নিকটবর্তী
- আব্বা, ওইটা কি?
বৃষ্টিবাদলার দিন। কোলাব্যঙের ডাক। আর মধ্যরাতের তারাভরা আকাশের দিকে ইঙ্গিত করছে ছোট্ট একটা আঙুল।
- ওইটা তারাখসা বাবা।
- তারাখসা কি আব্বা?
- তারাখসা হইতেছে...
গুঞ্জন। কোলাহল। পঙ্গপাল।
ধীরে ধীরে হাঁটছে।
স্তোত্রপাঠ।
আবৃত্তি করছে।
তারাখসা চাপা পড়ে যায় জনসমুদ্রে।
- আইজকা সন্ধ্যার সময় লা-হাওলা পড়ছিলা?
- হ্যাঁ তো! আম্মা পড়ায় দিছে...
স্বর্গীয় শব্দ। ছোট্টআঙুলধারীর মনে আছে, সন্ধ্যার ঠিক আগে, যখন ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকতেছিলো ওদের মফস্বলের কোনায় পড়ে থাকা ছোট্ট এই জংলামতন জায়গার পলস্তারা খসা একতালা ইটের বাসায়, মা’র হাসিহাসি গোলগাল মুখ আর নরম আঙুলগুলো আলতো কোরে ওর ঠোঁটে তুলে দিয়েছিলো কিছু অদ্ভুত শব্দ।
- এইগুলা কি আম্মা...
...আর আম্মার মুখের সেই নরম মিষ্টি হাসি। শীতলপাটির উপর বসে ডগা কামড়ানো পেনসিল দিয়ে খুব পড়াশোনা করেছে আজ ছোট্টআঙুলধারী। গালে হাত দিয়ে সারাদিন ধরেই সে দেখেছে ঘরের কোনার আগুনের পাশে পড়ে থেকে নীলশাড়ি পড়ে মা’র মিঠাই বানানো।
- যা...ওই বাসায় দিয়ে আয়...আমি এখানেই দাড়াই...পারবি না রে ছোটন?
খুব পারবে সে...আশেপাশের দু’একটা বাসা থেকে থালা ভর্তি খাবার আসে। ওগুলো ফিরিয়ে দিতে হয়, সে জানে। ট্রে হালকা লাগছে। ডেকে রাখা কাপড় তুলে একটু দেখে নেয় সে।
চোখ ফিরিয়ে তাকায় পিছনে। মা দরজার একপাশে...চোখে কিসের ছায়া...মা’র মাথার উপর একটা সাদা কবুতর...মা’র গায়ে নীলশাড়ি...
নীল শাড়ি। ‘শাড়িটা আব্বা দিছিল, আম্মাকে, অনেক আগে...’। আম্মা তখন হাসছিলো...নরম মিষ্টি হাসি।
সন্ধ্যার দিকে একটু ঘুমঘুম আর তখনই মায়ের হাতের ছোঁয়ায় মুখে মিষ্টির স্বাদ পেয়েছিলো সে...চোখ খুলে তাকাতেই মা’র সেই হাসি। হাসছে মা...মিষ্টিটায় কী আছে...ছোট্ট আঙুলধারীর কেমন লাগে...চোখ বন্ধ হয়ে যায়...
- আইসো বাবা...জুতা খুলো...ডান’পা আগে দিয়া উঠো...
ছোট্ট আঙুলধারীর কাছে প্রতিটা শব্দের অন্য কোন মানে আছে...
মনে পড়লো, মা ঘরে একা...
- আইজকে অনেক বড় রাইত বাবা...আইজকে তুমি যা চাইবা তাই পাবা, আইজকে পরওয়ারদিগার আমাদের সবচাইতে নিকটে থাইকবে...
সবচেয়ে কাছে! সবচেয়ে!
পিতার দিকে মুখ তুলে হাসে ছোট্টআঙুলধারী এক দেবদূত...সে খুব জানে সে কি চায়...
তারপর...
তারপর রাতভর চোখেমুখে আত্মতৃপ্তি নিয়ে উপাসনালয় হতে নির্গত মানুষরা যখন শান্তপায়ে শীতল-মানসে ঘরমুখো হয়, মোড়ে মোড়ে জটলা পাকায়, টুংটাঙ চা, সামাজিকতা, ভাই কেমন আছেন, আপনার গিন্নির পাঠানো হালুয়া লা-জবাব, দোস্ত সিনেমাটা ফাটাফাটি, তোর নোটটা কালকে পাবি – তখন মেসোস্ফিয়ার-স্ট্রাটোস্ফিয়ারে কোন আলোর ঝলকানি তাদের চোখ এড়িয়ে যায়...
জীবনের গল্প
মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিমান
" অভিমান "
তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।
আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার কিছু ভুল!
১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...
অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা
আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন