১। বাংলা সিনেমার সৎ লোক।
(ক) সৎ লোকেরা গরিব হবে;
(খ) তারা ভাঙ্গা বাড়িতে বাস করবে;
(গ) তারা তিন বেলা পেট ভরে খেতে পারবে না;
(ঘ) তাদের ছেলেমেয়েদের ভাল চাকরি হবে না ইত্যাদি।
এই সমস্ত দৃশ্য দেখার পর মানুষের মনে বিশেষ করে তরুণদের মনে সততা সম্পর্কে ভয় ঢুকে যায়। তাদের মনে এটা দৃঢ়মূল হয়ে যায়, সৎ ভাবে জীবনযাপন করলে তাদেরকে গরিব থাকতে হবে। তাই তারা কর্ম ক্ষেত্রে অসৎ পথ বেছে নেয়। কিন্তু বাস্তবে গরিব বা ধনী হওয়ার সাথে সততা বা অসততার কোন সম্পর্ক নাই।
২। বাংলা সিনেমার প্রেম।
(ক) ছেলেটা মেয়েটাকে পছন্দ করে কিন্তু মেয়েটা পাত্তা দিচ্ছেনা। এই ক্ষেত্রে মেয়েটাকে উত্যক্ত করতে হবে। যা ইভ টিজিং এর পর্যায়ে পরে;
(খ) মেয়েটার কাপড় ধরে, বা হাত ধরে বা চুল ধরে টান দিতে হবে। এটাও ইভ টিজিং এর পর্যায়ে পরে;
(গ) মেয়েটা কখনো কখনো বিরক্ত হয়ে নায়কের গালে চর মারবে বা জুতাপেটা করবে, তাতেও নায়কে দমলে চলবে না;
(ঘ) শেষ পর্যন্ত মেয়েটা ছেলেটার প্রতি দুর্বল হয়ে পরবে, তাদের প্রেম সফল হবে।
অনেক ছেলে প্রেম নিবেদনের বাংলা সিনেমার এই প্রক্রিয়াকে অনুসরণ করতে, ইভ টিজিং, এসিড নিক্ষেপ ও ধর্ষণের মাত্রা বেড়েছে।
৩। বাংলা সিনেমার স্ত্রী।
(ক) স্বামী কাজে যাওয়ার সময় চশমাটা, ছাতাটা, ব্যাগটা এগিয়ে দিবে;
(খ) স্বামীর জন্য রান্না-বান্না করে অপেক্ষা করতে থাকবে;
(গ) স্বামী কাজ থেকে ঘরে ফিরলে, স্বামীর হাত থেকে ছাতাটা, ব্যাগটা নিয়ে যাবে;
(ঘ) স্বামী খেতে বসলে কাছে বসে বাতাস করবে বা মাছের মাথাটা প্লেটে তুলে দিবে, ইত্যাদি।
একটা ছেলে বিয়ে করার আগে থেকেই এই দৃশ্যগুলি কল্পনা করতে থাকে। অনেক স্ত্রীই বাস্তবে সবগুলি না হলেও কিছু কিছু করেন। যখনই এর ব্যতিক্রম হয়, তখন সে চিন্তা করে তার স্ত্রী তাকে ভালোবাসে না, বা যথাযথ সম্মান দিচ্ছে না, বা যথাযথ যত্ন নিচ্ছে না, যা তার প্রাপ্য। ভুল ধারণার কারণে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:১৩