাজ্যের বরাদ্দকৃত ভূমি দাবী করে, একই রাজ্যের নাগরিকদের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে এবং কোনও রাজ্যের সাথে বা এর নাগরিকদের সাথে কোনও বিদেশী রাষ্ট্র, এর নাগরিক বা প্রজাদের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
ভাষ্য
এই ধারায় আদালতসমূহের ক্ষমতা ও অধিক্ষেত্র বর্ণনা করা হয়েছে।
(১) আদালতসমূহ আইন ও ইকুইটি দ্বারা পরিচালিত হবে।
(২) আইনসমূহ যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান, যুক্তরাষ্ট্রের আইন এবং চুক্তিসমূহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
(৩) আদালতসমূহ রাষ্ট্রদূত, সরকারী মন্ত্রী এবং কনসোলদের বিচার করতে পারবে।
(৪) এডমিরালটি এবং সমুদ্র অধিক্ষেত্রের বিরোধেরও বিচার করতে পারবে।
(৫) যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন কোনও মামলা হলে তার বিচার করতে পারবে।
(৬) দুই বা ততোধিক রাজ্যের মধ্যে মামলা হলে তার বিচার করতে পারবে।
(৭) একটা রাজ্য যদি অপর কোনও রাজ্যের নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা করে তার বিচার করতে পারবে।
(৮) এক রাজ্যের নাগরিক যদি অপর রাজ্যের নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা করে তার বিচার করতে পারবে।
(৯) ভিন্ন রাজ্যের বরাদ্দকৃত জমি নিয়ে একই রাজ্যের একাধিক ব্যক্তির মধ্যে মামলা হলে তার বিচার করতে পারবে।
(১০) কোনও রাজ্যের সাথে বা এর নাগরিকদের সাথে কোনও বিদেশী রাষ্ট্র বা এর নাগরিক বা প্রজাদের মধ্যে মামলা হলে তার বিচার করতে পারবে।

দফা ২। রাষ্ট্রদূত, সরকারী মন্ত্রী এবং কনসোলদের বিচারের ক্ষেত্রে এবং যে সমস্ত মামলায় কোনও রাজ্য পক্ষ হবে, সেই সমস্ত মামলার আদিম অধিক্ষেত্র হবে সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখিত মামলাগুলি ছাড়া অন্যান্য মামলায় জড়িত আইন এবং বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট হবে আপিল আদালত, তবে ওই সমস্ত ব্যতিক্রম ছাড়া যা কংগ্রেস রেগুলেশন দ্বারা প্রকাশ করে।

ভাষ্য
সুপ্রিম কোর্টের বিচারের ক্ষেত্রে দুই ধরণের অধিক্ষেত্র থাকবে।
(১) আদিম অধিক্ষেত্র। রাষ্ট্রদূত, সরকারী মন্ত্রী, কনসোলদের বিরুদ্ধে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে মামলা করতে হবে। কোনও মামলায় যদি কোন রাজ্য পক্ষ থাকে সেই ক্ষেত্রেও সরাসরি সুপ্রিম করতে মামলা করতে হবে।
(২) উল্লেখিত মামলাগুলি ছাড়া অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট আপীল কোর্ট হিসাব বিচার করবে।

দফা ৩। অভিশংসনের মামলা ছাড়া অনন্যা ফৌজদারি মামলা জুরি দ্বারা বিচার হবে; এবং যে রাজ্যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেই রাজ্যে বিচার হবে; কিন্তু কোন অপরাধ যদি কোন রাজ্যে সংঘটিত না হয়, সেই ক্ষেত্রে কংগ্রেস আইন দ্বারা যে স্থানের কথা নির্দেশ করবে সেখানে বিচার কাজ হবে।

ভাষ্য
(১) ফৌজদারি মামলার বিচার কাজে জুরিরা অংশ নিবে।
(২) অভিশংসনের মামলায় জুরিরা অংশ নিতে পারবে না।
(৩) অপরাধটি যে রাজ্যের সীমানার মধ্যে হয়েছে, সেই রাজ্যেই এর বিচার হবে।
(৪) যদি অপরাধটি এমন কোন জায়গায় সংঘটিত হয়, যা কোন নিদিষ্ট রাজ্য সীমার মধ্যে পরে না, সেই ক্ষেত্রে কংগ্রেস আইনের দ্বারা যে স্থানের কথা বলবে, সেখানে এর বিচার হবে।

ধারা ৩।
দফা ১। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে যুদ্ধ করলে, বা তাদের শত্রুদের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকলে, সাহায্যে করলে এবং সুযোগ দিলে তা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসাবে গণ্য হবে। কোন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে সাজা দেয়া যাবে না, যদি না দুই জন সাক্ষী, যারা একই কাজে প্রত্যক্ষ ভাবে অংশ নিয়েছে, সাক্ষ্য দেয় অথবা প্রকাশ্য আদালতে স্বীকারোক্তি করে।
ভাষ্য
(১) যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে যুদ্ধ করলে,
(২) যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদের সাথে যে কোন ভাবে সংশ্লিষ্ট থাকলে,
(৩) যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদের সাহায্য করলে, বা
(৪) যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদের কোন সুযোগ সুবিধা দিলে -- তা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসাবে গণ্য হবে।

রাষ্ট্রদ্রোহিতার মত গুরুতর অভিযোগে যাতে কেউ কাউকে হয়রানি করতে না তার জন্য এই অভিযোগ প্রমাণের জন্য কঠিন শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এই অভিযোগ প্রমাণের জন্য এমন দুই জন্য সাক্ষী লাগবে যারা নিজেরাই রাষ্ট্রদ্রোহিতার কাজে লিপ্ত ছিল। অথবা অভিযুক্তরা নিজেরাই প্রকাশ্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিবে যে তারা রাষ্ট্রদ্রোহিতার কাজে লিপ্ত ছিল। শুধুমাত্র এই দুই ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে সাজা দেয়া যাবে।

দফা ২। রাষ্ট্রদ্রোহিতার সাজা ঘোষণার ক্ষমতা কংগ্রেসের উপর ন্যস্ত থাকবে, কিন্তু রাষ্ট্রদ্রোহীর আত্মীয়-স্বজনকে এই কারণে সাজা দেয়া যাবে না, অথবা মৃত্যুদণ্ড ছাড়া কোন কিছু বাজেয়াপ্ত করা যাবে না।

ভাষ্য
রাষ্ট্রদ্রোহিতার সাজা কি হবে, কংগ্রেস তা আইনের দ্বারা নির্ধারণ করবে। তবে কোন একজন ব্যক্তির কি সাজা হবে তা নির্ধারণ করে কংগ্রেস কোন আইন করতে পারবে না। রাষ্ট্রদ্রোহীর কোন রক্ত-সম্পর্কীয় আত্মীয়কে তার কারণে কোন সাজা দেয়া যাবে না। রাষ্ট্রদ্রোহীর সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু তার কোন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যাবে না। প্রকৃত পক্ষে, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে আজ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে কাউকে সাজা দেয়া হয় নাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:২৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×